সিলেটের জঙ্গি আস্তানায় অভিযানের পর সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় বিএসএফ

বিএসএফসিলেটের শিববাড়ি আতিয়া মহলের জঙ্গি আস্তানায় সেনা অভিযানের পর ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-কে সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রাখা হয়েছে। এক ভারতীয় পদস্থ কর্মকর্তা দেশটির প্রভাবশালী বার্তা সংস্থা আইএএনএস-কে জানান; জঙ্গিরা প্রতিবেশী দেশ ভারতে পালিয়ে যেতে পারে, এমন আশঙ্কায় ওই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ২ হাজার ২১৬ কিলোমিটার, ত্রিপুরার ৮৫৬ কিলোমিটার, মেঘালয়ের ৪৪৩ কিলোমিটার, মিজোরামের ৩১৮ কিলোমিটার এবং আসামের ২৬৩ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। এর মধ্যে নদীও রয়েছে কিছু এলাকায়।

বিএসএফ-এর সহকারি মহাপরিচালক হরদীপ সিং জানান, ‘বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার ৪ হাজার ৯৬ কিলোমিটার সীমান্তের সবখানে সর্বোচ্চ সতর্কতা ঘোষণা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক সীমান্তে বিএসএফ-কে কড়া নজরদারি বজায় রাখতে বলা হয়েছে।’

আগরতলায় আইএএনএস-এর সঙ্গের কথোপকথনে তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে এখনও কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়নি, সেখানে বিএসএফ-কে আরও কড়া নজরদারি রাখতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে ডগ স্কোয়াড ও বোমা নিষ্ক্রিয়কারী দলকেও সীমান্ত এলাকায় নিয়োজিত করা হয়েছে।’ সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ-এর নারী সদস্যদেরও নিয়োজিত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

এদিকে, ত্রিপুরার এক পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মোবাইল টাস্ক ফোর্স (এমটিএফ) কর্মকর্তা ও রাজ্যের অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীকেও সীমান্ত এলাকায় সতর্ক থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সিলেটের সঙ্গে সীমান্ত থাকা ত্রিপুরা, আসাম ও মেঘালয়ের পুলিশকেও সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানাধীন শিববাড়ি এলাকায় ‘আতিয়া মহল’ নামে পাঁচতলা বাড়ির নিচতলায় জঙ্গিরা অবস্থান করছে বলে ২৩ মার্চ মধ্যরাতে খবর পাওয়ার কথা জানায় পুলিশ। ওইদিন রাত থেকেই বাড়িটি ঘেরাও করে রাখে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ২৪ মার্চ সকাল ৮টার দিকে আতিয়া মহলের ভেতর থেকে বাইরের দিকে গ্রেনেড ছোড়া হয়। এক পর্যায়ে ওই বাড়িতে অভিযান চালাতে ঢাকা থেকে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট সোয়াতকে পাঠানো হয় ঘটনাস্থলে।

পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে পুরো এলাকা নিয়ন্ত্রণে নেয় সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো দল। ২৫ মার্চ শনিবার ভোরে আতিয়া মহলে অভিযান শুরু করে সোয়াত ও সেনাবাহিনীর প্যারা-কমান্ডো বাহিনী। আতিয়া মহলের পাশে দুই দফা কাউন্টার অ্যাটাকে দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ছয় জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন র‌্যাবের গোয়েন্দা বিভাগের প্রধানসহ অন্তত ৫০ জন। রবিবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, অভিযানে তাদের হাতে অন্তত দুই জঙ্গি নিহত হয়েছেন। এরপর সোমবার আরও দুই জঙ্গি নিহত হওয়ার তথ্য জানায় সেনাবাহিনী।

সূত্র: দ্য হিন্দু।

/এসএ/বিএ/