এবিসি-ওয়াশিংটন পোস্টের সর্বশেষ জরিপ প্রত্যাখ্যান হিলারি শিবিরের

হিলারি ক্লিনটন৮ নভেম্বরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে ঘিরে এবিসি-ওয়াশিংটন পোস্টের চালানো সর্বশেষ জরিপ প্রত্যাখ্যান করেছে হিলারি ক্লিনটনের প্রচারণা দলের কর্মকর্তারা। মঙ্গলবার প্রকাশিত এ জরিপে দেখা গেছে, জনপ্রিয়তায় হিলারি ক্লিনটনকে এক পয়েন্ট পেছনে ফেলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ধারণা করা হচ্ছে, ই-মেইল কেলেঙ্কারিতে নতুন করে হিলারির বিরুদ্ধে মার্কিন ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-এর তদন্ত শুরুর ঘোষণার পর হিলারির জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েছে। তবে জরিপের ফল প্রত্যাখ্যান করে হিলারি শিবির থেকে একে ‘বাজে ভোটিং’ হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। তারা বলছেন, এফবিআই-এর ওই ঘোষণায় হিলারির ওপর ভোটারদের নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বুধবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।

এবিসি টেলিভিশন এবং ওয়াশিংটন পোস্ট পরিচালিত এ জনমত জরিপে দেখা গেছে, ৪৬ শতাংশ ভোটার বলেছেন, তারা নির্বাচনে ট্রাম্পকে সমর্থন দেবেন। অন্যদিকে, শতকরা ৪৫ ভাগ ভোটার বলছেন, তারা হিলারি ক্লিনটনকে সমর্থন করবেন।

স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে এ জনমত জরিপের ফলাফল প্রকাশিত হয়। গত ২৭ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত এ জরিপ কাজ পরিচালনা করা হয়। এতে টেলিফোন ও মোবাইল ফোনে প্রাপ্তবয়স্ক ১ হাজার ৭৭৩ জন মার্কিন নাগরিকের মতামত নেওয়া হয়।

হিলারির নির্বাচনি প্রচারণা দলের একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য অবশ্য স্বীকার করেছেন যে, দুই প্রার্থীই হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের মধ্যে রয়েছেন। এবিসি টেলিভিশন এবং ওয়াশিংটন পোস্টের চালানো সর্বশেষ জরিপের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি একে ‘বাজে ভোটিং’ বলে মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, আমরা সবাই যা দেখছি, এখানে তার প্রতিফলন নেই। কঠিন লড়াই হচ্ছে কিন্তু এই জরিপের ফলকে সঠিক বলার মতো কিছু আমরা দেখছি না।

উল্লেখ্য, মার্কিন নির্বাচনের মাত্র দুই সপ্তাহ বাকি থাকতেই ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের বিরুদ্ধে এফবিআই-এর নতুন করে তদন্ত শুরু করার খবরটি সামনে আসে। হিলারি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে ২০০৯-২০১৩ সাল পর্যন্ত ব্যক্তিগত সার্ভার থেকে ইমেইল আদান-প্রদান করেছিলেন। দীর্ঘ সময় ধরে আদান-প্রদান করা ইমেইলগুলোতে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ অনেক বিষয়েরও উল্লেখ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে সরকারের নিয়ন্ত্রিত চ্যানেল ছাড়া ক্লাসিফায়েড তথ্য আদান-প্রদানের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এ ধরনের অনিরাপদ চ্যানেলের মাধ্যমে অতি গোপনীয় ইমেইল ফাঁস হওয়াকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বলে মনে করে মার্কিন সরকার। তবে ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহারের কথা স্বীকার করলেও হিলারির দাবি, তিনি ভুল কিছু করেননি।

হিলারির ব্যক্তিগত সার্ভার ব্যবহার করে ইমেইল আদান-প্রদানের কারণে আইন ভঙ্গ হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে তদন্ত শুরু করে মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআই। গত ২৯ জানুয়ারিতে সংস্থাটির অনুরোধে হিলারির ২২টিরও বেশি ইমেইলকে ‘অতি গোপনীয়’ বলে ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর। আর জুলাই মাসে প্রথম ধাপের তদন্ত শেষ করে এফবিআই। 

সম্প্রতি এফবিআই থেকে জানানো হয়, হিলারির ইমেইল নিয়ে নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে সংস্থাটি। ওই তদন্তের সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে এমন নতুন কিছু ই-মেইলের সন্ধান পাওয়ায় তদন্ত হবে। হিলারির প্রচারণা শিবিরের ভাইস চেয়ারপার্সন হুমা আবেদিনের ইমেইল তদন্তের জন্যও এফবিআই-এর কাছে একটি ওয়ারেন্ট আছে বলে জানানো হয়।

আগামী ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। এ নির্বাচনে ২০০ মিলিয়ন রেজিস্টার্ড ভোটার রয়েছেন। এরইমধ্যে কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে আগাম ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। আগাম ভোট দিয়েছেন ২০ মিলিয়ন ভোটার।

/এমপি/