অভিনয় শিল্পীদের বরাবরই অভিযোগ, খবরের শিরোনামে আসা অভিযুক্ত বেশিরভাগ মডেল-চিত্রনায়িকারই আসলে তেমন কোনও কাজ বা পরিচয় নেই। কোনও শিল্পী সংগঠনের সদস্যও নন, তবু তিনি অপরাধ করে পুলিশের হাতে ধরা পড়লে বনে যান মডেল বা চিত্রনায়িকা! যা সত্যিকারের অভিনয়শিল্পী, চিত্রনায়িকা বা মডেলদের জন্য বিব্রতকর।
মূলত এই বিষয়ের ওপর আলোকপাত করে অভিনয় শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ব্যক্তিগত পরিচয়, প্রভাব, বাহ্যিক সৌন্দর্য এবং কিছু ক্ষেত্রে কপালের জোরে দুই একটি বিজ্ঞাপন বা নাটকে কাজ করলেই তাকে মডেল বা অভিনেত্রী বলা যায় কিনা সেই ভাবনাটা এখন জরুরি হয়ে উঠছে।’
গণমাধ্যমের প্রতি নাসিমের অভিযোগ, কোথাও পুলিশি অভিযানে ধরপাকড় হলে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় খবরের শিরোনাম হয় ‘অমুক মডেল বা অভিনেতা/অভিনেত্রী গ্রেফতার’; যা অবধারিতভাবে হয়ে ওঠে আকর্ষণীয় সংবাদ! এ ধরনের শিরোনাম সর্বজন শ্রদ্ধেয়, প্রথিতযশা অভিনেতা-অভিনেত্রী, মডেলসহ বিনোদন মাধ্যমে নিষ্ঠার সঙ্গে কর্মরত সবার জন্য সামাজিকভাবে অত্যন্ত বিব্রতকর এবং অসম্মানজনক বলে মনে করেন অভিনয় শিল্পীদের এই নেতা।
তার ভাষায়, ‘‘যারা সিরিয়াসলি, প্রফেশনাল এথিক্সসহ মডেলিং বা অভিনয়ের কাজটি করে, তাদের প্রায়শই বিব্রত হতে হয় আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবের কাছে। শুনতে হয় ‘দেখলাম তোমাদের এক মডেল/অভিনেতা এই কুকর্ম করেছে’! যা খুবই অসম্মানজনক ও বিব্রতকর। এর ফলে ক্রমশ এই পেশার মানুষ সম্পর্কে এক ধরনের অনাস্থা ও অসম্মান তৈরি হয়েছে সমাজে। যা হয়ে উঠতে পারে অপ্রত্যাশিত সোশ্যাল ট্যাবু।’’
অভিনয় শিল্পী সংঘ মনে করছে, গণমাধ্যম কাকে অভিনেতা/অভিনেত্রী বা মডেল বলবে তার ওপরই নির্ভর করে এই পরিস্থিতি তৈরি হবে কিনা।
সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম বলেন, ‘গণমাধ্যম যখন এমন কাউকে নিয়ে হেডলাইন করবেন, সংশ্লিষ্ট সংগঠনগুলো থেকে যাচাই এবং মিডিয়ার কাজে তার নিষ্ঠা, অবদান প্রভৃতি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নিয়ে খবরে তার পেশাটি উল্লেখ করবেন, এটাই আমাদের অনুরোধ ও প্রত্যাশা।’
প্রসঙ্গত, সর্বশেষ মডেল পরিচয়টি শিরোনামে আসে ১ আগস্ট ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও মরিয়ম আক্তার মৌ নামের দু’জনকে গ্রেফতার করার মাধ্যমে। রবিবার (১ আগস্ট) বারিধারা ও মোহাম্মদপুরের বাবর রোডের পৃথক দুটি বাসায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ।
তাদের বাসা থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ, দেড় হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট, সীসা খাওয়ার উপকরণ উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে পিয়াসার নামে গুলশান থানায় ও মৌর নামে মোহাম্মদপুর থানায় পৃথক দুটি মাদকদ্রব্য আইনে মামলা দায়ের করা হয়। সোমবার তাদের আদালতে সোপর্দ করে তিন দিনের রিমান্ডে নিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ।