পাকিস্তানে রাজপথ হয়েছে বাংলাদেশকে লুট করে: খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ খাত্তাকবাংলাদেশকে শোষণ করে তাকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন পাকিস্তানি রাজনীতিবিদরা—বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এমন বক্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী পারভেজ খাত্তাক। তিনি বলেন, ইসলামাবাদের রাজপথ নির্মাণ করা হয়েছে চট্টগ্রামের পাটচাষ থেকে আসা রাজস্ব থেকে। শনিবার হরিপুরের ঘাজিতে এক জনসমাবেশে তিনি এসব বলেন।

পারভেজ খাত্তাক বলেন, ‘শেখ মুজিব যথার্থই বলেছেন, পশ্চিম পাকিস্তানের রাজনীতিবিদরা বাঙালিদের লুণ্ঠন করেছেন, শোষণ করেছেন। বর্তমানে বাংলাদেশের দ্রুত উন্নতি হচ্ছে, কারণ দেশটিতে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ এখন অল্প কিছু উন্নয়নশীল রাষ্ট্রের মধ্যে একটি।’

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “রাজনীতিবিদরা দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রকে ব্যাপকভাবে আহত করেছেন। তারা সরকারি বিভাগের মাধ্যমে জনকল্যাণমূলক কাজ করতে গিয়ে সেখান থেকে ‘লভ্যাংশ’ আত্মসাৎ করেছেন।”

তিনি বলেন, ‘আমাদের শত্রু রাষ্ট্র ভারতও গত ৭০ বছরে এতখানি ক্ষতি করতে সমর্থ হয়নি, যতটা ক্ষতি পাকিস্তানি রাজনীতিবিদরা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে করেছেন।’ 

দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন-এ প্রকাশিত খবরখাত্তাক বলেন, জনমুখী ও প্রকৃত উন্নয়নের মূল চাবিকাঠি হলো স্বচ্ছতা, সুশাসন, সৎ নেতৃত্ব এবং দুর্নীতিদমন। এ জন্য ‘তদবিরের সংস্কৃতি’ বিলুপ্ত করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, ‘এএনপি (আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি) সরকার সড়ক নির্মাণের টেন্ডার বিক্রি করছেন ১০ শতাংশ কমিশনে। তারা পুলিশের চাকরি বিক্রি করছেন। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও রাজস্ব খাতেও চলছে দুর্নীতি।’ তিনি বলেন, ‘তবে পিটিআইকে (পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ) ক্ষমতায় আনা হয় পরিবর্তন আনার উদ্দেশ্যে, তিন বছরের মধ্যে তারা ঈপ্সিত সাফল্য এনে দিয়েছে।’ 

তার সরকারের ‘রাইট টু সার্ভিস’ আইনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সরকারি বিভাগ থেকে ‘তদবিরের সংস্কৃতি’ বিলুপ্ত করে দুর্নীতি দমন করতেই এই আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে জনগণের সহযোগিতা অত্যন্ত প্রয়োজন। তারা যদি দুর্নীতি শনাক্ত করতে ও দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে প্রমাণ হাজির করতে সরকারকে সহযোগিতা করে, তবেই তা সম্ভব।”

তিনি জানান, পিটিআই সরকার ৪০ হাজার নতুন শিক্ষক নিয়োগ দিয়েছেন, এ ছাড়াও অনেক নতুন ডাক্তার ও নার্স নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের উন্নতি করতে এই সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। 

তিনি আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলেন, ‘পিটিআই আবারও ক্ষমতায় যাবে এবং জনগণের সম্পূর্ণ সমর্থনও পাবে। কেননা, পাকিস্তানের ৭০ বছরের ইতিহাসে আর কোনও সরকার এমনভাবে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেনি। 

তবে পিটিআই সেন্ট্রাল মিডিয়া বিভাগের ইফতেখার দুররানির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর শেখ মুজিব সম্পর্কে মন্তব্য করার বিষয়টি অস্বীকার করেন।

সূত্র: দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন

/ইউআর/

আরও পড়ুন: 

জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে হত্যার গুজব