কেন টুপি পরে বের হয়েছিলেন, ব্যাখ্যা করলেন শুভ

গত ২ ডিসেম্বর রাজধানীর স্টার সিনেপ্লেক্সের বসুন্ধরা শাখায় অনুষ্ঠিত হয় ‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমার প্রিমিয়ার শো। সেদিন বিশেষ বেশভূষায় উপস্থিত হয়ে চমকে দেন চলচ্চিত্রটির নায়ক আরিফিন শুভ। পরনে ছিল ‘বঙ্গবন্ধু’ সিনেমার শুটিংয়ের পোশাক ও মাথায় ‘বঙ্গবন্ধু’ লেখা টুপি।

পোশাকটি পরে এর আগে দেখা গেলেও টুপিটি দেয় নতুন মাত্রা। আর তা নিয়েই শুরু হয় সমালোচনা। অনেকে মন্তব্য করেন, দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই এই চিত্রনায়ক তার পরের ছবির কস্টিউম পরে হাজির হয়েছেন। আবার সেখানে দেওয়া শুভর বক্তব্য ঘিরেও কথা বলতে শুরু করেন অনেকে। 

‘মিশন এক্সট্রিম’ দেখার আহ্বান জানানোর একপর্যায়ে শুভ একাত্তর সালকে ‘সেভেনটি ওয়ান’ এবং বায়ান্নকে ‘ফিফটি টু’ বলেন। পাশাপাশি বাংলাদেশি হিসেবে এই ছবিটি দেখা অবশ্যই উচিত বলেও দাবি করেন। একই সঙ্গে সিনেমাটি দেখাকে দেশপ্রেমের সঙ্গে তুলনা করেন।

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন শুভ


আরিফিন শুভর বক্তব্য নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে চলছে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা। 

অবশেষে এসব বিষয়ে মুখ খুললেন এই তারকা। শুভ আত্মপক্ষ সমর্থন করে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে পেজে এক ভিডিও বার্তা দিয়েছেন তিনি। নায়ক জানান, ‘বঙ্গবন্ধু’র শুটিং চলাকালীন অফস্ক্রিনেও তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পোশাক (ঢোলা পাজামা, পাঞ্জাবি) পরে থাকেন।

তার ভাষ্য, ‘‘আমার ক্ষুদ্র প্রয়াস, যে চরিত্রটিতে কাজ করছি, সে চরিত্রটিতে বসবাস করার জন্য। এখানে আহামরি কোনও বিষয় নেই। ‘বঙ্গবন্ধু’র শুটিং যখন শুরু হয় তখন কেউ যদি আমাকে দেখে থাকেন, তাহলে দেখবেন আমি অফস্ক্রিনেও এই কাপড় পরে থাকতাম। তখন অবশ্য মাথায় কোনও কাপড় পরতাম না। পরে অবশ্য অনেকে আমার মাথায় কিছু না কিছু দেখেছেন। এর একটি কারণ আছে, সে কারণটি বলতে চাই ক্ষোভে, দুঃখে। কিন্তু আমি তা বলবো না, তাতে আমার অন্য আরেকটি সন্তানের ক্ষতি হবে, তার নাম ‘নূর’।’’

মূলত ‘নূর’ হলো শুভর অপর চলচ্চিত্র। এতে শুভর চুল ভিন্ন এক স্টাইলে দেখা যাবে। ইতোমধ্যে এর দৃশ্যধারণ সম্পন্ন হয়েছে। 

প্রিমিয়ারে মাথায় ‘বঙ্গবন্ধু’ লেখা সবুজ রঙের একটি টুপি পরে যান শুভ। এর ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, ‘‘এটি আমি পরে যেতে চাইনি। আমাদের ৭ মার্চের ভাষণের দৃশ্যায়ন চলছিল। সেখানে যারা ক্রাউডের (বক্তৃতা শুনতে আসা জনতা) অভিনয় করছিলেন তাদের অনেকের মাথায় এই টুপিটি (সবুজ-সাদা টুপিতে ‘বঙ্গবন্ধু’ লেখা) পরা ছিল। বিষয়টি ইন্টারেস্টিং লাগলো। আমার কাছে মনে হলো, গায়ের পোশাকের সঙ্গে মাথায় অন্য কাপড় ভালো লাগবে না, আমি এটি (বঙ্গবন্ধু লেখা টুপি) পরেই চলে যাই।’’বিগত এক বছর এমনভাবেই চলাফেরা করেন এই নায়ক
এছাড়া ইংরেজিতে লেখা চিত্রনাট্য দেখিয়ে শুভ আরও বলেন, ‘‘অনেক দিন ধরে সেভেনটি ওয়ান, ফোরটি এইট, ফিফটি টু, সিন থার্টি ওয়ান, থার্টি টু- ব্যাপারগুলো আমার সঙ্গে চলছে। কারণ, স্ক্রিপটা ইংরেজিতে এভাবেই লেখা। গত এক বছর টানা এভাবেই কাজ করছি। একাত্তরকে ‘সেভেনটি ওয়ান’ বলা যদি অপরাধ হয়, আমি ক্ষমা চাইছি। বায়ান্নকে ‘ফিফটি টু’ বলায় যদি অন্যায় হয়, তাহলে আমি ক্ষমা চাইছি। কিন্তু বায়ান্নকে ‘তেপান্ন’ তো বলিনি। বায়ান্নকে তো ‘একান্ন’ বলিনি। একাত্তরকে তো ‘৭৩’ বলিনি। আমার জীবনে এই মুহূর্তে যে ঘটনাগুলো ঘটছে সেখান থেকে হয়তো ‘সেভেনটি ওয়ান’, ‘ফিফটি টু’ বলেছি। কী অপরাধ করেছি? যদি অপরাধ হয়ে থাকে আমাকে ক্ষমা করবেন।’’ 

দেশপ্রেম সম্পর্কিত বিতর্কের জবাবে এই নায়ক বলেন, ‘‘মিশন এক্সট্রিম-এর গল্প যখন সানী সানোয়ার আমাকে প্রথম শোনান, সেখান থেকে একটা জিনিস আমি প্রথম পেয়েছিলাম- দেশপ্রেম। দেশের প্রতি ভালোবাসা, দেশের প্রতি মায়া। ছবিটির প্রথম পর্ব যারা দেখেছেন, তারা হয়তো বিষয়টি উপলব্ধি করেছেন। মিশন এক্সট্রিম-এর দ্বিতীয় পর্ব যখন আসবে তখন আরও পরিষ্কার হবে এটি দেশপ্রেমের ছবি।’’

‘মিশন এক্সট্রিম’ সিনেমাটি যৌথভাবে নির্মাণ করেছেন সানী সানোয়ার ও ফয়সাল আহমেদ। এ ছবিতে ঢালিউডের ‘মাসলম্যান’ আরিফিন শুভ অভিনয় করেছেন সাহসী এক পুলিশ অফিসারের চরিত্রে। তার সঙ্গে আরও আছেন জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশী, নাবিলা, সুমিত সেনগুপ্ত, তাসকিন রহমানসহ অনেক তারকা।