সহসা বন্ধ হচ্ছে না কুখ্যাত গুয়ানতানামো কারাগার

 

nonameনতুন করে সাজানো হচ্ছে কিউবায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী পরিচালিত কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে কারাগার। এর এতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, কারাগারটি সহসা বন্ধ হচ্ছে না। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এই খবর জানিয়েছে।
বন্দি নির্যাতন ও মৃত্যুর ঘটনায় ক্রমেই কুখ্যাত হয়ে ওঠে গুয়ানতানামো বে কারাগার। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির অংশ হিসেবে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এই কারাগারটি বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তবে নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট করে ‘খারাপ’ মানুষদের বন্দী রাখতে এই কারাগারটি চালু রাখার আভাস দেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, আবার নতুন করে সাজানো হচ্ছে কারাগারটি। এরই ধারাবাহিকতায় সেখানে ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করে একটি মেডিকেল ক্লিনিক তৈরি করছে মার্কিন সেনাবাহিনী। এ ছাড়া ১২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার খরচ করে তৈরি করা হচ্ছে সেনাদের জন্য ডাইনিং সুবিধা। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে, এত সহজে বন্ধ করা হচ্ছে না কারাগারটি। আর পুরো সিদ্ধান্তটি নির্ভর করছে মার্কিন নির্বাচনে জয়ী ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে সময় ফুরিয়ে এসেছে ওবামার। এই বন্দীশিবির বন্ধ করা ছিল তার অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি। তাই হোয়াইট হাউজ ছাড়ার আগে তিনি গুয়ানতানামো কারাগার বন্ধ করতে চান।  ফেব্রুয়ারিতে কংগ্রেসের সামনে নিজের পরিকল্পনা তুলে ধরতে গিয়ে ওবামা বলেন, ‘গুয়ানতানামো বন্দী শিবিরটি মার্কিন আদর্শের বিপক্ষেই যায়। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনও কাজেই আসেনি এই কারাগার। অতএব এটা বন্ধ করাই সঠিক কাজ হবে।’ সেখানে তখনও ৯১ জন বন্দি ছিলেন। এরপর দুই ধাপে বন্দি স্থানান্তর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে এখন সেখানে বন্দির সংখ্যা ৫৯জন।
তবে সেই সময় এসে ট্রাম্প অবকাঠামো উন্নয়নের মধ্য দিয়ে গুয়ানতানামোর বন্ধ না হওয়ার ইঙ্গিত পরিষ্কার করলেন। এর আগে ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, কারাগারটি খোলা থাক, এমনটাই তাঁর ইচ্ছা। আর সেখানে ‘কিছু খারাপ লোককে ভরে রাখবেন’ বলেও জানিয়েছেলেন তিনি।

মার্কিন সরকার পরিচালিত এই কারাগারটির অবস্থান কিউবায়। এর প্রতিষ্ঠা নাইন ইলেভেন হামলার পরের বছর ২০০২ সালে। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে বিমান হামলার পর সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আল-কায়েদা ও তালেবানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। আটক আল-কায়েদা ও তালেবান সদস্যদের রাখার জন্য সে সময় নির্মাণ করা হয় কারাগারটি।

বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠনের অভিযোগ, কারাগারটির বেশির ভাগ বন্দিকেই বিনা অভিযোগে আটক করা হয়েছিল। এ ছাড়া তাদের ওপর অকথ্য নির্যাতন চালানো হতো। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। নানা সময়ে বন্দিদের উপর নির্যাতন ও তাদের অধিকার লঙ্ঘনের ব্যাপক অভিযোগ তুলেছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা। আরেকটি অভিযোগ হলো সেখানে বন্দিদের বিনা বিচারে আটক রাখা হয়। সূত্র: আলজাজিরা, মিডল ইস্ট আই

/বিএ/