যে আফসোসে পুড়ছেন এটিএমের সন্তানরা!

৫ সন্তানের বিশাল পরিবারের সবচেয়ে প্রাণবিন্দুতে ছিলেন বরেণ্য অভিনেতা এটিএম শামসুজ্জামান। সঙ্গে ছিল নাতি-নাতনিরাও। আর এলাকার মানুষদের কাছেও তিনি ছিলেন চোখেরমণি।

তাই সকাল সাড়ে ৯টায় সূত্রাপুর মসজিদে যখন মাইকে ঘোষণা করা হলো, প্রিয় অভিনেতা আর নেই- চারদিকটা হয়ে গেল থমথমে। হাসিমুখে যে মানুষটা সেলফি, কৌতুকসহ নানা কিছুর আবদার পূরণ করে যেতেন, সেই মানুষটাই নেই!

পরিবারের সদস্যরাও শেষ দিকে এটিএমের সব ইচ্ছেগুলোকে প্রাধান্য দিয়ে পূরণ করার চেষ্টা করতেন। তবে একটি আক্ষেপের কথা জানালেন তার মেয়ে কোয়েল আহমেদ।

বললেন, ‘‘উনি একটি ছবি বানাবেন- এটা আজ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে পৌঁছাতে পারিনি। বাবার একটাই কথা ছিল, আমার বিষয়ে কারও কাছে কিছু বলবা না। চাইবা না। আমারে ছোট করব না। প্রধানমন্ত্রী যখন ১০ লাখ টাকা আমার বাবাকে দিলেন, অনেকেই বললেন, ‘মাত্র এই ক’টাকা দিয়েছেন উনাকে’। বাবা পাল্টা জবাব দিয়েছেন, ‘এটা কি আমার বাবার টাকা? নাকি আমি রোজগার করে প্রধানমন্ত্রীর তহবিলে দিতাম। তিনি টাকা দিয়েছেন, এটাই সম্মান। এটাই আমার জন্য অনেক বেশি’। আমার বাবা সর্বশেষ উনার (প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন।’’

জানালেন, সন্তান হিসেবে একটি আফসোস তাদের পুড়িয়ে যাচ্ছে। কোয়েলের ভাষ্য, ‘বাবার সব ইচ্ছে আমরা সাধ্যমতো পূরণ করার চেষ্টা করেছি। শুধু একটি ইচ্ছে আপনারা (সাংবাদিক) প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছে দেননি। বাবার খুব ইচ্ছে ছিল বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে চলচ্চিত্র বানাবেন। কিন্তু সেটা তিনি করতে পারলেন না। বাবার জীবনে এই একটাই আফসোস থেকে গেল। প্রধানমন্ত্রী জানতে পারলেন না- তার ইচ্ছের কথা। এখন বাবা নেই, আর কোনও ইচ্ছে নেই।’

উল্লেখ্য, আজ (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে এটিএম শামসুজ্জামান সমাহিত করা হয়েছে। ইচ্ছে অনুযায়ী রাজধানীর জুরাইন কবরস্থানে বড় ছেলের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয় এই বরেণ্য অভিনেতাকে।

এর আগে বাদ জোহর নারিন্দায় পীর সাহেব বাড়ি জামে মসজিদে তার প্রথম জানাজা এবং বাদ আসর সূত্রাপুর জামে মসজিদে দ্বিতীয় জানাজায় অংশ নেয় তার সহকর্মী ও প্রতিবেশীরা।