বাবার শেষ আলিঙ্গনে বেঁচে গেলো তিন বছরের শিশু

একটি সিমেন্টের তৈরি পিলারের নিচ থেকে বাবা-মেয়েকে উদ্ধার করা হয়চীনের পূর্বাঞ্চলে চারটি ছয়তলাবিশিষ্ট ভবন ধসের ১২ ঘণ্টা পর ধ্বংসস্তূপ থেকে তিন বছরের এক শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে। শিশুটিকে বুকে জড়িয়ে রেখেছিলেন বাবা। বাবা মরে গেলেও তার শেষ আলিঙ্গনের কারণে প্রাণে বেঁচে যায় মেয়েটি। মঙ্গলবার চীনা সংবাদমাধ্যম সিসিটিভির বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি খবরটি নিশ্চিত করেছে।
সোমবার (১০ অক্টোবর) চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজৌতে চারটি ভবন ধসে পড়ে। ১৯৭০ এর দশকে গ্রামবাসী ভবনগুলো নির্মাণ করেছিলেন এবং সেগুলোর অবস্থা খুব নাজুক ছিল। ভাড়ার টাকা সস্তা হওয়ার কারণে সেখানে সাধারণত অভিবাসী শ্রমিকরাই বসবাস করতেন। ভবন ধসে হতাহতদের বেশিরভাগই শ্রমিক।
ভবন ধসের ১২ ঘণ্টা পর একটি সিমেন্টের স্তম্ভের নিচ থেকে উদ্ধার হয় ২৬ বছর বয়সী এক জুতা কারখানা শ্রমিকের মরদেহ। নিজের শরীরের আড়ালে তিন বছর বয়সী মেয়ে উ নিংজিকে ঢেকে রেখেছিলেন তিনি। আর তাতেই প্রাণে বেঁচে যায় মেয়েটি। আর আলিঙ্গনাবদ্ধ বাবা-মেয়ের অল্প কাছ থেকেই উদ্ধার হয় উ-এর মায়ের মরদেহ।
চায়না ইয়ুথ ডেইলিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এক উদ্ধারকর্মী বলেন, ‘বাবার চেষ্টাতেই শিশুটি বেঁচে আছে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বাবা তার নিজের রক্ত-মাংস বিসর্জন দিয়ে মেয়েকে সুরক্ষার চেষ্টা চালিয়ে গেছেন।’
চীনের ভবন ধসের পর উদ্ধার তৎপরতার ছবি
এদিকে মঙ্গলবার উদ্ধার তৎপরতা সমাপ্তির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এক সংবাদ সম্মেলনে লুচেং এর স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে ওই ভবন ধসে ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আর তিন বছর বয়সী উ ছাড়াও আরও ৫ জন জীবিত উদ্ধার হয়েছে।

ভবন ধসের কারণ জানতে এখনও তদন্ত চলছে। তবে, ভারি বৃষ্টির কারণে নিম্ন মানের ভবনগুলো ধসে পড়তে পারে বলে প্রাথমিক তদন্তে উল্লেখ করা হয়েছে। ১৯৭০ সালে নির্মিত হওয়া একই ধরনের অন্য বাড়িগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনে বেশ কয়েকটি ভবন ধসের ঘটনা ঘটেছে। গত মে মাসে গুইঝৌ প্রদেশে একটি আবাসিক ভবন ধসে পড়ে ১৬ জনের মৃত্যু হয়। সূত্র: এএফপি, এনডিটিভি

/এফইউ/