ওসব স্মৃতি আজ আর মনে করতে চাই না: হানিফ সংকেত

আজ (২২ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান বরেণ্য সুরকার-সংগীত পরিচালক আলী আকবর রুপু। যার নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ঐতিহ্যবাহী ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’ এবং এর জনক হানিফ সংকেত। সম্পর্কে সংকেত-রুপু ঘনিষ্ঠ বন্ধুও বটে। বেলা ১টার দিকে বন্ধুর প্রস্থানের খবর পেয়ে হানিফ সংকেত ছুটছিলেন হাসপাতালের দিকে। চলতি পথে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বাংলা ট্রিবিউন-এর সঙ্গে বললেন অনেক কথা-আলী আকবর রুপু

বন্ধুর চলে যাওয়ার খবরটা শিগগিরই পাবো, গেল কয়েকদিনে এমন ধারণা মনে জন্মেছে। তাছাড়া প্রতিনিয়তই যোগাযোগ চলছিল আমাদের। কাছ থেকে দেখছিলাম ওর চলে যাওয়ার প্রস্তুতি। তবে আজ (২২ ফেব্রুয়ারি) এভাবে এখনই খবরটা পাবো- সকালেও এমনটা ভেবে রাখিনি।

আমার গাড়িটা (প্রাইভেট কার) বাইরে। খবর পেয়ে তাই সিএনজি নিয়েই ছুটছি, ইউনাইটেড হাসপাতালে।
আসলে আলী আকবর রুপুর কথা কী বলবো, বুঝতে পারছি না। সবাই বলবে, ওর এই চলে যাওয়া সংগীতের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। কিন্তু আমি একটু স্বার্থপরের মতোই অন্য কথা বলতে চাই। আমার মনে হলো, ওর এই অকাল প্রস্থানে ‘ইত্যাদি’র অনেক ক্ষতি হয়ে গেল। ‘ইত্যাদি’র দর্শক-শ্রোতাদের জন্য এটা বিরাট লস।
ইত্যাদি’র মঞ্চে হানিফ সংকেত২০১৫ সালে রুপুর হার্টে রিং পরানো হয়। ডায়াবেটিস ছিল। এরপর নানা জটিলতায় আবার কিডনি ফেল হলো। এরমধ্যে সম্প্রতি ব্রেনস্ট্রোক করলো। গেলাম ইবনে-সিনায়। ইউনাইটেডে শিফট করতে বললো, করলাম। হার্ট দুর্বল, নিউমোনিয়া হয়ে গেল। ডায়ালাইসিসও করাতে পারছিলাম না। ইকোনমিক অবস্থাও ভালো ছিলো না। এরপর অবস্থার অবনতিই হতে থাকলো।
শেষ কয়টা দিনেও আমি ওর খুব কাছাকাছি ছিলাম, এটাই সান্ত্বনা।
অসম্ভব ভালো মনের একটা মানুষ। কোনও ঝামেলায় জড়াতে দেখিনি তাকে। আমরা যখন গানের সুর করতে বসতাম- আহারে...। ওসব স্মৃতি আজ আর মনে করতে চাই না।
আমার জন্য অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে। সংগীতাঙ্গনের জন্যে তো বটেই।
প্রায় ৩০ বছর ধরে আমরা দুই বন্ধু গান বেঁধেছি। ইত্যাদি’তে সবচেয়ে বেশি দেশাত্মবোধক ও উৎসবের গান প্রচার হয়েছে। যার প্রায় সবক’টিই রুপুর সুর করা। সে হিসেবে দেশের সবচেয়ে বেশি দেশাত্মবোধক ও উৎসবের গানের সুরকার হলো আমাদের রুপু।
এটাই এখন আমাদের বড় গলায় বলবার বিষয়।
রুপু মামা, ভালো থেকো।

রুপুর সুরে মুরাদের গাওয়া ‘ইত্যাদি’তে প্রচার হওয়া সুপারহিট গান ‘আমি আগের ঠিকানায় আছি’:

অনুলিখন: মাহমুদ মানজুর