ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব ফিল্ম ক্রিটিকসের (ফিপরেস্কি) এবারের বিচারকদের নামসহ পুরস্কার বিতরণীর সময় ও ভেন্যুসহ একটি বিজ্ঞপ্তি আলাদাভাবে দৃষ্টি কাড়ে প্রেস রুমে এলে। কারণ এতে বাংলাদেশের নাম আছে! ফিপরেস্কির এবারের বিচারকদের তালিকায় আছেন চলচ্চিত্রকর্মী সাদিয়া খালিদ রীতি। তার সুবাদে লাল-সবুজের দেশটির কথা উল্লেখ করা হচ্ছে। ফিপরেস্কির পক্ষ থেকে আয়োজকদের বিজ্ঞপ্তিটি দেওয়া হয়েছে। যদিও সব কাগজ বা তথ্য প্রেস রুমে জায়গা পায় না।
বাংলাদেশের এখন পর্যন্ত কানে পুরস্কার পাওয়ার একমাত্র ঘটনা এই ফিপরেস্কির মাধ্যমে। ২০০২ সালে তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’ পুরস্কারটি জেতে। তখন আহমেদ মুজতবা জামাল ফিপরেস্কির বিচারক প্যানেলে ছিলেন। এরপর আরও দু’বার এই দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
সাদিয়া খালিদ রীতির মাধ্যমে ১০ বছর পর আবারও ফিপরেস্কির বিচারক হতে কানসৈকতে এলেন বাংলাদেশের কোনও চলচ্চিত্র সমালোচক। বাংলাদেশের মেয়েদের মধ্যে তিনিই প্রথম ফিপরেস্কির বিচারক হলেন।
দক্ষিণ ফ্রান্সে সাগরপাড়ের শহরে লালগালিচার অফিসিয়াল আয়োজনে বাংলাদেশের নির্মাতা মেহেদী হাসানের নাম উচ্চারিত হয়েছে এবারের আসরে। ফরাসি ইনস্টিটিউট লে সিনেমাস দ্যু মন্দের কর্মসূচি ‘লা ফেব্রিক সিনেমা’য় স্থান পেয়েছে তার ‘স্যান্ড সিটি’ নামের পাণ্ডুলিপি। এর অংশ হিসেবে কানের সবচেয়ে বড় জৌলুস লালগালিচায় হাঁটার সুযোগ পান তিনি। তার পাশে ছিলেন ছবিটির প্রযোজক রুবাইয়াত হোসেন।
কানের বাণিজ্যিক শাখা মার্শে দ্যু ফিল্মে বিভিন্ন দেশের ফিল্ম প্রফেশনালসদের সঙ্গে আলোচনা করতে এবারের আসরে এসেছেন নির্মাতা সামিয়া জামান, স্বপন আহমেদ, জসীম আহমেদ, অ্যাডাম দৌলা, স্টার সিনেপ্লেক্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহবুব রহমান রুহেল এবং আগামীর নির্মাতা শীর্ষক একটি প্রতিযোগিতার বিজয়ী তাসমিয়া আফরিন মৌ। সামিয়া জামান ‘আজব কারখানা’ আর জসীম আহমেদ ‘মায়ার জঞ্জাল’ ছবির প্রযোজকের দায়িত্ব পালন করছেন।
পালে দে ফেস্তিভাল ভবনের বেজমেন্টে মার্শে দ্যু ফিল্মের একটি অংশে ২০ মে চালু হয়েছে শর্টফিল্ম কর্নার। উৎসবের ব্যাজধারীদের সেখান থেকে একটি করে গ্রন্থ সৌজন্য হিসেবে দেওয়া হচ্ছে। এতে ভিডিও লাইব্রেরি অংশে বাংলাদেশের নাম রয়েছে। এবারের আসরের শর্টফিল্ম কর্নারে অংশ নিচ্ছে আশরাফ শিশির পরিচালিত ‘যুদ্ধটা ছিল স্বাধীনতার’। এছাড়া বাংলাদেশের কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে চিত্রায়িত ব্রিটিশ নারী নির্মাতা লরেন অ্যান্ডার্স ব্রাউনের ‘শান্তিখানা’ রয়েছে শর্টফিল্ম কর্নারে।
এ দু’টি স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বা প্রামাণ্যচিত্রের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ ছিল না। কারণ, ‘যুদ্ধটা ছিল স্বাধীনতার’-এর ব্যাপ্তি ৩০ মিনিট। আর ‘শান্তিখানা’ ২৮ মিনিটের। কান উৎসবের স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বিভাগের নিয়ম অনুযায়ী ছবির ব্যাপ্তি হতে হয় সর্বোচ্চ ১৫ মিনিট।
শর্টফিল্ম কর্নারে ভিডিও লাইব্রেরিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের দর্শক, ফিল্ম প্রফেশনালসরা ছবি দেখেন। কোনোটি নিয়ে তাদের আগ্রহ তৈরি হলে সংশ্লিষ্ট নির্মাতার সঙ্গে পরিবেশনা স্বত্ব নিয়ে আলোচনা করতে যোগাযোগ স্থাপন করেন তিনি। এই জায়গা দিয়ে কানের শর্টফিল্ম কর্নার বাংলাদেশের নির্মাতাদের জন্য সম্ভাবনার।