ঈদ বিশেষ

ময়মনসিংহ থেকে মুম্বাই, অনুপ্রেরণা ছিল দুই বন্ধুর: আরিফিন শুভ

কোরবানির ঈদ মানেই ত্যাগের মহিমায় উদ্ভাসিত হওয়ার সময়। প্রায় প্রতিটি মানুষের উঠে দাঁড়ানোর পেছনে কেউ না কেউ ছায়া হয়ে থাকে। যে ছায়ায় হেঁটে জীবনে আসে সাফল্য। তারকাজীবনে সেই পেছনের মানুষের ত্যাগ নিয়েই বাংলা ট্রিবিউন-এর এবারের আয়োজন-

৭৫তম কান উৎসবের বাণিজ্যিক শাখা মার্শে দু ফিল্মে ‘মুজিব’ সিনেমার সুবাদে লালগালিচায় অংশ নিয়েছিলাম। তখন শুধু মনে হয়েছিল ময়মনসিংহ থেকে ছবিটির শুটিংয়ে মুম্বাই যেতে পারা এই ছেলেটি এখন কানে হাঁটছে!

আমার আড্ডায় বহুবার বলেছি ২৫৭ টাকা নিয়ে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকায় আসার গল্প।

১৭-১৮ বছর আগের সে ঘটনার পেছনে ছিল আমার দুই বন্ধুসহ আরও কয়েকজন। তাদের নামটি কখনও সেভাবে নেওয়া হয় না।

মডেলিং করতে চাইতাম বলে আমার কাছের অনেক মানুষই আমাকে হেয় করতেন, ব্যঙ্গ করতেন। বলতেন, মডেলার!

তবে বন্ধুদের সমর্থন আমি পেতাম। তারা সময়ে ঠাট্টা করলেও সাপোর্টও দিতো। তেমনই দুই জন হলেন আসিফ আর ইমতিয়াজ।

তাদের ভাষা ছিল সবসময়ই ইতিবাচক। সাহসও জোগাতো, বলতো ‘তুই পারবি’। তারা দুজনে মিলে একদিন ২৫৭ টাকা পকেটে দিয়ে বললো, ‘তুই ঢাকায় যা। সেখানেই তোকে মানাবে’। সত্যি বলতে, আমি সরল মনে তাদের কথা গ্রহণ করেছিলাম। আজ বুঝেছি, তাদের আস্থা ও বিশ্বাসটা ভুল ছিল না।

তাদের কথায় ভর করেই উঠে পড়েছিলাম ট্রেনে। হাতে ছিল মাত্র ২৫৭ টাকা।

তবে ঢাকায় আসার পর আসল চিত্রটা সামনে আসে। এমন কোনও কাজ নেই, যেটা করতে হয়নি। প্রোডাকশন বয়ের কাজও করতাম। যদিও নাম ছিল অ্যাসিসট্যান্ট ডিরেক্টর।

আরজে হয়েছি, গলা বেচেছি, মডেলিং করেছি। আস্তে আস্তে নিজেকে নিয়ে এগিয়েছি। এমনও হয়েছে রাতটা কাটাতে হয়েছে কোনও অফিস বা বাইরে।

সেভাবেই আমি আজকের আরিফিন শুভ হতে পেরেছি। আমি আমাকে বহুবার বহুভাবে স্যাক্রিফাইস করেছি।
তবে শুরুতে আমার দুই বন্ধু যদি না থাকতো, যদি না ওভাবে বলতো ‘তুই পারবি’, তাহলে হয়তো আমার আর কিছু হয়ে ওঠা হতো না।