সড়কপথে জরুরি বিমান অবতরণের প্রস্তুতি ভারতের, ২২টি এলাকা চিহ্নিত

রোড রানওয়েদেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন জাতীয় সড়কের ওপর জরুরি বিমান অবতরণের উপযোগী রানওয়ে নির্মাণ করার পরিকল্পনা করছে ভারত। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এরইমধ্যে বিভিন্ন জাতীয় সড়কে অন্তত ২২টি জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো খবরটি নিশ্চিত করেছে।
সড়ক পরিবহন মন্ত্রী নিতিন গাদকারি ভারতীয় সংবাদমাধ্যম পিটিআই-কে জানান, প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে হাইওয়ে এয়ারস্ট্রিপ তৈরির প্রস্তাব এসেছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় চায়, জাতীয় সড়কগুলির কিছু কিছু অংশকে এমন ভাবে তৈরি করা হোক, যাতে প্রয়োজন অনুসারে সেগুলিকে বিমানঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করা যায়।’
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারের প্রতিবেদনে বলা হয়, হাইওয়ের যে অংশকে এয়ারস্ট্রিপ হিসেবে ব্যবহার করা হয়, সেই অংশকে একটু বিশেষ ভাবে তৈরি করতে হয়। সেই অংশে অ্যাসফল্টের আস্তরণ অন্যান্য অংশের চেয়ে পুরু হয়। তলায় কংক্রিটের ভিত থাকে। যে কোনও সময় যাতে ওই সব রানওয়েতে যুদ্ধবিমান অবতরণ করানো যায়, তার জন্য সিগন্যালিং এবং এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোলের পরিকাঠামোও তৈরি রাখা হয়। দেশের যে অংশে বিমানঘাঁটি নেই, যুদ্ধের সময় সেইসব এলাকা থেকেও যাতে বিমানবাহিনীর সদস্যরা কাজ চালাতে পারে, তার জন্যই এই ধরনের পরিকাঠামো তৈরি করা হয়।
হাইওয়ে এয়ারস্ট্রিপ তৈরি করার জন্য সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে এরইমধ্যে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে বলে সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে আনন্দবাজার। গাদকারি জানিয়েছেন, তার মন্ত্রণালয় খুব শিগগিরই প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়কে একটি বৈঠকে ডাকতে চলেছে। দেশের ঠিক কোন কোন অংশে হাইওয়ে এয়ারস্ট্রিপ তৈরি করা হবে, ওই বৈঠকেই তা চূড়ান্ত করা হবে।

রাজস্থানে জাতীয় সড়কের ওপর এরকম একটি এয়ারস্ট্রিপ আগে থেকেই রয়েছে। ২০১৫ সালে এ এয়ারস্ট্রিপটি নির্শিত হয়। প্রয়োজন পড়লেই ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণে এনে সেখানে যুদ্ধবিমান নামানো সম্ভব। উত্তরপ্রদেশের মথুরার কাছে যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতেও গত বছর পরীক্ষামূলক ভাবে যুদ্ধবিমান নামানো হয়েছে। ভারতীয় বিমানবাহিনীর হাতে থাকা অন্যতম সেরা যুদ্ধবিমান মিরাজ-২০০০ নামানো হয়েছিল যমুনা এক্সপ্রেসওয়েতে। উড়ান বা অবতরণ, কোনও ক্ষেত্রেই যমুনা এক্সপ্রেসওয়েকে পুরোদস্তুর রানওয়ের মতো ব্যবহার করতে মিরাজ-২০০০ যুদ্ধবিমানের সমস্যা হয়নি।

অন্যদিকে পাকিস্তানে ২০০০ সাল থেকেই দুটি মোটরওয়েতে জরুরি অবতরণের জন্য একইধরনের দুটি রানওয়ে রয়েছে।

/এফইউ/