যেন নীড়ভাঙা পাখি চিত্রনায়িকা নিপুণ! দুই বছর আগে চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে সঙ্গে নিয়ে নেমেছিলেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে। তাতে নিরঙ্কুশ জয় পান কাঞ্চন। তবে সাধারণ সম্পাদক পদে নিপুণের জয়-পরাজয় নিয়ে দেখা দেয় জটিলতা। যেটা পাক্কা দুই বছরেও পরিষ্কার হয়নি।
দ্বিবার্ষিক সেই কমিটির মেয়াদ ফুরিয়েছে। ঘনিয়েছে নতুন নির্বাচন। এবারও নিপুণ লড়বেন সাধারণ সম্পাদক আসনের জন্য। কিন্তু সভাপতি প্রার্থী হবেন কে? এ প্রশ্ন রীতিমতো টক অব দ্য ঢালিউড হয়ে উঠেছে। কারণ ইতোপূর্বে কাঞ্চন স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি আর নির্বাচন করবেন না। দুই বছরে নিপুণের সঙ্গে তার সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা যে সুমিষ্ট ছিল না, তা আঁচ করা যায়।
এরপর শাকিব খান ও অনন্ত জলিলকে দলে ভিড়ানোর চেষ্টা করেছেন নায়িকা। কিন্তু রাজি হননি কেউই। মাঝে গুঞ্জন ওঠে, তার সঙ্গে সভাপতি প্রার্থী হয়ে হাল ধরবেন অমিত হাসান। তবে সেই গুঞ্জনও টেকসই হয়নি। এমন অথৈ দরিয়ায় যখন সাঁতরাচ্ছিলেন তিনি; তখন তার দিকে হাত বাড়ালেন একসময়ের আলোচিত নায়ক মাহমুদ কলি। যিনি এর আগে শিল্পী সমিতির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে একাধিকবার দায়িত্ব পালন করেছিলেন। এর ফলে সঙ্গী খোঁজার দুশ্চিন্তা থেকে আপাতত মুক্তি মিলেছে নায়িকার।
রবিবার (১৭ মার্চ) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ নাম্বারে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে যান নিপুণ। এরপর বিকালে এফডিসির শহীদ মিনারেও ফুলেল শ্রদ্ধা জানান তিনি। এ সময় তার সঙ্গে দেখা যায় মাহমুদ কলিকে। তখনই গুঞ্জন ওঠে, এই নায়ককে সঙ্গে নিয়েই এবারের নির্বাচন মাঠে নামছেন নায়িকা।
এরপর এদিন সন্ধ্যায় আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেন নিপুণ। বললেন, ‘আমি সবসময় চেয়েছি, যারা আগে শিল্পী সমিতির পদগুলোতে ছিলেন, তারা যেন ফিরে আসেন। সেই ভাবনা থেকেই গত আসরে ইলিয়াস কাঞ্চন সাহেবকে নিয়ে নির্বাচন করেছি। ওনার সঙ্গে আমি দুই বছর কাজ করেছি। তো এবারও চাচ্ছিলাম এমন কাউকে আনি, যিনি সংগঠনটি সম্পর্কে জানেন, বোঝেন এবং এই সংগঠন যাদের হাত ধরে এই পর্যায়ে এসেছে। মাহমুদ কলি সাহেব তেমনই একজন। তাই আশা করছি তার সঙ্গে আমার মেলবন্ধনে ভালো কিছু হবে।’
এবারের চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে প্রধান কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন প্রযোজক খোরশেদ আলম খসরু। তিনি জানিয়েছেন, আগামী ২৭ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে এই নির্বাচন।
বলা দরকার, সত্তরের দশকে ঢাকাই চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় মাহমুদ কলির। এরপর আশির দশকে তিনি সাফল্যের সঙ্গে বহু সিনেমায় কাজ করেছিলেন। তার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত ছবি ‘মহাগ্যাঞ্জাম’। এটি ১৯৯৪ সালে প্রেক্ষাগৃহে এসেছিল। এর আগে ১৯৯১ সালে তিনি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৯৫ সালে ফের একই দায়িত্ব পান। এছাড়া ১৯৯৭ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে সংগঠনটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এই নায়ক।