‘রুশ সামরিক বিমান বিধ্বস্তের সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের সংযোগ নেই’

nonameযান্ত্রিক গোলযোগ কিংবা পাইলটের মানবিক ত্রুটির কারণেই কৃষ্ণসাগরে রুশ সামরিক বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি তাতে এটা বলা যায়, এ দুর্ঘটনার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের কোনও সংযোগ নেই। সোমবার এক ব্রিফিংয়ে এমন মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার পরিবহনমন্ত্রী মাকসিম সকোলোভ।
এমন মন্তব্যকে অবশ্য নিজের ব্যক্তিগত অভিমত হিসেবেই দেখতে চান রুশ পরিবহনমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমি শুধু তদন্তের ওপরই জোর দিচ্ছি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ প্রযুক্তিগত কমিটিই বিষয়টি নিশ্চিত করতে পারবে।

এদিকে এরইমধ্যে বিধ্বস্ত বিমানের ১১ আরোহীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দেশটির সোচি শহরের কাছে কৃষ্ণসাগর থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বাকি আরোহীদের মৃতদেহের সন্ধানে ব্যাপকভিত্তিক উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে মস্কো। দুর্ঘটনাস্থল সোচি শহরের কাছের ওই অভিযানে অংশ নিচ্ছেন তিন হাজারের বেশি মানুষ। এদের মধ্যে ১০৯ জন স্কুবা ডাইভারও রয়েছেন। জাহাজ, জেট, হেলিকপ্টার ও সাবমেরিনের মতো যানের সাহায্যে বিমানটির আরোহীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।

এ ঘটনায় সোমবার রাশিয়ায় জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে। রাশিয়ার কর্মকর্তারা জানান, রবিবার রাতভর সাগরে নিহতের সন্ধানে অভিযান চালান শতাধিক স্কুবা ডাইভার।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মেজর জেনারেল কোনশেনকোভ জানিয়েছেন, এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি জানান, বিমানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করতে শক্তিশালী স্পটলাইট ব্যবহার করা হচ্ছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা উপকূলের ১০ দশমিক ৫ বর্গকিলোমিটার এলাকার ওপর অধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন।

সন্ত্রাসী হামলার কারণে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে রাশিয়ার পরিবহনমন্ত্রী মাকসিম সকোলোভ জানান, বিধ্বস্ত হওয়ার পেছনে সম্ভাব্য সব কারণ নিয়েই তদন্ত করছেন তদন্তকারীরা। তবে এখনও এ বিষয়ে উপসংহারে পোঁছার সময় আসেনি।

উল্লেখ্য, রবিবার সিরিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে রুশ সামরিক বিমানটি কৃষ্ণ সাগরে নিখোঁজ হয় বলে প্রথমদিকে জানানো হয়। পরে নিশ্চিত করা হয়, বিমানটি কৃষ্ণ সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। রুশ কর্তৃপক্ষ জানায়, বিধ্বস্ত হওয়া টিইউ-১৫৪ সামরিক বিমানটিতে ৯২ জন আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে ৮৪ জন যাত্রী। বাকী ৮ জন বিমানকর্মী।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র মেজর জেনারেল ইগর কনাসেনকভ রবিবারই জানান, বিমানের যাত্রী ও ক্রুদের কেউ বেঁচে নেই।

সোচির ক্রাসনোদার ক্রাই থেকে স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ২০ মিনিটে উড্ডয়নের ২০ মিনিট পরই বিমানটির সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তখন বিমানটি কৃষ্ণসাগরের ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল।

সামরিক বিমানটি নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে এ বিষয়ে তল্লাশি অভিযান তদারকি করছেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শইগু। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ জানিয়েছেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে এ বিষয়ে অবগত করা হয়েছে। তাকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সকল আপডেট জানানো হচ্ছে। সূত্র: আরটি, স্পুটনিক, আল জাজিরা।

/এমপি/