চলেই গেলেন চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন

আমজাদ হোসেনজীবনের সঙ্গে যুদ্ধ করে অবশেষে না ফেরার দেশে চলেই গেলেন নন্দিত চলচ্চিত্রকার আমজাদ হোসেন।
আজ, শুক্রবার (১৪ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৫৭ মিনিটে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না...রাজিউন)। বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেন আমজাদ হোসেনের পুত্রবধূ (বড় ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুলের স্ত্রী) রাশেদা আক্তার লাজুক।

এদিকে আমজাদ হোসেনর শীষ্য, নির্মাতা এস এ হক অলিক বাংলা ট্রিবিউনকে জানান, আমজাদ হোসেনের মরদেহ ঢাকায় আনতে দুই একদিন সময় লাগবে। কারণ, তার বড় ছেলে নির্মাতা সাজ্জাদ হোসেন দোদুল ক’দিন আগেই ব্যাংকক থেকে দেশে এসেছেন। সেখানে ছোট ছেলে নির্মাতা সোহেল আরমান থাকলেও আজ (১৪ ডিসেম্বর) রাতে অথবা কাল (১৫ ডিসেম্বর) সকাল নাগাদ ব্যাংককে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে দোদুলের।

মরদেহ ঢাকায় আসার পর পারিবারিকভাবে দাফনের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানান অলিক।   
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি উদ্যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য প্রখ্যাত এই চলচ্চিত্রকারকে ২৭ নভেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে।
এর আগে ১৮ নভেম্বর সকালে নিজ বাসায় ঘুমের মধ্যে ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হন আমজাদ হোসেন। পরে তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
৭৬ বছর বয়সী এই চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব নানা ধরনের কাজের জন্য সমাদৃত। একাধারে তিনি চলচ্চিত্র পরিচালনা, প্রযোজনা, অভিনেতা, গীতিকার ও সাহিত্যিক হিসেবে কাজ করছেন।
গুণী এই পরিচালক ১৯৭৮ সালে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’ এবং ১৯৮৪ সালে ‘ভাত দে’ চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এছাড়া শিশুসাহিত্য রচনার জন্য তিনি ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দুইবার অগ্রণী শিশুসাহিত্য পুরস্কার এবং ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদক, স্বাধীনতা পদকসহ একাধিক রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
আমজাদ হোসেন ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি সাহিত্যের প্রতি অনুরাগী ছিলেন। পঞ্চাশের দশকে ঢাকায় এসে সাহিত্য ও নাট্যচর্চার সঙ্গে জড়িত হন।
তার নির্মিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘গোলাপী এখন ট্রেনে’, ‘বাল্যবন্ধু’, ‘পিতাপুত্র’, ‘এই নিয়ে পৃথিবী’, ‘বাংলার মুখ’, ‘নয়নমণি’, ‘সুন্দরী’, ‘কসাই’, ‘জন্ম থেকে জ্বলছি’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘সখিনার যুদ্ধ’, ‘ভাত দে’, ‘হীরামতি’, ‘প্রাণের মানুষ’, ‘সুন্দরী বধূ’, ‘কাল সকালে’, ‘গোলাপী এখন ঢাকায়’, ‘গোলাপী এখন বিলেতে’ প্রভৃতি।