স্মরণে শাম্মী আখতার

একপাশ থেকে মৃত্যু আসছে, গুলির মতো

শাম্মী আখতার ও আলাউদ্দিন আলীএত কাছের মানুষ চলে গেলো- বলার তো কিছু নাই। আমরা তো একই লাইনে দাঁড়িয়ে আছি। একপাশ থেকে মৃত্যু আসছে, গুলির মতো। কেউ আগে যাবে কেউ পরে।
শাম্মীর মৃত্যুর খবর পাওয়ার পর, আমি তার পুরনো সাক্ষাৎকার ও ভিডিওগুলো দেখছিলাম। কী অসাধারণ তার কণ্ঠ! কখনও এত মনোযোগ দিয়ে শুনিনি। এত সুন্দর গায়। আমার সুরে সে কিছু গান করেছে।
শাম্মীর মতো আমিও ক্যানসারের রোগী। আমি জানি, এর চিকিৎসা ব্যয় কত বেশি।
আমি জানি না কেন আমাদের কথা বাস্তবায়িত হয় না। কয়েক মাস আগে মেধাস্বত্ব নিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সাবেক মন্ত্রী তারানা হালিমের সঙ্গে বৈঠক করলাম। সেখানে সাবিনা ইয়াসমিনসহ আরও শিল্পীরা ছিলেন। অথচ একটা পত্রিকাতেও এ নিউজ এলো না। আজ শিল্পীদের রয়ালিটির জন্য লড়াই করতে হয়!
অথচ এগুলো শিল্পীদের অধিকার। তাদের পরিশ্রমের রয়ালিটি তারা পাচ্ছেন না। শাম্মীও পেল না! এগুলো কিন্তু অনেক টাকা। কয়েক হাজার কোটি টাকা।
তারানা হালিমকে বলেছিলাম, আমাদের টাকাগুলো উদ্ধারের ব্যবস্থা করে দিন। যদি কোনও মন্ত্রীর ক্যানসার হয়, এই ফান্ড থেকে তার চিকিৎসা করাবো।
টাকার পরিমাণ বোঝানোর জন্য এটা শুধু উদাহরণের জন্য বললাম।

শাম্মী আখতারের উল্লেখযোগ্য গান:


শিল্পীরা তো কারও কাছে করুণা চায় না। তাদের রয়ালিটির টাকা চায়। একটা কথা বলি, শাম্মী যদি আজ তার টাকা পেতো, তাহলে সেই টাকা দিয়ে এমন আরও ৫০জনের চিকিৎসা করাতে পারতো।
শাম্মী সরল ছিল, সারাক্ষণ মুখে হাসি লেগে থাকত। সে এগুলো নিয়ে কিছুই বলতো না। আমিও ক্যানসারের রোগী। আমি বলি।
আমার মৃত্যুর পর সবাই হয়তো বলবে, আলাউদ্দিন আলী ক্যানসারে মারা গেছে। কিন্তু আমি আসলে এই যন্ত্রণা নিয়েই মারা যাব, শিল্পী হিসেবে অন্যদের কাছে প্রতারিত হওয়ার যন্ত্রণায়।
শাম্মীর সেই না বলে যাওয়া বেদনাটা আমি অনুভব করি।
অনুলিখন: ওয়ালিউল বিশ্বাস