দ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (নোটিফিকেশন অব উইদড্রয়াল) নামের বিলটি নিয়ে ব্রিটেনের ঐতিহাসিক বিতর্কে অংশ নেন রুশনারা আলী। তিনি বলেন, “একজন উৎসাহী ইউরোপীয়ান হিসেবে, একজন গর্বিত লন্ডনবাসী হিসেবে ব্রিটেন ছিল আমার এবং আমার পরিবারের জন্য একটা স্বাগত আবাস। আমার নির্বাচনি এলাকার ৭০ শতাংশ মানুষ ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষে রায় দিয়েছেন। আমি এ বিলের পক্ষে ভোট দিচ্ছি না।”
তিনি বলেন, “ইউরোপীয় ইউনিয়নের একক বাজার এবং কাস্টমস ইউনিয়ন থেকে আমাদের বের করে আনার প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা আমি সমর্থন করি না। কারণ লন্ডন ও ক্যানারি ওয়ার্ফ শহরে যখন এটা আসবে তার প্রভাব হবে মারাত্মক। এটা আমাদের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এর স্বপক্ষে তথ্যসমৃদ্ধ যুক্তি রয়েছে। ৭০ হাজার থেকে এক লাখ মানুষের চাকরি ঝুঁকিতে রয়েছে। এটা শুধু চাকরির বিষয় নয়। ওই প্রতিষ্ঠানগুলোও ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। এটাকেই স্বাগত জানানো হচ্ছে। লন্ডন ও ক্যানারি ওয়ার্ফ-এ কর্মরত মানুষদের জন্য এটাই পরিবেশন করা হচ্ছে।
লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন বিলটির পক্ষে ভোট দিতে দলীয় এমপিদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে দলীয় প্রধানের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেন দলটির ৪৭ জন এমপি। পার্লামেন্টের ভোটাভুটিতে তারা বিলটির বিপক্ষে ভোট দেন। অন্য বিদ্রোহীদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকও রয়েছেন। এ বিলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে যুক্তরাজ্যের ছায়ামন্ত্রির দায়িত্ব থেকেও পদত্যাগ করেন টিউলিপ সিদ্দিক।
পার্লামেন্টের বিতর্কে রুশনারা আলী বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের একক বাজার থেকে বেরিয়ে আসলে আমার নির্বাচনি আসনের মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। জাতীয় অর্থনীতেও এর প্রভাব পড়বে। আমাদের অধিকার রয়েছে লিসবন চুক্তির ৫০ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ব্রেক্সিট কার্যকরের প্রক্রিয়া শুরু সংক্রান্ত এ বিলের বিরোধিতা করার।”
তিনি বলেন, “এটা আমাদের জাতীয় স্বার্থ বলে আমি মনে করি না। জাতীয় স্বার্থের দোহাই দিয়ে আমি এতে ছাড় দেবো না। আমি মনে করি না যে, এতে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মেরও কোনও স্বার্থ রয়েছে।
যুক্তরাজ্যভিত্তিক বহুজাতিক সংস্থা ‘প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপারস’-এর মতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের একক বাজার ছাড়লে অর্থনৈতিক সেক্টরে যুক্তরাজ্য ৭০ হাজার থেকে এক লাখ চাকরি হারাবে।
ভিন্নমত, বিরোধিতা সত্ত্বেও বুধবার রাতে হাউস অব কমন্সে ব্রেক্সিট বিল পাস হয়। সেখানে বিলের পক্ষে ৪৯৮টি এবং বিপক্ষে ১১৪টি ভোট পড়ে। আইনে পরিণত হওয়ার আগে বিলটি নিয়ে আরও বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে।
/এমপি/আপ-এমডিপি/