ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের প্রতিবেদন

বিশ্বজুড়েই যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছেন নারী সংসদ সদস্যরা

জেস ফিলিপস নামের এ নারী এমপি অভিযোগ করেন তিনি এক রাতেই ৬শটি ধর্ষণের হুমকি পেয়েছেনবিশ্বের বিভিন্ন দেশের পার্লামেন্টগুলোর আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়ন (আইপিইউ) নারীর প্রতি বৈষম্যের এক ভয়াবহ বাস্তবতা হাজির করেছে। তাদের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কেবল সমাজের নিচু তলার মানুষেরা নয়, নারী হিসেবে যৌন সহিংসতার শিকার হচ্ছেন সংসদ সদস্যরাও।  
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নারী সংসদ সদস্যদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে আইপিইউ। সাক্ষাৎকারদাতা নারী পার্লামেন্ট সদস্যদের মধ্যে ৪০ শতাংশেরও বেশি নারী অভিযোগ করেছেন, তারা হত্যা-ধর্ষণ-পিটুনি কিংবা অপহরণের হুমকি পেয়েছেন। এমনকি তাদের সন্তানদেরও অপহরণ কিংবা হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
ইন্টার-পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) বলছে, দায়িত্বরত অবস্থায় বিশ্বজুড়ে নারী সংসদ সদস্যদেরকে দেওয়া ধর্ষণ, পিটুনি এবং হত্যার হুমকি কিংবা শারীরিক, যৌন ও মানসিক নিপীড়ন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং নারীর প্রতি বৈষম্য রোধের প্রচেষ্টাকে ক্ষুণ্ন করছে। এ নিয়ে নিজেদের উদ্বেগের কথাও জানিয়েছে তারা।
বিশ্বের পাঁচটি অঞ্চলের ৩৯টি দেশের ৫৫ জন নারী এমপির সাক্ষাৎকার গ্রহণের ভিত্তিতে জরিপটি পরিচালিত হয়েছে। আইপিইউ-এর জরিপ পরিচালনার ক্ষেত্রে যথার্থ নমুনায়ন হয়নি বলেই মনে করছে প্রভাবশালী ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ান। তারা বলছে, নমুনায়নের পরিসর সংকীর্ণ।
তবে ইউনিয়নের মহাসচিব মার্টিন চুঙ্গঙ তা সত্ত্বেও মনে করেন, প্রতিবেদনটির ফলাফলের মধ্য দিয়ে এটি স্পষ্ট হয়েছে যে সমস্যাটি অনেক বেশি বিস্তৃত এবং প্রকৃত চিত্রটা আরও ভয়াবহ।

এক পঞ্চমাংশেরও বেশি নারী এমপি জানিয়েছেন তারা এক বা একাধিকবার যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। আর এক তৃতীয়াংশেরও বেশি নারী এমপি জানিয়েছেন তারা পার্লামেন্টে তাদের সহকর্মীর ওপর হামলা হতে দেখেছেন।  

প্রায় ৮০ শতাংশ নারী এমপি বলেছেন তাদেরকে মানসিক সহিংসতার বিষয়বস্তু করা হয়েছে। অর্থাৎ এমন বিরূপ আচরণ করা হয়েছে যা তাদের মনে আতঙ্ক তৈরি করেছে তাদেরকে মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।

আইপিইউ-এর এ প্রতিবেদন বিশ্বজুড়ে নারী রাজনীতিবিদদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধের জন্য বিদ্যমান দাবিকে আরও জোরালো করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এই প্রতিবেদন প্রকাশের আগেই, সহিংসতার বাস্তবতা অনুধাবন করে গত মার্চে ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক ইনস্টিটিউট (এনডিআই) কর্মস্থলে নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধে সচেতনতা গড়ে তোলার জন্য ‘নট দ্য কস্ট’ ক্যাম্পেইন শুরু করে। ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করার সময় খোদ লিমার সাবেক মেয়র সুসানা ভিলারান জানান, তিনিও দায়িত্ব পালনকালে হামলা ও হামলার হুমকি পেয়েছিলেন। পুরুষতান্ত্রিক রাজনীতি ও ক্ষমতার জগতে নারীদের জায়গা নেই বোঝাতে এমন হুমকি দেওয়া হয়েছিল বলে মনে করেন তিনি। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

/এফইউ/বিএ/