পরীমণির জামিন

‘আনন্দ নয়, এখন ওর মানসিক স্বাস্থ্যটা জরুরি’

পরীমণির জামিনের খবরে স্বস্তি নেমেছে সোশ্যাল হ্যান্ডেলে। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করছেন মিডিয়ার বেশিরভাগ। তবে এর কোনোটিতেই আগ্রহ নেই পরীর ক্যারিয়ারের অন্যতম নির্মাতা গিয়াস উদ্দিন সেলিমের।

জামিনের খবরে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় ‘স্বপ্নজাল’-খ্যাত এই নির্মাতা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘এখন আসলে আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশের সময় নয়। আমি বরং তাকিয়ে আছি ওর মানসিক স্বাস্থ্য বা প্রশান্তির দিকে। ও যে ট্রমার মধ্য দিয়ে নিজেকে টেনে নিয়েছে এতগুলো দিন, সেখান থেকে বের হওয়া জরুরি।’

এই নির্মাতা মনে করেন, জেল থেকে বের হওয়ার পর পরীকে আরও সচেতন হতে হবে। নতুন করে জীবনটাকে গোছাতে হবে। মানসিক শক্তিটা রিকভার করা জরুরি। তা না হলে, ঘুরে দাঁড়ানো কষ্ট হয়ে যাবে পরীমণির জন্য।

সেলিম বলেন, ‘পরীর এই সাময়িক মুক্তিতে আমি যতটা খুশি, ততধিক খুশি হতাম দ্রুত সময়ের মধ্যে যদি ওকে আমার সিনেমার জন্য কাস্ট (চুক্তিবদ্ধ) করতে পারতাম। আমি বরং সেই সুসময়ের অপেক্ষায় আছি। ওকে নিয়ে আবার সিনেমা নির্মাণের। সে জন্যই প্রার্থনা করছি, ফেরার পর ও যেন দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে। ফের কাজে মন বসাতে পারে।’

গিয়াস উদ্দিন সেলিমের সঙ্গে পরীমণির একটিই ছবি। নাম ‘স্বপ্নজাল’। ছবিটি একই নির্মাতার ‘মনপুরা’র কাছাকাছিও যেতে পারেনি বাণিজ্যিক বিচারে। যদিও সমালোচকরা বলছেন, শিল্পমানের বিচারে ‘স্বপ্নজাল’ টিকে থাকবে বহুকাল, সঙ্গে পরীমণিও। তাই তো ছবিটিকে পরী মনে করেন তার ক্যারিয়ারের প্রথম ও প্রধান বাঁক বদলের উপাদান হিসেবে। সেই সূত্রে, নির্মাতা সেলিমের প্রতি তার শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস অগাধ।

সেটি গিয়াস উদ্দিন সেলিমেরও জানা কথা। তাই তো পরী আটকের পর অনেকটা নীরবেই প্রতিবাদী হয়েছেন এই মৃদুভাষী নির্মাতা। ব্যানার হাতে দাঁড়িয়েছেন রাজপথেও। দিয়েছেন ফেসবুক পোস্ট। কথা চালিয়ে গেছেন চলচ্চিত্রের নানা সমিতির সঙ্গেও।

সেলিম বলেন, ‘জামিনের আগে আমার পক্ষ থেকে যতটুকু চেষ্টার সেটা করেছি। আমার হাত আর কতই লম্বা। কতটুকুই বা পারি বলুন! যেমন, আমার তো ইচ্ছে পরীকে নিয়ে দ্রুত সময়ে আরেকটা সিনেমা তৈরির। কিন্তু সেটা তো এখনই সম্ভব না। আমার হাতে একটা নতুন কাজ রানিং। তবে ওকে নিয়ে কাজ করার স্বপ্ন আবার শুরু করলাম। কারণ, ওকে শুটিং স্পটে দেখলে সবচেয়ে খুশি হতাম। সেটা যার ইউনিটেই হোক। প্রার্থনা করি, ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসুক দ্রুত।’

মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কেএম ইমরুল কায়েশের আদালত নারী, অভিনেত্রী ও অসুস্থতা বিবেচনায় ৫০ হাজার টাকা মুচলেকায় পরীমণির জামিন মঞ্জুর করেন।

পরীমণির আইনজীবী মজিবুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, জামিনের কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছালেই পরীমণি মুক্তি পাবে। আমরা যত দ্রুত সম্ভব পরীমণিকে কারাগার থেকে বাইরে আনার চেষ্টা করছি।

এর আগে ৪ আগস্ট রাতে প্রায় ৪ ঘণ্টার অভিযান চালিয়ে বনানীর বাসা থেকে পরীমণি ও তার সহযোগীকে আটক করে র‍্যাব। তার বাসা থেকে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয় বলে জানানো হয়। আটকের পর তাদের নেওয়া হয় র‍্যাব সদর দফতরে। পরে র‍্যাব-১ বাদী হয়ে মাদক আইনে পরীমণির বিরুদ্ধে মামলা করে।