অ্যাসাঞ্জকে জীবিত প্রমাণে যা করছে উইকিলিকস

Untitled-2

উইকিলিকসের টুইটারে রহস্যময় তিনটি টুইট এবং ইকুয়েডর কতৃক ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার পর থেকেই ডালপালা মেলছে অ্যাসাঞ্জের মৃত্যুর গুজব। সেই থেকে এখন পর্যন্ত সরাসরি কোনও ভিডিও কিংবা অডিওতে দেখা যায়নি তাকে। রহস্যময় টুইট ও ইন্টারনেট নিয়ন্ত্রণের খবরের সঙ্গে সঙ্গেই তাই ছড়িয়ে পড়া সেই গুজব যে নিছকই গুজব; উইকিলিকস, অ্যাসাঞ্জ নিজে কিংবা তার কোনও প্রতিনিধি এখনও তা প্রমাণে সমর্থ হননি।

তবে সোমবার নিজেদের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্টে বিবৃতি দিয়ে অ্যাসাঞ্জের অবস্থা জানায় বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সরকারের জনবিরোধী ভূমিকা উন্মোচনকারী ওই বিকল্প সংবাদমাধ্যম। এতেও বিশ্বব্যপী ছড়িয়ে পড়া গুজবের নিরসন হবে কিনা সেই প্রশ্নের মধ্যেই দুনিয়াব্যপী ছড়িয়ে থাকো প্রায় ৪০ লাখ পাঠকের কাছে অ্যাসাঞ্জকে জীবিত প্রমাণের চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে উইকিলিকস। এ নিয়ে এক জরিপের ব্যবস্থা করেছে তারা।

উইকিলিকস তাদের টুইটার একাউন্ট থেকে দেওয়া এক পোস্টে এর ভক্তদের কাছে একটি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছে। আয়োজন করেছে এক জরিপের। ওই জরিপের জন্য দেওয়া পোস্টে তারা বলছে, ‘হাজার হাজার মানুষ অ্যাসাঞ্জের জীবিত থাকার প্রমাণ চাইছেন। এটা অযৌক্তিক নয় কেননা তিনিই উইকিলিকসের সবথেকে পরিচিত ব্যক্তিত্ব।‘ এরপর পাঠকের প্রতি প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হয়েছে, কোনটাকে বেশি পছন্দ করবেন তারা। ছবি, ভিডিও, আইনজীবীর বিবৃতি নাকি দূতাবাসের জানালা দিয়ে তাকে দেখা ?


গত ১৭ অক্টোবর সোমবার উইকিলিকসের অফিসিয়াল টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে জানানো হয়, লন্ডনে ইকুয়েডর দূতাবাসে অ্যাসাঞ্জের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এক টুইট বার্তায় বলা হয়, ‘সরকারের পক্ষ থেকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অ্যাসাঞ্জের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। আমারা বিকল্প পরিকল্পনা শুরু করেছি।’
ওই টুইট বার্তার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অ্যাসাঞ্জের বিষয়ে বিভিন্ন গুজব ছড়াতে থাকে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের গোপন তথ্য তথ্য ফাঁস আটকাতে তাকে হত্যা করা হয়েছে বলেও দাবি করা হতে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
উইকিলিকসের তরফ থেকেও ইকুয়েডর কর্তৃক অ্যাসাঞ্জের ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত করার ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ধন রয়েছে বলে দাবি করা হয়। তবে ঘটনার একদিন পর (১৮ অক্টোবর) ইকুয়েডর কর্তৃপক্ষ অ্যাসাঞ্জের ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার খবরটি নিশ্চিত করে এক বিবৃতি দেয়। ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার কারণ হিসেবে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ‘সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে মার্কিন নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারে সক্ষম এমন কিছু মূল্যবান নথি ফাঁস করেছে উইকিলিকস’। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতিকে শ্রদ্ধা করে ইকুয়েডর’। তবে অ্যাসাঞ্জকে ইকুয়েডরে দেওয়া আশ্রয় বহাল থাকবে এবং তিনি নিরাপদ জায়গায় না পৌঁছানো পর্যন্ত তার জীবন ও শরীরকে অক্ষত রাখা হবে বলেও আশ্বস্ত করে কর্তৃপক্ষ।

তারপরও অ্যাসাঞ্জের মৃত্যুর গুজব অব্যাহত থাকে। এই বাস্তবতায় এ অবস্থায় অনেকেই অ্যাসাঞ্জের অবস্থা জানতে চেয়েছেন জানিয়ে রবিবার উইকিলিকস ঘোষণা দিয়েছিল সোমবার তারা আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেবে। সেই বিবৃতিতে অ্যাসাঞ্জের জীবিত থাকার তথ্যের পাশাপাশি বলা হয়েছে, বিভিন্ন মিডিয়া গোষ্ঠী বা রাষ্ট্রের অপপ্রচারের মুখে কিভাবে অ্যাসাঞ্জের মানবাধিকার সর্বোত্তম উপায়ে রক্ষা করা যায় তা ইকুয়েডর সরকারের দায়িত্ব।

 উইকিলিকসের সম্পাদনা বোর্ড বিবৃতিতে আরও বলা হয়, আসন্ন মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কোনও নির্দিষ্ট প্রার্থীকে সমর্থন করেন না অ্যাসাঞ্জ। তবে গোপন নথি ফাঁস, শান্তি ও যুদ্ধবিষয়ক অবস্থানের জন্য গ্রিন কনভেনশনে জিল স্টেইনের সঙ্গে কথা বলতে পেরে তিনি আনন্দিত।


/বিএ/