ত্রাণ সহায়তার বাইরে লক্ষাধিক রোহিঙ্গা, মানবিক বিপর্যয়ের আশঙ্কা

মানবিক বিপর্যয়ের মুখে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীজাতিসংঘ জানিয়েছে, মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর অনুমতির কারণে তারা ১ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গার কাছে ত্রাণ সহায়তা পৌঁছাতে পারছে না। এর ফলে মানবিক বিপর্যয় ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা জানিয়েছে তারা। শুক্রবার জাতিসংঘের এক মুখপাত্র এসব কথা জানান।

জাতিসংঘের মুখপাত্র পিয়েরে পিরন এক বিবৃতিতে জানান, সর্বশেষ এ সহিংসতার সূত্রপাতের আগে সেখানকার ১ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ ত্রাণ সহায়তার আওতাভুক্ত ছিলেন। সরবারহ ব্যবস্থা সীমিত করে দেওয়ায় ৯ অক্টোবরের পর থেকে সেখানকার মাত্র ২০ হাজার মানুষের কাছেই ত্রাণ সাহায্য পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে। আর বাকি ১ লাখ ৩০ হাজার রোহিঙ্গা থেকে যাচ্ছেন ত্রাণ সহায়তার বাইরে।

তিনি আরও জানান, অন্তত ৭ হাজার ৬০০ গর্ভবতী নারীও সেখানে ন্যূনতম চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না।

জাতিসংঘ সর্বশেষ হালনাগাদ তথ্যে জানিয়েছে, ১ নভেম্বর থেকে এ পর্যন্ত ২২ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে। সংঘাতে প্রায় ৩০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং সংঘাতে হাজার হাজার রোহিঙ্গা ভোগান্তির শিকার হয়েছে।

এদিকে, রাখাইন রাজ্যে নিপীড়নের শিকার রোহিঙ্গাদের কাছে মানবিক সাহায্য পৌঁছানোর সুযোগ করে দিতে মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ১৪টি দেশ। শুক্রবার মিয়ানমারে অবস্থিত ওই দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরা এক যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান।

তুরস্ক, অস্ট্রিয়া, বেলিজিয়াম, কানাডা, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড, ফ্রান্স, গ্রিস, আয়ারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, পোল্যান্ড, স্পেন, সুইডেন ও যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস যৌথ বিবৃতিতে এ আহ্বান জানায়।

বিবৃতিতে বলা হয়, মিয়ানমারের বন্ধু দেশ হিসেবে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় এলাকায় রাখাইনের মানবিক অবস্থার বিপর্যয় নিয়ে তারা উদ্বিগ্ন। সেই সঙ্গে রোহিঙ্গাদের কাছে মানবিক সাহায্য ঢুকতে না দেওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় ওই বিবৃতিতে।

কূটনীতিকরা অভিযোগ করেন, সামরিক কর্মকর্তারা প্রায়ই সেখানে সাহায্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত বাতিল করছেন অথবা বিলম্বিত করছেন।

উল্লিখিত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতরা যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘সাহায্য দিতে বিলম্ব করায় আমরা উদ্বিগ্ন। মিয়ানমারের সব কর্তৃপক্ষকে সাহায্য পৌঁছে দিতে সকল বাধা দূর করারও অনুরোধ জানাচ্ছি। যাতে করে পূর্ণ উদ্যোমে নতুন করে সেখানে সাহায্য প্রদান শুরু করা যায়।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাখাইনে তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা শিশুসহ হাজার হাজার মানুষের জন্য মানবিক সহায়তা প্রয়োজন। বর্তমানে প্রায় দুই মাস যাবত তারা কোন মানবিক সহায়তা ছাড়াই টিকে রয়েছেন।

রাখাইনে ৯ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নে অন্তত ৮৬ জন নিহত হয়েছেন।

সূত্র: নিউ ইয়র্ক টাইমস।  

/এসএ/বিএ/