ফ্রান্সের নিস সৈকতে মুসলিম নারীকে বুরকিনি খুলতে বাধ্য করলো পুলিশ

নিস সৈকতে শুয়ে ছিলেন এক নারী। তার পরিহিত পোশাকই পুলিশের কাছে হয়ে ওঠে তার একমাত্র পরিচয়। ওই নারী বুরকিনি পরেছিলেন। নিসে বুরকিনি নিষিদ্ধের ‘বিতর্কিত’ ঘোষণা থাকায় পুলিশ ওই নারীকে বুরকিনি খুলতে বাধ্য করেছে। এ সংক্রান্ত কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান।

বুরকিনি খুলতে বাধ্য করে পুলিশ

উল্লেখ্য, মুসলিম নারীদের জন্য মাথা ও হাত-পা ঢাকা সাঁতারের পোশাক বুরকিনি নামে পরিচিত। সম্প্রতি ফ্রান্সে কয়েকটি জঙ্গি হামলার পর বোরকা ও বুরকিনির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে দেশটির কয়েকটি অঞ্চলে। গত সপ্তাহেই নিসে বুরকিনির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায় ৩৪ বছর বয়সী ওই নারী নিসের সৈকতে প্রমেনাদে দেজ অ্যাংলেইসে বিশ্রাম নিচ্ছিলেন। চলতি বছরের ১৪ জুলাই বাস্তিল দিবসে এই স্থানেই ট্রাক হামলা চালানো হয়। এতে ৮৬ জন নিহত হন।

শুয়ে ছিলেন ওই নারী

আর্মড পুলিশ তাকে ঘিরে ধরে স্কার্ফ খুলতে বাধ্য করে। ওই নারীর পরনে ছিল নীল স্কার্ফ, লেগিংস এবং টিউনিক।

তাকে পুলিশ জরিমানাও করেছে। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, তার জরিমানার রশিদে লেখা রয়েছে, তিনি সেক্যুলারিজম এবং ভালো নৈতিক বোধসম্পন্ন পোশাক পরেননি।

ওই নারী কেবল তার প্রথম নাম ‘সিয়াম’ বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমি আমার পরিবার নিয়ে সৈকতে বসেছিলাম। আমি একটি গতানুগতিক স্কার্ফ পরেছিলাম। সাঁতার কাটার কোনও ইচ্ছাই আমার ছিল না।’

বুরকিনি খুলতে বাধ্য করে পুলিশ

ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ম্যাথিলডে কাজিন বলেন, “সবচেয়ে কষ্টের বিষয় ছিল যে, সেখানকার লোকজন ‘বাড়ি যাও’ বলে চিৎকার করছিলেন। কেউ কেউ পুলিশকে কড়তালি দিচ্ছিলেন। আর তার মেয়ে কাঁদছিল।”

বিশ্লেষকদের মতে, এমন নিষেধাজ্ঞা ফ্রান্সের গণতান্ত্রিক ঐতিহ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

ওই মুসলিম নারীকে জরিমানা করা হয়

গত সপ্তাহে নিসে বোরকা ও বুরকিনির ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে স্থানীয় একটি নিম্ন আদালত। এ নিয়ে মোট ১৫টি শহরে এই নিষেধাজ্ঞা জারি হলো। নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ করে ফ্রান্সের সর্বোচ্চ প্রশাসনিক আদালতে আপিল করেছে হিউম্যান রাইটস লীগ নামে একটি এনজিও। সর্বোচ্চ আদালতের রায়েই নির্ধারিত হবে ওই ‘বিতর্কিত’ নিষেধাজ্ঞার ভবিষ্যৎ।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান।

/এসএ/বিএ/