আসামে উলফার হামলায় ৩ ভারতীয় সেনা নিহত, আহত ৪





nonameভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় আসাম রাজ্যে বিদ্রোহী সংগঠন উলফা সদস্যদের সন্দেহভাজন হামলায় তিন সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। তিনসুকিয়া জেলার পেঙরির ওই হামলায় সেনাবাহিনীর আরও চার সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন। বিভিন্ন ভারতীয় সংবাদমাধ্যম খবরটি নিশ্চিত করেছে। পরপর দুইটি টুইটার বার্তায় এ ঘটনায় দোষীদের তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি হতাহতদের জন্য সমবেদনা প্রকাশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং।






সেনা এবং পুলিশ কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে দ্য হিন্দুস্থান টাইমস জানিয়েছে, বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক প্রধান পরেশ বড়ুয়ার নেতৃত্বাধীন যে অংশটি ভারত সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনার বিরোধিতা করে উলফা (ইন্ডিপেন্ডেন্ট) নামে পৃতক সংগঠন গড়েছে, তাদের সদস্যরাই এই হামলা চালিয়েছে বলে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এক সেনা মুখপাত্রের বরাত দিয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো জানায়, শনিবার ভোরের দিকে ঘন জঙ্গল এলাকা দিয়ে যখন সেনাবাহিনীর একটি গাড়ি বহর যাচ্ছিল, তখন প্রথমে একটি বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। গাড়িগুলো থেমে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জঙ্গিরা ব্যাপক গুলিবর্ষণ শুরু করে। সেনাবাহিনীও পাল্টা গুলি চালায়, কিন্তু জঙ্গিরা জঙ্গলের ভেতরে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছে, তাদের খোঁজে গোটা এলাকায় তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। ব্যবহার করা হচ্ছে হেলিকপ্টারও।
হামলার নিন্দা জানিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনওয়াল বলেছেন, ‘দায়ীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ হামলার পর সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংকে অবহিত করা হয়েছে। রাজনাথ সিং পৃথক দুই টুইটার বার্তায় দোষীদের বিচার ও সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। রাজনাথ তার টুইটার পোস্টে বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই অব্যাহত রাখবে ভারত। দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় নেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
উল্লেখ্য, সশস্ত্র সংগ্রামে বিশ্বাসী উলফার জন্ম, ১৯৭৯ আসামের সার্বভৌমত্বের দাবিতে প্রায় সাড়ে তিন দশক ধরে লড়াই করছে এই সংগঠনটি। তবে কয়েক বছর আগে উলফার চেয়ারম্যান অরবিন্দ রাজ-খোয়াসহ শীর্ষ নেতৃত্বের একটা বড় অংশ আত্মসমর্পণ করে ভারত সরকারের সঙ্গে শান্তি আলোচনা চালাচ্ছেন। কিন্তু সংগঠনটির সামরিক প্রধান পরেশ বড়–য়া তাঁর অনুগামীদের নিয়ে পৃথক সংগঠন গড়ে তুলেছেন এবং উত্তরপূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যের জঙ্গি সংগঠনগুলোর সঙ্গে যৌথ মঞ্চও গড়েছেন। সংগঠন পৃথক হয়ে যাওয়ার ফলে উলফার জন-ভিত্তি এবং অস্ত্র সম্ভার যেমন কমেছে, তেমনি তাদের তহবিল সংগ্রহও কমেছে। দীর্ঘদিন পরে তারা আসামে সেনাবাহিনীর ওপরে হামলা চালাতে সমর্থ হলো।
আসামের অস্থিরতায় গত দুই দশকে প্রাণ হারিয়েছেন ১০ হাজার মানুষ। এদের বেশিরভাগই বেসামরিক।
/বিএ/