তারকা যখন ভোটার

‘প্রথম যেবার ভোট দিয়েছিলাম, সেই পরিবেশটা চাই’

তারকারাও ভোটার। সাধারণ মানুষের মতো তারাও উৎসাহ নিয়ে ৭ জানুয়ারি ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার কথা। সে ভাবনা থেকে জানতে চাওয়া, কে কোন আসনের ভোটার। এবারের নির্বাচন নিয়ে ভাবছেনই বা কী! ঠিক এমন ১০ প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড় করাতেই নানা অজুহাতে এড়িয়ে গেছেন সিংহভাগ সিংহ তারকা! যেমন জয়া আহসান বলেছেন, তিনি এসব বিষয়ে কথা বলতে নারাজ! মিশা সওদাগর বলেছেন, নির্বাচনের সময় তিনি থাকবেন যুক্তরাষ্ট্রে। আবার পূর্ণিমা এগিয়ে একধাপ! বললেন, তার নাকি ভোটার হওয়ার বয়সই হয়নি! হাবিব ওয়াহিদের ভাষ্য, সুরের ভেলায় ভেসে বেড়ান বলে নির্বাচনের অভিজ্ঞতা তার নেই! তবে সাত-পাঁচ না ভেবে যে ক’জন রাজনৈতিক সচেতন তারকা আগ্রহ দেখিয়েছেন এই ভোটের গল্পে, তাদের মধ্যে অন্যতম অভিনেত্রী মৌসুমী হামিদ। পড়ুন তারসঙ্গে কথোপকথন-

মৌসুমী হামিদএক. দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কেমন? 

মৌসুমী হামিদ: ভালো। সব প্রার্থীরা সমানে প্রচারণা চালাচ্ছেন। দেখতে ভালোই লাগছে। এটাই এখন প্রত্যাশা, নির্বাচনটা সুষ্ঠুভাবে শেষ হোক।

দুই. কোন আসনের ভোটার আপনি?

মৌসুমী হামিদ: সাতক্ষীরা ১, তালা-কলারোয়া ইউনিয়নের ভোটার।

মৌসুমী হামিদতিন. ভোট দেবেন?

মৌসুমী হামিদ: হুম, দেবো। ভোট দেওয়ার জন্যই ৬, ৭ ও ৮ জানুয়ারির সকল কাজ স্থগিত রেখেছি। গ্রামে যাবো ভোট দিতে।

চার. এর আগেও ভোট দিয়েছেন, অভিজ্ঞতা কেমন?

মৌসুমী হামিদ: প্রথম ভোট দিয়েছিলাম ২০০৮ সালে, সম্ভবত যেবার লম্বা বিরতির পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। এবং প্রথম ভোটার হিসেবে ভোটটা আমি নৌকাতেই দিয়েছি। মজা করে বলা যেতে পারে, আমার ভোটেই সেবার আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে! ফলে ভোটের অভিজ্ঞতা আমার ভালো।

মৌসুমী হামিদপাঁচ. ভোটার হিসেবে কেন্দ্রে কেমন পরিবেশ চান এবার? 

মৌসুমী হামিদ: অনেস্টলি বলি, প্রথম যেবার (২০০৮) ভোট দিয়েছিলাম, সেই পরিবেশটা চাই। যেটা মাঝে আমি পাইনি। পরিবেশটা এমন হবে- এলাকার সবাই দলে দলে ভোট দিতে কেন্দ্রে যাবেন। আমরা সবাই লাইন ধরে দাঁড়িয়ে থাকবো। কোনও ঝামেলা নেই। একে একে আনন্দ নিয়ে সবাই ভোট দেবো। আনন্দ আর চাপা উত্তেজনা চারপাশে বিরাজ করবে। কে জিতবে কে জিতবে টেনশন। এটা অন্যরকম আনন্দ। সেই আনন্দটা ফিরে পেতে চাই আবার।

মৌসুমী হামিদছয়. আপনার পছন্দের প্রার্থীর প্রতি প্রত্যাশা কী?

মৌসুমী হামিদ: প্রত্যাশা তো অনেক। যেমন যে অঞ্চলের প্রার্থী তার প্রতি সেখানকার মানুষদের অনেক আশা-ভরসা থাকে। বেশিরভাগের আসলে মূল প্রত্যাশা খুবই অল্প। সবাই চায় মানুষের বিপদে-আপদে যেন তার জনপ্রতিনিধি পাশে দাঁড়ান। কিছু না করতে পারলেও যেন মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। আর আমার চাহিদাও একই, আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারটুকু যেন সমুন্নত রাখেন। 

মৌসুমী হামিদসাত. আপনার এলাকায় এবার কয়জন নির্বাচন করছেন। তাদের চেনেন?

মৌসুমী হামিদ: চিনি। কয়েকজনকে চিনি। এর বেশি কিছু বলবো না।

মৌসুমী হামিদআট. এবার বেশ ক’কজন শোবিজ তারকা প্রার্থী হয়েছেন, তাদের নিয়ে কিছু বলার আছে? 

মৌসুমী হামিদ: আছে। আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে তো আসলে অনেক রকমের জটিলতা থাকে। যেগুলো সমাধানের জন্য অনেক সময় হতাশায় পড়ে যাই। যোগ্য লোক পাই না। ফলে আমাদের মধ্য থেকে যখন কেউ সংসদে যাবেন বা যাওয়ার পথে হাঁটবেন; সেটা আমাদের জন্য সুখবর বটে। তবে এটাও বলতে চাই, সংসদে আমার ভাই বা বোন বা কলিগ আছে বলেই নুন থেকে চুন খসলে পরে যেন দৌড়ে না যাই সংসদ ভবনে। বলছি, এটাকে যেন আমরা মিস ইউজ না করি। 

মৌসুমী হামিদনয়. রাজনীতি নিয়ে আপনার কোনও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা আছে কি? 

মৌসুমী হামিদ: এটা আসলে ভবিষ্যৎই বলে দেবে। তবে আমার মনে হয়, ভেতরে রাজনীতির একটা সুপ্ত বাসনা আছে। কারণ, আমি লিডারশিপে বিশ্বাস করি। সেটা যেমন অন্য লিডারের নেতৃত্বে কাজ করতে পছন্দ করি, তেমনি নিজেও যখনই নেতৃত্বের সুযোগ পেয়েছি সেটা আনন্দ নিয়ে সততার সঙ্গে করার চেষ্টা করেছি। দেখা যাক।

মৌসুমী হামিদদশ. একজন অভিনেত্রী হিসেবে সাধারণ ভোটারদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন…

মৌসুমী হামিদ: ভোটারদের প্রতি আমার একটাই অনুরোধ, প্রার্থী বাছাইয়ে অন্যের কথায় প্ররোচিত হবেন না প্লিজ। এটা আপনার গণতান্ত্রিক অধিকার। ফলে বিচার বিবেচনা করে যে মানুষটাকে আপনার নেতা হিসেবে পছন্দ হবে, তাকেই ভোটটা দেবেন। এবং অবশ্যই ভোট দিতে যাবেন। মনে রাখবেন, আপনার একটা ভোট যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে বড় ভূমিকা রাখে।মৌসুমী হামিদ