ডিরেক্টরস গিল্ড নির্বাচন ২০২১

বিএফডিসিতে ভোট নয়, চলছে উৎসব

উৎসব মূলত হয় নির্বাচনি ফলাফলের পর, যারা জয়লাভ করেন তাদের পক্ষ থেকে। আর ভোট গ্রহণের সময় থাকে চাপা উত্তেজনা কিংবা থমথমে ভাব।

অথচ ডিরেক্টরস গিল্ডের নির্বাচনে বইছে উল্টো বাতাস! শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে নির্বাচনস্থল বিএফডিসিজুড়ে বইছে উৎসবের আমেজ। নাটক নির্মাতাদের নির্বাচনে এসে যেন মিশে গেছে মিডিয়ার প্রতিটি বিভাগের মানুষ। চলছে প্রার্থীদের মধ্যে তুমুল আড্ডা, তাতে সংগত দিচ্ছেন ভোটাররা।

সকাল ৯টা থেকে এফডিসির ১ নম্বর ফ্লোরে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। মাঝে নামাজের বিরতি শেষে চলবে ৫টা পর্যন্ত। তবে এই নির্বাচনের ফলাফল পাওয়া যাবে ১ মার্চ। সম্ভবত এবারই প্রথম, এভাবে লম্বা বিরতি নিয়ে ফলাফল ঘোষণা করা হচ্ছে। যার সঠিক কারণ অনেকেই জানেন না।

এবার সভাপতি পদে লড়ছেন সালাহউদ্দিন লাভলু, অনন্ত হিরা ও দীপু হাজরা। সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ ও এস এম কামরুজ্জামান সাগর।

অনন্ত হীরার মতে, ‘নির্বাচনের ফল যা-ই হোক না কেন, আমরা আমরাই লড়াই করছি। তাই লাভলু ভাই জিতলেও আমার পরাজয় হবে না।’

অন্যদিকে, সাধারণ সম্পাদক পদের অন্যতম প্রার্থী মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ বললেন, ‘নির্বাচন করার কোনও প্রস্তুতি আমার ছিল না। তবে সংগঠনের প্রয়োজনে, সিনিয়রদের অনুরোধে নির্বাচন করছি। নির্বাচিত হলে আমি কী করবো- সেসব আগাম বলিনি কাউকে। কারণ, আমি কাজ করে প্রমাণটা দিতে চাই। সবচেয়ে বড় কথা, এমন একটা আনন্দদিন পেতাম না, নির্বাচনটা না হলে। সকাল থেকে আমরা মূলত পিকনিক করছি!’

এদিকে, প্রথমবারের মতো লড়াই করছেন সভাপতি পদের দীপু হাজরা। তরুণ ভোটারই তার শক্তি বলে মনে করেন তিনি। এই নির্মাতার ভাষ্য, ‘আমার প্রতিদ্বন্দ্বী দুজনই শ্রদ্ধেয় ও অগ্রজ। দুজনের মাঝে আমার বয়সটা কম। আমি সেই তারুণ্যকে কাজে লাগাতে চাই। তাই প্রতিশ্রুতি নয়, নির্বাচিত হলে তারুণ্যের গতিতে কাজ করে সবার মন জয় করতে চাই।’

সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে লড়াইরত প্রার্থীরা নির্বাচনি পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। বলেছেন, যেই জিতে আসুক তাকেই স্বাগত জানাবেন তারা।

এবার ১২টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন মোট ৩৪ জন নির্মাতা। অন্যদের মধ্যে সহ-সভাপতি পদের জন্য দাঁড়িয়েছেন, প্রাণেশ চন্দ্র চৌধুরী, ফরিদুল হাসান, মাসুম আজিজ, রফিক উল্লাহ সেলিম ও শিহাব শাহীন। যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হিসেবে আছেন চয়নিকা চৌধুরী, ফিরোজ খান ও রকিবুল হাসান চৌধুরী (পিকলু)। সাংগঠনিক সম্পাদক প্রার্থী তুহিন হোসেন, ফেরারী অমিত ও এসএম মাসুম করিম। প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে লড়ছেন মনিরুজ্জামান নাহিদ (নাহিদ জামান) ও মো. সহিদ-উন-নবী।

দফতর সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন গোলাম মুক্তাদির (শান) ও মুক্তি মাহমুদ। প্রশিক্ষণ ও আর্কাইভ বিষয়ক সম্পাদক পদে মোস্তফা মনন ও এসএম শহিদুল ইসলাম রুনু। তথ্য ও প্রযুক্তি-বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. আনিসুল ইসলাম ইমেল ও সঞ্জয় বড়ুয়া নির্বাচন করছেন। আইন ও কল্যাণ বিষয়ক পদে দাঁড়িয়েছেন নিয়াজ মাহমুদ আক্কাস (মাহমুদ নিয়াজ চন্দ্রদীপ) ও সাঈদ রহমান (মো. সাইদুর রহমান আরিফ)।

অর্থ-সম্পাদক পদে মো. সাজ্জাদ হোসেন সনিসহ কার্যনির্বাহী পরিষদের সদস্য পদে ৭ জনই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আগাম নির্বাচিত হয়েছেন। অর্থাৎ মোট ১২টি পদের মধ্যে ১০টিতে লড়াই হবে। কার্যনির্বাহী পদে আগাম নির্বাচিত ৭ জন হলেন, আবু হায়াত মাহমুদ, ইমরাউল হুদা রাফাত, একেএম আনিসুজ্জামান আনিস, কেএম মাহমুদুন্নবী (রিপন নবী), তারিক মুহাম্মাদ হাসান, মোস্তাফিজুর রহমান সুমন ও হাফিজুর রহমান সুরুজ।

এবার ভোটার সংখ্যা ৩৯৬ জন। প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করছেন অভিনেতা-নাট্যব্যক্তিত্ব এস এম মহসীন। এছাড়া নরেশ ভূঁইয়া ও মাসুম রেজা নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব নিয়েছেন। আপিল বিভাগের দায়িত্বে আছেন হাসান ইমাম, আবুল হায়াত ও মামুনুর রশীদ।