প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন বা বিএফডিসির উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন দেখা যায়নি। তবে বর্তমানে সেখানে অত্যাধুনিক কমপ্লেক্স নির্মিত হচ্ছে। যা পূর্ণতা পেলে বদলে যাবে দেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির রূপ। বিশাল এই প্রকল্পের পেছনে প্রায় সাড়ে তিনশ’ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে।
তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি টাকার হিসাব করেন না। বরং দেশের চলচ্চিত্র যাতে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারে, শিল্পীরা যাতে ভালোভাবে কাজ করতে পারে, সেটাই তার চাওয়া।
মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২২ প্রদান শেষে সিনেমা নিয়ে অনেক কথা বলেন তিনি।
বিএফডিসি কমপ্লেক্স নির্মাণের ব্যয় প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বলেছেন, ‘টাকার অঙ্ক দিয়ে হিসাব করি না, আমাদের শিল্পীরা যাতে ভালো করে কাজ করতে পারে, সেটাই চাই। আমরা গাজীপুরে ফিল্ম সিটি প্রতিষ্ঠা করেছি। এটাও বঙ্গবন্ধু চিন্তা করেছিলেন। এটার প্রথম পর্বের কাজ শেষ হয়ে গেছে। দ্বিতীয় পর্বের কাজও হচ্ছে। সেখানে সব ধরনের শুটিং যাতে করা যায়, সেই ব্যবস্থা থাকবে। আমরা চাই দেশের অঙ্গন ছাড়িয়ে আমাদের চলচ্চিত্র বিদেশেও সমাদৃত হোক। সেই সঙ্গে শিল্পী-কুশলী সবাইকে আমি এই আহ্বান জানাই, এদিকে আরও মনোযোগ দিন। যেহেতু মানুষের জীবনে সচ্ছলতা এসেছে, তাই তারা বিনোদনের দিকে ঝুঁকছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনে করেন, ‘একটি দেশের সমাজকে চলচ্চিত্র সচেতন করতে পারে, আনন্দ দিতে পারে, সংস্কার করতে পারে, ইতিহাসকে ধারণ করতে পারে, দেশ গঠনে ভূমিকা রাখতে পারে।’
যদিও খুব একটা অবসর মেলে না। তবু মাঝে মধ্যে ছবি দেখেন বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী। তার ভাষ্য, ‘হলে যেহেতু সিনেমা দেখা হয় না, যখন বিমানে চড়ি, তখন কিন্তু বাংলাদেশের সিনেমা দেখি। কিছু দিন আগে সাউথ আফ্রিকায় যাওয়ার সময় পর পর দুইটা সিনেমা দেখলাম। মাঝে মাঝে অনেকে আমাকে পেনড্রাইভে ছবি পাঠায়, সেগুলোও দেখার চেষ্টা করি। কিন্তু সরকার চালানোর পাশাপাশি তো এত সময় পাওয়া যায় না।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর হাত দিয়ে এফডিসি প্রতিষ্ঠা হয়েছিল এবং তার হাত দিয়েই আনুষ্ঠানিকভাবে এই অঞ্চলে চলচ্চিত্রের যাত্রা হয়েছিল। তিনি জানতেন, অনুধাবন করতে পেরেছিলেন, আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতির ওপর পশ্চিমাদের হিংস্র থাবা পড়েছে। সে জন্য তিনি এফডিসি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এরপর থেকে বহু কালজয়ী চলচ্চিত্র যেমন নির্মিত হয়েছে, বহু কালজয়ী শিল্পী তৈরি হয়েছেন। চলচ্চিত্র এমন একটি মাধ্যম যেখানে সাহিত্য-শিল্পের সব শাখার সমন্বয় হয়েছে। এবারের আসরে যারা পুরস্কার পেয়েছেন, তাদের সকলকে অভিনন্দন।’
পুরস্কার প্রদান ও বক্তব্য শেষে ছিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্ব। যেখানে চিত্রনায়ক ফেরদৌস ও চিত্রনায়িকা পূর্ণিমার সঞ্চালনায় বিখ্যাত বেশ ক’টি গানের সঙ্গে মঞ্চে নেচেছেন সাদিয়া ইসলাম মৌ, নুসরাত ফারিয়া, মাহিয়া মাহি ও তমা মির্জা। এছাড়াও ছিল সাইমন সাদিক-দীঘি, আদর আজাদ-পূজা চেরী, সোহানা সাবা-গাজী নূর ও জায়েদ খান-আঁচলের দ্বৈত পরিবেশনা। এছাড়াও গান শুনিয়েছেন বালাম ও কোনাল।