কৃষি উন্নয়ন ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজের পরিকল্পনা, উপস্থাপনা ও পরিচালনায় ‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’-এর বহুমুখি তৎপরতা ও সক্রিয় অভিযানে পাল্টে গেছে দেশের কৃষি ও অর্থনীতির চিত্র। ২০০৪ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের দিন যাত্রা শুরু করা এ অনুষ্ঠানটি দীর্ঘ পথচলার মধ্য দিয়ে জনকল্যাণ ও গণমুখিনতায় গণমাধ্যমের ভূমিকার এক নতুন রূপ দিয়েছে, যা গোটা বিশ্বেই এক বিরল উদাহরণ।
পথচলার শুরু থেকেই একটি টেলিভিশন অনুষ্ঠানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনি, পরিণত হয়েছে একটি আন্দোলনে। যে আন্দোলন দেশের আপামর কৃষক তথা মাটির উৎপাদক শ্রেণী ও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকেতো প্রভাবিত করেছেই, প্রভাবিত করেছে শহর নগরের অভিজাত ও উচ্চাকাঙ্ক্ষী শ্রেণীকেও। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে মাঠ পর্যায়ে ব্যবহারিক কৃষি শিক্ষার কার্যক্রম এবং নতুন প্রজন্ম তথা নাগরিক শিক্ষার্থীদের কৃষি উৎপাদন ও গ্রামীণ জীবন জীবিকা সম্পর্কে ধারণা দিতে হৃদয়ে মাটি ও মানুষে-এ অন্তর্ভুক্ত হয়েছে ‘ফিরে চল মাটির টানে’।
এই অনুষ্ঠানের উদ্যোগে নিয়মিত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ‘কৃষি বাজেট কৃষকের বাজেট’। যা সরকারের নীতি-নির্ধারকদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে, ভূমিকা রাখছে সরকারের নীতি পরিকল্পনায়।
‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’-এর বহুমুখি প্রচারণার সাফল্য হিসেবে দেশে মৎস্য, কৃষি উৎপাদন, প্রাণিসম্পদ, ক্ষুদ্র খামারি পর্যায়, পোল্ট্রি খামার, উচ্চমূল্যের ফল ফসল উৎপাদন, বড় বড় উদ্যোক্তা পর্যায় থেকে শুরু করে কৃষির সকল খাতে ব্যাপক অর্থনৈতিক গতি সঞ্চারিত হয়েছে। জনসাধারণকে করছে গ্রামমুখি, কৃষিমুখি তথা খাদ্য নিরাপত্তা সম্পর্কে অনেকটা সচেতন।
শাইখ সিরাজের কৃষিভিত্তিক গণমাধ্যম কার্যক্রম পৌঁছেছে চার দশকে। গণমাধ্যমে একক কোনও ব্যক্তির কৃষি তথা উৎপাদন খাত নিয়ে এত বিস্তৃত কাজের নজির এশিয়া মহাদেশ তথা সারা পৃথিবীতে নেই।
‘হৃদয়ে মাটি ও মানুষ’-এর বর্ষপূতি উপলক্ষে ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা ৪০ মিনিটে প্রচার হবে ‘কাশ্মিরি আপেল কুল চাষে কৃষকের অভাবনীয় সাফল্য’ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন। যশোরের চৌগাছার ফকিরাবাদ গ্রামের কৃষক সিরাজুল ইসলাম চার বিঘা জমিতে চাষ করেছেন কাশ্মিরি আপেল কুল। এক বছরের ছোট্ট একটি কুলগাছে অসংখ্য লালচে রঙের কুল ধরে আছে। দেখলে মনে হয়- কুল নয়, লালচে আপেল ধরে আছে গাছে গাছে। গাছে পাতার চেয়ে ফলই যেন বেশি। নতুন এ জাতের কুল চাষ এবারই প্রথম। কুলের ফলন দেখে বেড়েছে তার স্বপ্নের পরিধি। প্রতিটি গাছ থেকে প্রায় ৬০ কেজি করে ফল পাওয়ার আশা করছেন তিনি। ফলন বলছে তার এই প্রত্যাশা একবারেই অমূলক নয়। বরং আরও বেশি পরিমাণের ফল তিনি পেতে পারেন।
গত কয়েক দশক ধরেই ঝিনাইদহ, যশোর, চুয়াডাঙ্গা এই এলাকাগুলোকে বলা যায় নতুন নতুন ফল-ফসল উৎপাদনে অগ্রগণ্য। মূলত এই বিষয়গুলোই উঠে আসবে এবারের বিশেষ পর্বে।