কারও স্মরণে কত কিছুই তো হয়ে থাকে- দোয়া-মাহফিল, স্মৃতিচারণ, চিত্র-চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, প্রতিযোগিতা, ক্রোড়পত্র প্রকাশ ইত্যাদি।
না, এসবের কিছু হচ্ছে না। কিংবদন্তি নির্মাতা-লেখক-সাংবাদিক-মুক্তিযোদ্ধা জহির রায়হান স্মরণে হচ্ছে শুধুই বক্তৃতা! যে বক্তৃতা সাধারণত শোভা পায় খোলা ময়দানে রাজনৈতিক মঞ্চে। ফলে জহির রায়হানকে ঘিরে আয়োজিত এই বক্তৃতা নতুন মাত্রা যোগ করবে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি রাজধানীর মিরপুর থেকে নিখোঁজ হন জহির রায়হান। তাই দিনটিকে তার মৃত্যুদিন না বলে অন্তর্ধান দিবস বলা হয়। প্রতিবছর এই দিনটিকে স্মরণ করে নানা আয়োজন করে থাকে দেশের অন্যতম চলচ্চিত্র সংগঠন ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটি।
এবার ৪৯তম অন্তর্ধান দিবস পালন হবে বক্তৃতার মাধ্যমে। ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল আহমেদ রনি জানান, আয়োজনটি শনিবার রাত ৮টা ৩০ মিনিট থেকে অনলাইনে সরাসরি অনুষ্ঠিত হবে। যা সোসাইটির ফেসবুক পেজ (https://www.facebook.com/Moviyana) থেকে যে কেউ সরাসরি দেখতে পারবেন।
সাংগঠনিক সম্পাদক রনি আরও জানান, জহির রায়হানের চিন্তা ও কর্মের বিশ্লেষণমূলক বিশেষ বক্তৃতার এই আয়োজনে ‘জহির রায়হান: ক্যামেরা যখন রাইফেল’ শিরোনামে বক্তৃতা প্রদান করবেন চলচ্চিত্র সমালোচক, লেখক ও চলচ্চিত্র সংসদকর্মী মাহমুদুল হোসেন।
ম্যুভিয়ানা ফিল্ম সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক নির্মাতা অদ্রি হৃদয়েশ-এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্য প্রদান করবেন চলচ্চিত্র নির্মাতা ও লেখক বেলায়াত হোসেন মামুন।
চলচ্চিত্র পরিচালনা কিংবা প্রযোজনা ছাড়াও তিনি কথাসাহিত্যিক হিসেবে নন্দিত ছিলেন; অংশগ্রহণ করেছেন রাজনৈতিক ক্ষেত্রে সরাসরি প্রতিবাদী ভূমিকায়। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি ক্যামেরা হাতে চলচ্চিত্রকারদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ‘স্টপ জেনোসাইড’, ‘কাঁচের দেয়াল’, ‘জীবন থেকে নেয়া’- চলচ্চিত্রগুলো বাংলাদেশে চলচ্চিত্র নির্মাণকলার ক্ষেত্রে মাইলফলক হয়ে রয়েছে।
১৯৭১ সালের ১৭ ডিসেম্বর কলকাতা থেকে ঢাকায় ফেরেন জহির রায়হান। নিখোঁজ বড় ভাই শহীদুল্লাহ কায়সারকে খুঁজতে ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি ঢাকার মিরপুরে যান। এরপর আর তিনি ফিরে আসেননি। কোনও খোঁজও পাওয়া যায়নি তার এখনও।