জ্যোতির আক্ষেপ ঘুচবে ৮ আগস্ট

জ্যোতির অভিনয় ক্যারিয়ারের বড় একটা আক্ষেপ ছিলো বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে বলিউডের শ্যাম বেনেগাল নির্মিত বায়োপিক ‘মুজিব’ থেকে ছিটকে পড়া। এই ছবিতে তার অভিনয় করার কথা ছিলো বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের চরিত্রে। লুক টেস্টে উত্তীর্ণ হয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ে তিনি বাদ পড়েন অজ্ঞাত কারণে। এ নিয়ে প্রকাশ্যে আক্ষেপ জানান অভিনেত্রী।

তবে এবার সেই আক্ষেপ ঘুচতে চললো। এরমধ্যে তিনি একই চরিত্রে অভিনয় করার সুযোগ পেয়েছেন ‘বঙ্গমাতা’ নামের সিনেমায়। যেখানে তিনি অভিনয় করেছেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের চরিত্রে। খোরশেদ বাহারের উপন্যাস ‘বঙ্গমাতা- ইতিহাসের নিভৃত সৈনিক’ অবলম্বনে নাসরীন মুস্তাফার চিত্রনাট্যে স্বল্পদৈর্ঘ্য এই চলচ্চিত্রটি পরিচালনা করেছেন গৌতম কৈরী।

ছবিটি দেশজুড়ে মুক্তি পাচ্ছে ৮ আগস্ট। যে দিনটিতে জন্ম নিয়েছেন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে বঙ্গমাতার অবদান দেশব্যাপী তুলে ধরতে বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় এই চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেছে। বাংলাদেশের ইতিহাসে বঙ্গমাতাকে নিয়ে এটিই প্রথম চলচ্চিত্র।

সিনেমাটিতে কাজ করা প্রসঙ্গে জ্যোতি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের মতো মহীয়সী নারীর জীবনী পর্দায় রূপদান আমার জন্য সৌভাগ্য, অনুপ্রেরণা ও আনন্দের। ৮ আগস্ট থেকে সেই আনন্দ উপভোগ করবো। কারণ, এদিন থেকে দেশজুড়ে ছবিটি প্রদর্শিত হবে।’

জ্যোতি জানান, সারাদেশে ‘বঙ্গমাতা’ চলচ্চিত্রটি প্রদর্শনের জন্য মন্ত্রণালয় ইতিমধ্যে কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এরমধ্যে ৮ আগস্ট দেশের সকল শিল্পকলা একাডেমীসহ সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে সকল সংস্থায় চলচ্চিত্রটি প্রদর্শিত হবে। বাংলাদেশ জাতীয় যাদুঘরে পুরোমাস জুড়ে ১ ঘণ্টা পরপর চলচ্চিত্রটির শো চলবে। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও উপজেলা পর্যায়ে বিশেষভাবে প্রদর্শনের জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

আর এসব তথ্য জানান দিতে, ৭ আগস্ট বিকাল ৫টায় শিল্পকলা একাডেমীর নাট্যশালা মিলনায়তনে চলচ্চিত্রটির প্রিমিয়ার শো’র আয়োজন করা হয়েছে।

ছবিটি মুক্তির আগে পেয়েছে প্রশংসিত ছাড়পত্র। সেন্সর বোর্ড সদস্যরা এটি দেখে প্রকাশ করেছেন মুগ্ধতা। তারই খানিকটা শেয়ার করলেন জ্যোতিকা জ্যোতি। বললেন, ‘ছবিটি দেখে সেন্সর বোর্ডের একজন সদস্য এতো প্রশংসা করলেন যে, হতবাক হয়ে গেলাম। কারণ উনি খুব সহজে ভালো বলেন না, কারণ উনি অরুণা বিশ্বাস। উনি বলেছেন, পরিচালক গৌতম কৈরী এত মুনশিয়ানা দেখিয়েছেন এবং বঙ্গবন্ধুকে এমনভাবে প্রেজেন্ট করেছেন যে তিনি মুগ্ধ! বঙ্গবন্ধুর ভয়েস শুনে তিনি নাকি বারবার চমকে গেছেন। আর বঙ্গমাতার চরিত্রে আমার অভিনয় নাকি এতটাই ন্যাচারাল ছিলো যে, তিনি আলাদা করতে পারছিলেন না। সেন্সর বোর্ডের সবাই নাকি ছবিটা দেখে আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছিলেন! একটা ছোট ছবি যে মানুষের মনে এতো বড় দাগ কাটতে পারে, সেটা শুনে খুব আনন্দ হচ্ছিলো। যখন প্রচুর কাজ করতাম তখন মাঝে মাঝে প্যানেল থেকে এরকম ফোন পেতাম, উৎসাহিত হতাম। আর বেশী আনন্দিত হবার কারণটাও অনেকে হয়তো বুঝবে!’

হুম সেই কারণটা হচ্ছে ‘মুজিব’ থেকে জ্যোতির ছিটকে পড়া।

‘বঙ্গমাতা’তে আরও অভিনয় করেছেন মুনির আহমেদ শাকিল, ফারজানা ছবি, সুহাসিনী মেঘলা টুপুর, খলিলুর রহমান কাদরী, লাবণ্য চৌধুরী, অধ্যয়ন দৃশ্য প্রমুখ।