ইতালিতে ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৯০

ইতালির ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৯০ জনে দাঁড়িয়েছে। নিহতদের স্মরণে শনিবার দেশজুড়ে রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হয়েছে। এদিন সরাদেশে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখা হয়।

শনিবার সকালে ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত আমাত্রিচে শহর পরিদর্শন করেন প্রেসিডেন্ট সেরজো মাত্তারেল্লা।

২৪ আগস্ট ২০১৬ বুধবার স্থানীয় সময় ভোর সাড়ে ৩টা ৩৬ মিনিটে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে ইতালির বিভিন্ন শহর। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে, ৬.২ মাত্রার ওই ভূমিকম্পটির উপকেন্দ্র ছিল রোমের উত্তর-পূর্বের রেইতি নামক একটি স্থান। এর উৎপত্তিস্থল ছিল ভূমির ১০ কিলোমিটার গভীরে।

৬.২ মাত্রার ভূমিকম্পের পর থেকে থেমে থেমে অন্তত এক হাজার ৫০ বার আফটার শক অনুভূত হয়েছে। যা উদ্ধারকাজকে ব্যাহত করেছে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা।

ভূমিকম্পের পর তিনদিন পেরিয়ে যাওয়ায় ধ্বংসস্তূপ থেকে আর কাউকে জীবিত উদ্ধারের আশা নেই বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে এখনও ধ্বংসস্তূপে কেউ জীবিত রয়েছেন কিনা, সেজন্য তৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা। ইতোমধ্যে ভূমিকম্পে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। পাঁচ হাজারেরও বেশি উদ্ধারকারী অভিযানে অংশ নিয়েছেন।

এ সম্পর্কে ধ্বংসস্তূপের শহর আমাত্রিসের মেয়র সার্জিও পিরোজ্জি বলেন, ‘এই ধ্বংসস্তূপ থেকে যদি এখন আমাদের কোনও বন্ধুকে জীবিত উদ্ধার করা হয়, তাহলে তা হবে এক অলৌকিক ঘটনা। আমরা এখনও উদ্ধার কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, কারণ অনেকেই নিখোঁজ রয়েছেন।’

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, নিহতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৮১ জনের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ২১ জন শিশু। সবচেয়ে কমবয়সী নিহতের বয়স সাড়ে পাঁচ মাস আর সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ নিহতের বয়স ৯৩ বছর। নাগরিক সুরক্ষা বিভাগ জানিয়েছে, ৩৮৮ জন আহত ব্যক্তিকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

ভূমিকম্পে কয়েকজন বিদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে উদ্ধারকারীরা জানিয়েছেন। এর মধ্যে ছয়জন রোমানীয়, এক স্পেনীয় নারী, একজন কানাডীয়, একজন আলবেনীয় এবং তিন ব্রিটিশ নাগরিকের বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনজি ভূমিকম্পে জরুরি ত্রাণ কাজের জন্য জন্য রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ৫০ মিলিয়ন ইউরো পাঠিয়েছেন। তিনি জাতীয় ঐক্যের ডাকও দিয়েছেন।

আমাত্রিস ছাড়াও আকুমোলি, পোস্তা ও আরকোয়াতা দেল ত্রন্তো শহরেও অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্পের পর আকুমোলি প্রায় ২০ সেন্টমিটার দেবে গেছে।

আমাত্রিসের প্রায় প্রতিটা বাড়ি ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আমাত্রিসের মেয়র পিরোজ্জি তরুণদের শহর ত্যাগ না করার অনুরোধ করে বলেছেন, ‘আমাত্রিস পুরোপুরি ধসে পড়েছে। তবে আমি নিশ্চিত আমাত্রিস আবার উঠে দাঁড়াবে।’

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, রয়টার্স।

/এমপি/