রবিবার (১৯ মে) দুপুর ১টায় কান উৎসবের পরিচালক থিয়েরি ফ্রেমো এগিয়ে নিয়ে এলেন ‘দ্য বেস্ট ইয়ারস অব অ্যা লাইফ’ ছবির পরিচালক ক্লদ ল্যঁলুশসহ বাকিদের। কিন্তু মনিকা বেলুচ্চির দেখা নেই! এদিকে সাংবাদিকদের মঞ্চের সামনে থেকে সরানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী তার মিশন শুরু করেছেন! ভাবছি, কেউ না এলে তার নাম উল্লেখ থাকার কথা না। তিনি নিশ্চয়ই আসবেন।
ভাবতে ভাবতেই কয়েক মুহূর্ত পর চোখের সামনে হাজির মনিকা বেলুচ্চি। চুলগুলো ঢেউ খেলে নেমে এসেছে কাঁধে। ঠোঁটে গোলাপি লিপস্টিক। বাদামি চোখজোড়া দেখে যেন লেখা যায় হাজার কবিতা! কী দারুণ স্নিগ্ধ সৌন্দর্য। মার্জিত, ঝলমলে, অভিজাত, স্নিগ্ধ সৌন্দর্য; কত বিশেষণই না দেওয়া যায়।
কালো সাটিন কাপড়ের পোশাক ও ট্রাউজারে অসামান্য রূপবতী লাগছে মনিকাকে। গায়ের ফরসা রঙ বলছে, এখনও লাবণ্য ধরে রেখেছেন ৫৪ বছর বয়সী এই অভিনেত্রী। সবচেয়ে বেশি বয়সী বন্ডকন্যা হিসেবে ‘স্পেক্টর’ ছবিতে তাকে দেখে কাবু হয়নি কে! ইতালীয় এই রূপসীকে সামনাসামনি দেখে চোখ যেন সরে না। এই সৌন্দর্য নিরন্তর। মাথা থেকে পা অবধি সব পরিপাটি। লম্বা কী!
‘দ্য বেস্ট ইয়ারস অব অ্যা লাইফ’ হলো সবশেষ উদাহরণ। ১৯৬৬ সালে মাত্র ২৭ বছর বয়সে ‘অ্যা ম্যান অ্যান্ড অ্যা ওম্যান’ ছবির জন্য স্বর্ণ পাম জেতেন ক্লদ ল্যঁলুশ। ৫৩ বছর পর এর সিক্যুয়েল হিসেবে তৈরি হয়েছে নতুন ছবিটি। আগেরটির মতো এবারের কিস্তিতেও অভিনয় করেছেন জ্যঁ-লুই ত্রাতিনিও ও আনুক এমে। গল্পে সাবেক রেস কার চালক স্মৃতির জানালায় ডুবে থাকেন। যাকে নিয়ে তিনি ভালোবাসা, ভাবনা ও স্বপ্ন সাজাতেন, সেই নারীকে খুঁজতে থাকে তার ছেলে। জ্যঁ-লুই ও অ্যান যেখানে গল্প ছেড়ে গিয়েছিলেন, সেখান থেকে ফের শুরু হয়।
কান চলচ্চিত্র উৎসবের সঙ্গে মনিকা বেলুচ্চির সখ্য বহু বছরের। ২০০০ সালে স্টিফেন হপকিন্সের ‘আন্ডার সাসপিশান’ ছবির সুবাদে প্রথমবার দক্ষিণ ফ্রান্সের সমুদ্রতীরবর্তী অঞ্চলে পা রাখেন তিনি। এটি প্রদর্শিত হয় প্রতিযোগিতা বিভাগের বাইরে। এর দুই বছর পর আবারও সাগরপাড়ের শহরে আসেন ইতালিয়ান এই রূপবতী। ২০০২ সালে তার অভিনীত গ্যাসপার নো’র ‘ইরেভারসিবল’ কানের প্রতিযোগিতা বিভাগে ব্যাপক আলোচিত হয়।
সংবাদ সম্মেলন শেষে অটোগ্রাফ দেওয়ার পর মুখে হাসি রেখে সেলফির জন্য মোবাইল ফোনে তাকালেন মনিকা বেলুচ্চি। ততক্ষণে অন্য সাংবাদিকদের মধ্যে কাড়াকাড়ি লেগে গেছে। এ কারণে তার সামনে থেকে আমার নোটপ্যাড নেওয়া হচ্ছিল না। পরে তিনিই আবারও হাসিমুখে নোটপ্যাডটা এগিয়ে দিলেন। চোখে লেগে আছে সেই মুহূর্তটাও।