বিধ্বস্ত রুশ সামরিক বিমানের ব্ল্যাক বক্স উদ্ধার

চলছে উদ্ধার অভিযানকৃষ্ণসাগরে বিধ্বস্ত হওয়া রুশ সামরিক বিমানের প্রথম ‘ব্ল্যাক বক্স’ উদ্ধার করা হয়েছে।

রবিবার সিরিয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে রুশ সামরিক বিমানটি কৃষ্ণ সাগরে নিখোঁজ হয় বলে প্রথমদিকে জানানো হয়। পরে নিশ্চিত করা হয়, বিমানটি কৃষ্ণ সাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। রুশ কর্তৃপক্ষ জানায়, বিধ্বস্ত হওয়া টিইউ-১৫৪ সামরিক বিমানটিতে ৯২ জন আরোহী ছিলেন। তাদের মধ্যে ৮৪ জন যাত্রী। বাকী ৮ জন বিমানকর্মী।

রুশ বার্তা সংস্থা রিয়া নভোস্তি জানিয়েছে, সোচি উপকূল থেকে ১ হাজার ৬০০ মিটার দূরে সাগরের ১৭ মিটার গভীর থেকে ওই প্রথম ‘ব্ল্যাক বক্স’টি উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধারের সময় ‘ব্ল্যাক বক্স’টি ভালো অবস্থায় ছিল।

একই সূত্রে জানা গেছে, বিমানটির দ্বিতীয় ‘ব্ল্যাক বক্স’এর স্থানও শনাক্ত করা হয়েছে।

কৃষ্ণসাগর থেকে এখন পর্যন্ত ১২ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। বাকি আরোহীদের সন্ধানে ব্যাপকভিত্তিক উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে মস্কো। তবে আশঙ্কা করা হচ্ছে, রবিবার বিধ্বস্ত ওই বিমানটির সব আরোহী মারা গেছে। এ ঘটনায় সোমবার রাশিয়ায় জাতীয় শোক ঘোষণা করা হয়েছে।

তবে বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পেছনে কোনও সন্ত্রাসী তৎপরতার হাত নেই বলে মনে করছেন রুশ পরিবহনমন্ত্রী। ‘যান্ত্রিক গোলযোগ কিংবা পাইলটের মানবিক ত্রুটির কারণেই কৃষ্ণসাগরে রুশ সামরিক বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। আমরা যতটুকু জানতে পেরেছি তাতে এটা বলা যায়, এ দুর্ঘটনার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদের কোনও সংযোগ নেই।’ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেছেন রাশিয়ার পরিবহনমন্ত্রী মাকসিম সকোলোভ। 

নিহতদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছে রুশ জনগণ

মাকসিম সকোলোভ আরও জানান, বিধ্বস্ত হওয়ার পেছনে সম্ভাব্য সব কারণ নিয়েই তদন্ত করছেন তদন্তকারীরা। তবে এখনও এ বিষয়ে উপসংহারে পোঁছার সময় আসেনি।

রাশিয়ার কর্মকর্তারা জানান, দুর্ঘটনাস্থল সোচি শহরের কাছের ওই উদ্ধার অভিযানে অংশ নিচ্ছেন তিন হাজারের বেশি মানুষ। এদের মধ্যে ১০৯ জন স্কুবা ডাইভারও রয়েছেন। জাহাজ, জেট, হেলিকপ্টার ও সাবমেরিনের মতো যানের সাহায্যে বিমানটির আরোহীদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা।

রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মেজর জেনারেল কোনশেনকোভ জানিয়েছেন, এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। তিনি জানান, বিমানের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে বের করতে শক্তিশালী স্পটলাইট ব্যবহার করা হচ্ছে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা উপকূলের ১০ দশমিক ৫ বর্গকিলোমিটার এলাকার ওপর অধিক গুরুত্ব দিচ্ছেন।

উল্লেখ্য, সোচির ক্রাসনোদার ক্রাই থেকে রবিবার স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ২০ মিনিটে উড্ডয়নের ২০ মিনিট পরই বিমানটির সঙ্গে নিয়ন্ত্রণ কক্ষের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তখন বিমানটি কৃষ্ণ সাগরের ওপর দিয়ে উড়ে যাচ্ছিল। বিমানটির গন্তব্য ছিল সিরিয়ার লাতাকিয়া। আরোহীদের ৬৪ জনই ছিলেন সামরিক শিল্পীগোষ্ঠী আলেক্সান্দ্রভ এনসেম্বল-এর সদস্য। সেখানে নতুন বছর উদযাপনের অনুষ্ঠানে কয়েকটি কনসার্টে তাদের অংশ নেওয়ার কথা ছিল।

সূত্র: বিবিসি।

/এসএ/