সমাহিত আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল

কবরস্থানের ছবিমিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হলো বাংলা গানের কিংবদন্তি শিল্পী-মুক্তিযোদ্ধা আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে। যেখানে পাশাপাশি শুয়ে আছেন আজম খান, হুমায়ুন ফরীদির মতো দেশ কিংবদন্তি শিল্পীদের অনেকেই।
আজ (২৩ জানুয়ারি) সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলকে সেখানে শায়িত করা হয়েছে।
এর আগে বিকালে কবর নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এর কারণে নির্ধারিত সময়ের প্রায় দুই ঘণ্টা পর দাফন করা হলো এই বরেণ্যকে।
জানা যায়, শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বরাদ্দ স্থানে কবর খনন করা হলেও পরিবারের সদস্যরা চাইছিলেন বুদ্ধিজীবীদের স্থানে সমাহিত করতে। পরে তাদের ইচ্ছে অনুযায়ী নতুন করে কবর খনন করা হয়।
২২ জানুয়ারি ভোর ৪টার দিকে রাজধানীর আফতাব নগরে নিজ বাসায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৩ বছর।
আজ (২৩ জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে তাকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান জানানো হয়। মরদেহ সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত সেখানে রাখা হয়। এ সময় বুলবুলের ছেলে মন-সহ উপস্থিত ছিলেন সংগীতশিল্পী খুরশীদ আলম, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ, ম. হামিদ, গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার, কবির বকুল, প্রযোজক ইজাজ খান স্বপন, সংগীতশিল্পী সামিনা চৌধুরী, মনির খান, এসডি রুবেল, শফিক তুহিন, মুহিন, সাব্বির, কিশোর, মেহরাব, অভিনয়শিল্পী আজাদ আবুল কালাম, তানভীন সুইটি, পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী, নায়িকা কুমকুমসহ অনেকে। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে বেলা সোয়া দুইটায় মরদেহ নেওয়া হয় বিএফডিসিতে। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে বিকাল নাগাদ নিয়ে যাওয়া হয় মিরপুর বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে।
আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলআহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ১৯৭০ সালের শেষ লগ্ন থেকে আমৃত্যু বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পসহ সংগীত শিল্পে সক্রিয় ছিলেন। ১৯৭১ সালে মাত্র ১৫ বছর বয়সে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নেন। যুদ্ধ থেকে ফেরার পর টানা দেড় দশক শুধু দেশের গান তৈরি করেছেন তিনি।
বুলবুল ১৯৭৮ সালে ‘মেঘ বিজলি বাদল’ ছবিতে সংগীত পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রে কাজ শুরু করেন। এরপর প্রায় ৩০০ ছবির গান তৈরি করেন তিনি। এর বাইরে অসংখ্য দেশের গান ও অডিও অ্যালবামেও কাজ করেছেন তিনি।
সংগীতে অবদানের জন্য বুলবুল রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদক, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার এবং রাষ্ট্রপতির পুরস্কারসহ অন্যান্য অসংখ্য পুরস্কার পান।