বারামুল্লা মডেল

যেভাবে ভারতের হামলার জবাব দেবে পাকিস্তান

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের বারামুল্লা শহরে সম্প্রতি ভারতের সেনাবাহিনী ও বিএসএফের দুটি ক্যাম্পে হামলা চালানো হয়। এতে এক বিএসএফ সদস্যসহ অন্তত তিনজনের প্রাণহানি ঘটে। ওই হামলার কয়েক ঘণ্টা পর গুরুদাসপুর সীমান্তে আট সন্দেহভাজন জঙ্গির গতিবিধি শনাক্তের দাবি করে ভারত। দেশটির সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হচ্ছে, পাকিস্তান কিভাবে ভারতের ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর পাল্টা জবাব দেবে তার একটা ইঙ্গিত।

এসব প্রতিবেদনে আশঙ্কা প্রকাশ করে বলা হচ্ছে, ভারতকে পাল্টা জবাব দিতে ইসলামাবাদ শুধু প্রচলিত সামরিক শক্তিতেই ভর করবে না। এর পাশাপাশি তারা কাশ্মিরসহ অন্যান্য স্থানে এ ধরনের হামলাও চালিয়ে যাবে।

সাধারণভাবে মনে করা হচ্ছে, ২৮ সেপ্টেম্বর দিবাগত মধ্যরাতে যেভাবে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’ পরিচালনা করেছে ভারত; বাস্তবে পাকিস্তানের দিক থেকে সেভাবে পাল্টা আঘাত আসেনি। বলতে গেলে ভারতের বিরুদ্ধে তেমন কোনও সামরিক পদক্ষেপই নেয়নি ইসলামাবাদ। অর্থাৎ, এক্ষেত্রে কৌশলী ভূমিকা নিচ্ছে পাকিস্তান। হামলা-পাল্টা হামলায় না গিয়ে কাশ্মির ইস্যুকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জোরালোভাবে তুলে ধরতে চাইছে দেশটি। এ লক্ষ্যে বারামুল্লা’য় ভারতীয় সেনাবাহিনী ও বিএসএফের ক্যাম্পে হামলার আদলে আরও হামলা চালানোর চেষ্টা করবে ইসলামাবাদ। এ ধরনের প্রতিটি হামলার পরই তা সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম হবে। ঘুরেফিরে আলোচনায় আসবে কাশ্মির প্রসঙ্গ। আর পাকিস্তান এটাই চাইছে যে, তাদের ভাষায় কাশ্মিরে ভারতীয় বাহিনীর ‘নিপীড়ন’-এর বিষয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করা।

ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরে মোতায়েনকৃত নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্য

পাকিস্তানের মাটিতে ভারতের সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের দাবির পর সংগত কারণেই এ অঞ্চলের প্রতি বাড়তি দৃষ্টি দেয় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। কিন্তু পাকিস্তান তাদের এ বার্তা দিতে চায় যে, তার দেশের সেনারা ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেনি। বরং ভারতীয় বাহিনীই আগ্রাসী ভূমিকা পালন করছে। তবে ভারতীয় বাহিনী  পাকিস্তানের মাটিতে প্রবেশ করতে পারেনি। এমনটাই প্রমাণে তাই কৌশলী হচ্ছে ইসলামাবাদ। মাঠের লড়াই এড়িয়েই ভারতকে কুপোকাত করার বিকল্প খুঁজছে দেশটি।

পাকিস্তান অস্বীকার করলেও ভারতের পক্ষ থেকে জোরালোভাবে দাবি করা হচ্ছে, তারা পাকিস্তানের অভ্যন্তরেই এ অভিযান পরিচালনা করেছে। তবে দাবি-পাল্টা দাবি যাই থাকুক না কেন ২৮ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে প্রথম আক্রমণটা ভারতই চালিয়েছে। এখন সেটার উত্তর পাকিস্তানের দিক থেকে কিভাবে আসে সেটাই দেখার বিষয়। তবে দেশটি যদি সামরিক হামলার বদলে ভারতের অভ্যন্তরে দীর্ঘমেয়াদী বিশৃঙ্খলা বা অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় তবে ভারতকেও সেভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে। আর এটা যদি পাকিস্তানের কৌশল হয় সেটা অন্তত কারও জন্যই সুসংবাদ বয়ে আনবে না। সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া, টিএনএন।

/এমপি/