সিনেমা করেও ক্রিকেটার সাকিবের অস্বীকার, বিপাকে নির্মাতা!

বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের সবচেয়ে বড় মডেল সাকিব আল হাসান সিনেমাও করেছেন! খবরটি বিস্ময়কর মনে হলেও সত্যি। তাই নয়, তার কারণেই সেই সিনেমাটি ভেস্তে যায় শুটিংয়ের মাঝপথে। আর সেটি মুক্তির আলোয় পাখা মেলতে পারেনি।

এমনই এক দুঃখবোধ শেয়ার করলেন সিনেমাটির নির্মাতা রাজিবুল হোসেন।শুটিংয়ে সহশিল্পীদের সঙ্গে সাকিবশহরের পাঁচ তরুণ-তরুণীর গল্প নিয়ে এক যুগ আগে ‘সব কিছু পেছন ফেলে’ নামের একটি সিনেমার শুটিং শুরু করেন নির্মাতা রাজিবুল হোসেন। এতে অতিথি চরিত্রে অভিনয় করেন ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান। কক্সবাজারে শুটিংয়েও অংশ নিয়েছিলেন তিনি। 

কিন্তু যেকোনোভাবে সেই খবরটি গণমাধ্যমে ফাঁস হলে অভিনয়ের বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করেন সাকিব। একই সঙ্গে বন্ধ করে দেন সিনেমার বাকি শুটিং।শুটিংয়ে সাকিবঅজানা এই ঘটনাটি সোশ্যাল হ্যান্ডেলে সম্প্রতি নিজেই প্রকাশ করন নির্মাতা। রাজিবুল হোসেন বলেন, ‘সাকিব আল হাসান শুটিং করেছেন, ক্যামেরার সামনে অভিনয় করেছেন, ক্ল্যাপস্টিক ও প্রফেশনাল রেকর্ডিংয়ের মধ্য দিয়ে আমরা দৃশ্য ধারণ সম্পন্ন করি। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তিনি সিনেমায় অভিনয় করার বিষয়টি অস্বীকার করলে পুরো প্রজেক্টটি অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে।’

নির্মাতা আরও বলেন, ‘সাকিব আল হাসানের মিথ্যাচার নির্মাতা হিসেবে আমাকে যেমন ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, তেমনি এটা ছিল একটি শিল্পভিত্তিক কাজের প্রতি তার অসম্মান। আমি চাইলে তাকে ছাড়া সিনেমাটি শেষ করতে পারতাম, কিন্তু আমি বিশ্বাস করি একটি অসম্পূর্ণ সত্য দিয়ে পূর্ণ সিনেমা নির্মাণ করা যায় না।’

শুটিং ইউনিটে সাকিবপরিচালনার পাশাপাশি সিনেমার প্রযোজকও ছিলেন রাজিবুল হোসেন। স্পন্সর করেছিল ফুজিফিল্ম বাংলাদেশ। তাদের মাধ্যমেই সাকিব এই সিনেমার সঙ্গে যুক্ত হন বলে জানান নির্মাতা।

রাজিবুল হোসেন বলেন, ‘সাকিব আল হাসান তখন ফুজিফিল্মের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর ছিলেন। ফুজির সঙ্গে সাকিবের চুক্তি ছিল বছরে সুবিধা অনুযায়ী ৮ দিন তিনি তাদের সময় দেবেন। সিনেমা নিয়ে আলোচনার একপর্যায়ে ফুজিফিল্মস আমাদের জানায়, সিনেমার জন্য একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেবে তারা, সেই সঙ্গে সাকিব আল হাসান অভিনয় করবেন সিনেমায়।’শুটিংয়ে সাকিবশুটিংয়ে অংশ নেওয়ার পরেও সাকিব আল হাসান কেন অস্বীকার করেন জানতে চাইলে নির্মাতা বলেন, ‘প্রথম লটেই আমরা তাকে নিয়ে শুটিং করি। এরপর তার অভিনয় নিয়ে একটা সংবাদমাধ্যমে খবর প্রকাশের পর তিনি বেঁকে বসেন। কী কারণে তিনি এমনটা করেছেন তা আমার জানা নেই। ফুজিফিল্ম তখন সাকিব আল হাসানের সঙ্গে বিরোধে না গিয়ে তাকে বাদ দিয়ে সিনেমা শেষ করার অনুরোধ জানায়। কিন্তু ততদিনে তার অভিনয়ের খবরটি ছড়িয়ে গেছে। পরে নৈতিক কারণেই আমি সিনেমার কাজ বন্ধ করে দিই। আমার ৬৫ লাখ টাকা ক্ষতি হয়।’

তাহলে এতদিন পর কেন এই অভিযোগ—এমন প্রশ্নের উত্তরে রাজিবুল হোসেন বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে সাকিব আল হাসান কাজটি সে সময় ঠিক করেননি। এটা সবাইকে জানানোর জন্যই এ বিষয় নিয়ে কথা বলা। এ ছাড়া অনেকেই সিনেমা বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে নানা কথা বলতো। তাদের সত্যিটা জানানো দরকার। কোনও প্রডাকশন বা পরিচালনাগত দুর্বলতায় নয়, বরং অবাঞ্ছিত ও অনৈতিক একটি ঘটনার কারণে অসমাপ্ত থেকে গেছে সিনেমাটি।’শুটিংয়ে সহশিল্পীদের সঙ্গে সাকিব