কান উৎসবের ৭৭ বছরের ইতিহাসে দাফতরিক বিবেচনায় মাত্র দুবার এসেছে বাংলাদেশের নাম। একটি তারেক মাসুদের ‘মাটির ময়না’, অন্যটি আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের ‘রেহানা মরিয়ম নূর’-এর দৌলতে।
মাঝে উৎসবের অন্যতম শাখা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র সমালোচকদের সংগঠন ফিপরেসি’র বিচারক হয়েছেন ঢাকার আহমেদ মুজতবা জামাল, সাদিয়া খালিদ ঋতি ও বিধান রিবেরু। এবার দ্বিতীয়বারের মতো এই বিভাগের বিচারক হয়ে অনেকটা দেশের মুখ উজ্জ্বল করলেন এই সাংবাদিক। তাই নয়, এবার তিনি হাঁটলেন কান কর্তৃপক্ষের সূচি ধরে অফিসিয়াল লালগালিচাতেও। যেমনটা আগে এই বিচারকদের বেলায় ঘটেনি।
২২ মে রাত স্থানীয় সময় ১০টায় তিনি ফিপরেসি বিচারক হিসেবে লালগালিচায় পা মাড়ান। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন এই বিভাগের অন্য বিচারকরাও। তিনি যখন লালগালিচা মাড়াচ্ছিলেন, তখন কান কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছেন তার নাম ও পরিচয়।
বাংলাদেশ থেকে ঋতিই একমাত্র ব্যক্তি, যিনি এ বছর এই লালগালিচা সম্মান পেয়েছেন উৎসব কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে।
ঋতি লালগালিচায় পা মাড়িয়েছেন দেশের ঐতিহ্য ধরে। পরেছেন কাতান গাউন। বলছেন, ‘আমি এমনভাবে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে চেয়েছিলাম, যা একাধারে ঐতিহ্যবাহী ও আধুনিক। আমি রেড কার্পেটের জন্য কাতান গাউনটা অনেক যত্ন করে ঢাকা থেকে এনেছি। আমার গাউন ও জ্যাকেট থেকে শুরু করে গহনা, পার্স ও জুতা সবকিছুই বাংলাদেশে তৈরি। আমি চেয়েছিলে বিশ্বমঞ্চে দেশের পণ্য নিয়েই উঠতে।’
ফিপরেসি জুরি হওয়ার পাশাপাশি ঋতি এবার আরব ফিল্মসের ক্রিটিক অ্যাওয়ার্ডস জুরি বোর্ডেও যুক্ত ছিলেন বিচারক হিসেবে। ১৮ মে কানসৈকতে সেটির পুরস্কার বিতরণে তিনি অংশ নেন জামদানি শাড়ি পরে। উৎসবের সমাপনী অনুষ্ঠানের আগে ২৫ মে ফিপরেসি পুরস্কার আসরেও অংশ নেবেন ঋতি।
চিত্রনাট্যকারের ভূমিকায় ঋতিকে দেখা গিয়েছে নুরুল আলম আতিকের ওয়েব সিরিজ ‘আষাঢ়ে গল্প’তে। তার দুটো শর্ট ফিল্ম অস্কার কোয়ালিফাইং ফেস্টিভালে অংশ নিয়েছে।
এর আগে বাংলাদেশ থেকে আহমেদ মুজতবা জামাল ২০০২, ২০০৫ এবং ২০০৯ সালে কানে ফিপরেসি জুরি ছিলেন। ঋতি ২০১৯ সালে এবং ২০২২ সালে বিধান রিবেরু এই জুরির দায়িত্ব পালন করেন। তারা আইএফসিএবি (বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র সমালোচক সমিতি)-এর সদস্য হিসেবে যোগদান করেন সেই উৎসবে।
৭৭তম কান চলচ্চিত্র উৎসব ১৪ মে শুরু হয়েছে, পর্দা নামছে ২৫ মে।