বিশ্বের সবচেয়ে মর্যাদাসম্পন্ন উৎসব কানের ৭২তম আসরের শেষ আলো পড়লো বঙ জুন-হোর ওপর। শনিবার (২৫ মে) সমাপনী মঞ্চে উঠে এক হাত উপরে তুলে এশিয়ার এই নির্মাতা বিজয় উদযাপন করেন। মুখে ছিল গর্বের হাসি।
পুরস্কারটি গ্রহণ করে মঞ্চে দাঁড়িয়ে বঙ জুন-হো বলেন, ‘আমার বক্তব্য ফরাসি ভাষায় তৈরি করিনি, এজন্য দুঃখিত। সত্যি বলতে স্বর্ণ পাম জেতার প্রত্যাশা ছিল না আমার। আমি সত্যিই সম্মানিত বোধ করছি। আমি সবসময় ফরাসি চলচ্চিত্র দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছি। দুই পরিচালক অঁরি-জর্জ ক্লুজো ও ক্লদ শ্যাবরোলকে ধন্যবাদ দিতে চাই। প্যারাসাইট অ্যাডভেঞ্চার ছিল খুব স্পেশাল। এই ছবির সব কলাকুশলী ও দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানকে ধন্যবাদ। অভিনয়শিল্পীদের ছাড়া এই ছবি কখনও হতো না। তারা সত্যিই দারুণ। আমার বয়স যখন ১২ বছর, তখন থেকে সিনেমার ভক্ত আমি। তখনই পরিচালক হওয়ার সিদ্ধান্ত নিই। এই পুুরস্কার জিতে আমি অভিভূত। এটা অনেক বড় ব্যাপার।’
বঙ জুন-হো পরিচালিত ‘প্যারাসাইট’ ছবির গল্প চার সদস্যের একটি পরিবারকে ঘিরে। তাদের সবাই বেকার। পাশের বাড়ির ওয়াইফাই গোপনে ব্যবহার করে তারা। ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল করতে এক ধনকুবেরের বাড়িতে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ঢোকে এই পরিবার।
গতবার স্বর্ণ পাম জিতেছিল জাপানের হিরোকাজু কোরি-ইদার ‘শপলিফটারস’। টানা দ্বিতীয়বারের মতো এশিয়ায় এলো বিশ্ব চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বড় সম্মান। বঙ জুন-হো স্বর্ণ পাম জেতায় প্রমাণ হলো, এই অঞ্চলের ছবি বিশ্বমঞ্চে এখন সবার চেয়ে এগিয়ে।
পরিচালনায় আসার আগে কোরিয়ান অ্যাকাডেমি অব ফিল্ম আর্টে সমাজবিজ্ঞান ও ফিল্ম বিষয়ে পড়াশোনা করেন বঙ জুন-হো। ২০০১ সালে হংকং চলচ্চিত্র উৎসবে তার প্রথম ছবি ‘বার্কিং ডগস নেভার বাইট’ ফিপরেস্কি পুরস্কার জেতে। দ্বিতীয় ছবি ‘মেমোরিস অব মার্ডার’ (২০০৪) কোরিয়ায় দর্শকপ্রিয়তা পায়। একইসঙ্গে এটি তাকে এনে দেয় সান সেবাস্তিয়ান উৎসবে সেরা পরিচালকের পুরস্কার।
বঙ জুন-হো’র ‘দ্য হোস্ট’ ২০০৬ সালে কানের প্যারালাল বিভাগ ডিরেক্টরস ফোর্টনাইটে স্থান পায়। ২০০৮ সালে মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে ছিল তার ‘শেকিং টোকিও’। তার পরিচালিত ছবির মধ্যে ‘মাদার’ ২০০৯ সালে আঁ সাঁর্তে রিগারে ও ‘ওকজা’ ২০১৭ সালে ছিল কানের প্রতিযোগিতা বিভাগে। ২০১১ সালে ক্যামেরা দর বিভাগে বিচারকদের প্রধান ছিলেন তিনি। ওই বছর কান ক্ল্যাসিকসে দেখানো হয় কিংবদন্তি পরিচালক আকিরা কুরোসাওয়ার ওপর তার বানানো ‘কুরোসাওয়াস ওয়ে’।