মধ্যরাতে নোটিশ দিয়ে আবারও শুটিং স্থগিত

প্রতীকী ছবিকরোনা ক্রাইসিসে একের পর এক সিদ্ধান্ত বদল করে চলেছে টেলিভিশনের আন্তঃসংগঠনগুলো। এবার জানানো হলো—চালু নয়, বন্ধ রাখতে হবে দৃশ্যধারণ। গত পরশু (১৬ মে) শুটিং চালুর মাত্র ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে প্রত্যেকটি সংগঠন তাদের সদস্যদের এ নোটিশ দিলো।

এই সংগঠনের মধ্যে আছে—প্রোডিউসার অ্যাসোসিয়েশন (টেলিপ্যাব), ডিরেক্টরস গিল্ড, অভিনয় শিল্পী সংঘ ও নাট্যকার সংঘ।
রবিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সংগঠনগুলোর ফেসবুক পেজ ও হোয়াটসঅ্যাপে এই বার্তা দেওয়া হয়।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের পাঠানো এই চিঠিতে বলা হয়, ‘টেলিভিশন মাধ্যমের সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, ইতোপূর্বে আন্তঃসংগঠনকর্তৃক প্রদত্ত নোটিশে বলা হয়েছিল, আমরা বর্তমান সময়ে শুটিং কার্যক্রম শুরু করার বিপক্ষে। যেহেতু সরকার সীমিত আকারে দোকান চালু এবং লকডাউন সাময়িক শিথিল করেছে; তাই আমরাও সাময়িক শিথিলতার পক্ষে অবস্থান নিয়েছি। একই সাথে নোটিশে এও বলা ছিল যে, শর্ত সাপেক্ষে দেওয়া এই সিদ্ধান্তসমূহ যেকোনও সময় বাতিল হতে পারে। যেহেতু বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করছে; তাই আন্তঃসংগঠন তাদের স্ব স্ব সংগঠন সমূহের সদস্যদের সুচিন্তিত মতামত ও জোরালো দাবির প্রেক্ষিতে সাময়িক শিথিল অবস্থান থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম, আবুল হায়াত ও অভিনেত্রী-সাংসদ সুবর্ণা মুস্তাফাসহ সংগঠনসমূহের উপদেষ্টামণ্ডলী শুটিং বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন। এর প্রেক্ষিতে এই ব্যবস্থা নেওয়া হলো। পরবর্তী সিদ্ধান্ত সরকারের ঘোষণার সাথে সমন্বয় করে জানানো হবে চিঠিতে বলে উল্লেখ করা হয়।
বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনকেও নিশ্চিত করেছেন সংগঠনগুলোর নেতারা। এদিকে গত কয়েকদিন ধরেই সংগঠনগুলোর ভেতরে টানাপড়েন চলছে।
দেশ করোনা আক্রান্ত হওয়ার পর গত মার্চ মাস থেকে আন্তঃসংগঠনগুলো সমন্বিতভাবে দৃশ্যধারণ বন্ধ রাখে। কিন্তু গত ১০ মে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শুটিংয়ে যান জনপ্রিয় অভিনেতা জাহিদ হাসান। ১১ মে একটি অনলাইন বিজ্ঞাপনের দৃশ্যধারণে অংশ নেন শিল্পী সংঘের সভাপতি শহীদুজ্জামান সেলিমও।
তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হওয়ায় তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে চারটি সংগঠন। সঙ্গে সঙ্গেই ১৫ মে ৬টি শর্তে শুটিং চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়।
সবমিলিয়ে জনপ্রিয় অভিনেতাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে না পারার ব্যর্থতা ও শুটিং চালু করায় দায় কাঁধে নিয়ে গত পরশু (১৬ মে) সন্ধ্যায় পদত্যাগ করেন টেলিপ্যাবের সভাপতি ইরেশ যাকের ও সাধারণ সম্পাদক সাজু মুনতাসির। গতকাল মধ্যরাতে বিষয়টি বাংলা ট্রিবিউনের কাছে স্বীকার করেন ইরেশ।
এদিকে, আজকের নতুন এ নোটিশ নিয়েও চলছে সমালোচনা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে অনেকে লিখেছেন সিনিয়র দুই শিল্পী—জাহিদ হাসান ও শহীদুজ্জামান সেলিমের অপরাধ ঢাকতেই শুটিং বন্ধের ঘোষণা আবারও এলো।

অন্যদিকে, নোটিশে অনুরোধ করা হয়, ইতোমধ্যে যারা শুটিং শুরু করেছেন তারা অতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে যেন কাজটি সম্পন্ন করেন। বলা হয়, অনুগ্রহ করে জীবনের চাইতে জীবিকাকে প্রাধান্য না দিয়ে সকল প্রকার শুটিং বন্ধ রেখে নিজেকে, নিজের পরিবার; সর্বোপরি জনগণকে ভয়াবহ করোনার‌ হাত থেকে বাঁচাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে।
পড়তে পারেন: 

***ব্যর্থতার দায় নিয়ে টেলিপ্যাব থেকে ইরেশ-সাজুর পদত্যাগের সিদ্ধান্ত!