এশিয়াজুড়ে জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার

জিকা ভাইরাসবাহী মশা নিধনের চেষ্টা করছে সিঙ্গাপুর সরকারএশিয়াজুড়ে জিকা ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়াতে থাকার আশঙ্কা অনেক বেশি বলে সতর্ক করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। সিঙ্গাপুরে শত শত জিকা আক্রান্ত শনাক্ত এবং থাইল্যান্ডে জিকাজনিত কারণে দুই মাইক্রোসেফালি আক্রান্ত শিশুর জন্মের প্রেক্ষাপটে এমন সতর্কতা দেওয়া হলো। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি খবরটি নিশ্চিত করেছে।
উল্লেখ্য, এডিস প্রজাতির মশা থেকে জিকা ভাইরাস মানুষের দেহে ছড়িয়ে থাকে। জ্বর, জয়েন্ট পেইনসহ ছোটখাটো কিছু শারীরিক অসুস্থতা দেখা দেয় এ ভাইরাসের কারণে। আবার তা এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে সেরেও যায়। তবে বিপত্তি তৈরি হয় গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে। গত বছর ব্রাজিলে মাইক্রোসেফালি বা অস্বাভাবিক আকৃতির মাথা নিয়ে শত শত শিশুর জন্ম হয়। মশাবাহিত ভাইরাস জিকাকে এ ধরণের শিশু জন্মানোর কারণ বলে সে সময়ই সন্দেহ করা হচ্ছিল। এ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা নানা গবেষণা শুরু করেন। গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্রের রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (সিডিসি) এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে,জিকা ভাইরাস থেকে যে মাইক্রোসেফালি হতে পারে সে ব্যাপারে তারা নিশ্চিত। এর আগে যৌন মিলনের মাধ্যমে জিকা ভাইরাস ছড়ানোর কথাও নিশ্চিত করেছিলেন তারা।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মশাবাহিত জিকা ভাইরাস এরইমধ্যে ৭০টি শনাক্ত হয়েছে। এরমধ্যে অন্তত ১৯ দেশ এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের। ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলাতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক বার্ষিক আঞ্চলিক বৈঠকে সংস্থার পরিচালক মার্গারেট চ্যান বলেন, বিশেষজ্ঞরা জিকা ভাইরাস মোকাবেলার উপায় বের করার জন্য এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।  তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিজ্ঞানীরা এখনও অনেক জটিল প্রশ্নের সমাধান খুঁজে পাননি।’
উল্লেখ্য, জিকা ভাইরাস সর্বপ্রথম ১৯৪৭ সালে উগান্ডায় রেসাস ম্যাকাক নামের বানরের দেহে পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ১৯৫২ সালে উগান্ডা ও তানজানিয়াতে মানবদেহে প্রথমবারের মতো ভাইরাসটি শনাক্ত করা হয়। এডিস প্রজাতির মশা থেকে জিকা ভাইরাস মানুষের দেহে ছড়িয়ে থাকে। সর্বশেষ ২০১৫ সালে ব্রাজিলসহ ল্যাটিন আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ব্যাপক আকারে জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত জিকা ভাইরাস কেবল লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে থেমে থাকেনি, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জিকা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হচ্ছে। গত মে মাসে প্রথমবারের মতো সিঙ্গাপুরে জিকা আক্রান্ত এক ব্যক্তি শনাক্ত হন। পরে জানা যায় ওই ব্যক্তি আক্রান্ত হওয়ার কিছুদিন আগে জিকাকবলিত ব্রাজিল সফর করেছেন। এরপর সিঙ্গাপুরে নতুন নতুন জিকা আক্রান্ত শনাক্ত হওয়ার পাশাপাশি মালয়েশিয়াসহ এশিয়ার আরও কয়েকটি দেশে শনাক্ত হয় জিকা। এমন পরিস্থিতিতে এশিয়াজুড়ে জিকা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা জানালো বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। সূত্র: বিবিসি

/এফইউ/