ব্যাননের পর অপসারিত হচ্ছেন ম্যাকফারল্যান্ড, নেপথ্যে সেই ম্যাকমাস্টার

হার্বার্ট রেমন্ড ম্যাকমাস্টার (হাতের বামে), ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং স্টিভ ব্যানন (হাতের ডানে)
যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল (এনএসসি) থেকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রধান কুশলী এবং বিশেষ বন্ধু স্টিভ ব্যাননকে সরিয়ে দেওয়া হয় গত এপ্রিলে। তখনই গুঞ্জন উঠেছিল, এনএসসি’র আরেক উপদেষ্টা হার্বার্ট রেমন্ড ম্যাকমাস্টার-এর সঙ্গে দূরত্বের কারণেই পদ হারাতে হয়েছে ব্যানন’কে। ওই সময়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আভাস মিলেছিল, কাউন্সিলে এবার কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ হচ্ছে ম্যাকমাস্টার-এর। নিউ ইয়র্কভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গ-এর সাম্প্রতিক এক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে ম্যাকমাস্টার-এর সেই নিরঙ্কুশ ক্ষমতার চিত্র। প্রভাবশালী এ মার্কিন সংবাদমাধ্যম বলছে, তার সঙ্গে দূরত্বের জেরে এবার পদ ছাড়তে হচ্ছে এনএসসি’র আরেক উপদেষ্টা ম্যাকফারল্যান্ড’কে।

ব্লুমাবার্গ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়, শিগগিরই এনএসসি’তে আরেক দফা রদবদল ঘটাতে চলছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে শেষ পর্যন্ত এটা সত্যি হলে তা হবে উদ্বেগজনক। তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখে পড়তে হবে মন্ত্রিসভার সদস্যদের। কেননা এরইমধ্যে ট্রাম্প প্রশাসনের সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তি ট্রাম্পের প্রধান কুশলী এবং বিশেষ বন্ধু স্টিভ ব্যাননকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ব্লুমবার্গ বলছে, এরইমধ্যে এনএসসি’র উপদেষ্টা ম্যাকফারল্যান্ড’কে দায়িত্ব থেকে সরে যাওয়ার কথা বলেছেন ট্রাম্প। তবে তাকে অবশ্য এখনই সরে যেতে হচ্ছে না। দুই সপ্তাহ বাড়তি সময় পাচ্ছেন তিনি। অর্থাৎ, তার স্থলাভিষিক্ত হওয়ার মতো উপযুক্ত কাউকে নিয়োগের আগ পর্যন্ত দুই সপ্তাহের জন্য দায়িত্বে থাকছেন। এরপর তাকে সিঙ্গাপুরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হতে পারে বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

পেশাগত জীবনে এর আগে ট্রাম্পপন্থী মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের জাতীয় নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন ম্যাকফারল্যান্ড। ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বরের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ম্যাকফারল্যান্ড’কে এনএসসি’তে নিয়োগ দেন ট্রাম্প।

এখন ম্যাকফারল্যান্ড এনএসসি’র দায়িত্ব ত্যাগ করলে তার স্থলাভিষিক্ত কে হবেন; সে ব্যাপারে নিজ থেকে কোনও সিদ্ধান্ত নেবেন না ট্রাম্প। এ পদের জন্য নতুন কাউকে বাছাইয়ের দায়িত্ব পড়েছে এনএসসি’তে ক্রমেই প্রভাবশালী হয়ে উঠা ম্যাকমাস্টার-এর ওপর। হোয়াইট হাউস-এর সাম্প্রতিক রদবদল প্রক্রিয়া সম্পর্কে অবগত; নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এমন একটি সূত্রের বরাত দিয়ে এসব তথ্য জানিয়েছে ব্লুমবার্গ।

ম্যাকফারল্যান্ড

ম্যাকমাস্টার-এর সঙ্গে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েছিলেন ম্যাকফারল্যান্ড। এদিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প’ও এনএসসি’র লাগাম তুলে দিয়েছেন সেনাবাহিনীর লেফট্যান্যান্ট জেনারেল ম্যাকমাস্টার-এর হাতে। নিজের মতো করে তাকে দফতর গুছিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা দিয়েছেন ট্রাম্প।

চলতি এপ্রিলেই ট্রাম্প শিবিরের প্রভাবশালী ব্যক্তি হোয়াইট হাউসের চিফ স্ট্রাটেজিস্ট স্টিভ ব্যানন’কে এনএসসি’র ‘প্রিন্সিপালস কমিটি’ থেকে সরানোর দাবি তোলেন ম্যাকমাস্টার। এক পর্যায়ে এনএসসি থেকে নিজের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ব্যানন’কে সরিয়ে দেন ট্রাম্প। এ ঘটনার পর ম্যাকমাস্টার দাবি করেন, স্টিভ ব্যানন-এর চলে যাওয়া কোনও বড় ইস্যু নয়।

ফক্স নিউজ সানডে অনুষ্ঠানে এনএসসি থেকে ব্যানন-এর অপসারণ নিয়ে কথা বলেন ম্যাকমাস্টার। তিনি বলেন, আমার কাছে এটাকে খুব তাৎপর্যপূর্ণ কিছু বলে মনে হয় না। আমার কাছে বরং মনে হয়, তার চলে যাওয়ার বিষয়টি প্রেসিডেন্ট পরিষ্কার করেছেন। যারা সংস্থার প্রতিটি বৈঠকে নিয়মিতভাবে অংশ নেন; আমেরিকান জনগণের স্বার্থে যারা তাকে দীর্ঘমেয়াদী পরামর্শ দেবেন তাদের ওপরই আস্থা রেখেছেন প্রেসিডেন্ট।

সম্ভাব্য এই সর্বশেষ রদবদলকে বেশ তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবেই দেখছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলো। কারণ এর আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে এনএসসি’র উপদেষ্টার পদ ছাড়তে বাধ্য হন ম্যাকমাস্টার-এর উত্তরসূরি মাইকেল ফ্লিন।

ম্যাকফারল্যান্ড’কে শেষ পর্যন্ত সিঙ্গাপুরে মার্কিন দূত হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলেও ট্রাম্পের কাছাকাছিই থাকছেন স্টিভ ব্যানন। হোয়াইট হাউসের চিফ স্ট্রাটেজিস্ট হিসেবে নানা বিষয়ে ট্রাম্পকে পরামর্শ দেবেন তিনি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী স্টিভ ব্যানন

ম্যাকমাস্টার বলেন, ট্রাম্পের আস্থাভাজন মানুষের তালিকায় রয়েছেন স্টিভ ব্যানন। এটা পরিবর্তিত হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম পলিটিকো বলছে, ম্যাকমাস্টার ছাড়া এনএসসি’তে থাকা অন্য তিন তারকা জেনারেলরা এখন একটা অস্থির সময় কাটাচ্ছেন। বুশ প্রশাসনের সময়ে এনএসসি'র উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেছিলেন ৯২ বছরের ব্রেন্ট স্কোক্রফট। এর আগে প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ড-এর সময়েও এনএসসি’তে কাজের অভিজ্ঞতা ছিল তার। রিপাবলিকান শিবিরে তাকে এনএসসি’র সবসময়ের উপদেষ্টা হিসেবেই বিবেচনা করা হয়। ট্রাম্প প্রশাসনে এনএসসি’র জন্য তার সমর্থন পেয়েছিলেন হার্বার্ট রেমন্ড ম্যাকমাস্টার। সেটা এখনও অব্যাহত রয়েছে।

ওয়াশিংটনে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত সের্গেই কিসলিয়াকের সঙ্গে গোপন টেলিফোন আলাপের ঘটনায় যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ ছাড়তে বাধ্য হন মাইকেল ফ্লিন। এরপর ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে তার স্থলাভিষিক্ত হন ম্যাকমাস্টার। মাইকেল ফ্লিনের ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ এনএসসি ছাড়লেন বহুল আলোচিত ট্রাম্পের চিফ স্ট্রাটেজিস্ট স্টিভ ব্যানন।

ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এরইমধ্যে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের পুনর্গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এতে হার্বার্ট রেমন্ড ম্যাকমাস্টার-এর হাতে দাফতরিক কর্তৃত্ব তুলে দেওয়া হয়েছে। ম্যাকমাস্টার অবশ্য তার নিয়োগের সময়েই এই ক্ষমতা চেয়েছিলেন। তবে তখন সেটা না হলেও শেষ পর্যন্ত তার চাওয়াই পূর্ণ হয়েছে। এছাড়া জয়েন্ট চিফস অব স্টাফ-এর চেয়ারম্যান জেনারেল জো ডানফোর্ড’ও নিয়মিত সদস্য হিসেবে এনএসসি’তে ফিরেছেন। তার সঙ্গে আছেন সাবেক সিনেটর এবং ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্স-এর পরিচালক ড্যান কোটস।

পুরো বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এমন একজনের সঙ্গে কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম পলিটিকো। তিনি জানান, এখানে যেসব পরিবর্তন ঘটছে তা ম্যাকমাস্টার-এর বৃহত্তর সংস্কার প্রক্রিয়ারই একটা অংশ। এই পরিবর্তনের মধ্যে এনএসসি’র পেশাদার কর্মীর সংখ্যা কমানোর মতো বিষয়ও রয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা’র সময়ে এমন কর্মীর সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪শ-এর মতো দাঁড়িয়েছিল। কথিত ‘স্কোক্রফট মডেল’কে পুনরুজ্জীবিত করতে একে একটি বিশাল বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে। এ মডেল অনুযায়ী, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টারা বিভিন্ন পলিসি এজেন্ডার ব্যাপারে বেশ সতর্ক থাকেন। জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক বিভিন্ন সংস্থা এবং বৈদেশিক নীতি বিষয়ক সংস্থাগুলো উচ্চ পর্যায়ের নানা বৈঠকে অংশ নেয়।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হার্বার্ট রেমন্ড ম্যাকমাস্টার

ব্রেন্ট স্কোক্রফট আরও একটা নিয়ম চালু করেছিলেন। আর সেটা হচ্ছে, যেসব জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের দৃশ্যপটে খুব কম দেখা যায়, তাদের প্রভাব মূল্যায়নের একটা মানদণ্ড তৈরি করা। এ মানদণ্ড হচ্ছে, এসব উপদেষ্টারা ব্যক্তিগতভাবে প্রেসিডেন্টের কাছে কতটা পৌঁছাতে পারেন তার ওপর।

সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াকার বুশ-এর সময়ে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলে কাজ করেছেন পিটার ফেভার। বর্তমানে তিনি ডিউক ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করছেন। পিটার ফেভার বলেন, ‘কাগজে-কলমে এটা একটা স্তরবিশিষ্ট কমিটি। একটি অত্যন্ত সুশৃঙ্খল প্রক্রিয়া। আপনি সম্ভাব্য সর্বনিম্ন পর্যায় থেকে সব ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন; যাতে যেগুলো আসলেই কঠিন সিদ্ধান্ত সেগুলোর ব্যাপারে উপর মহল থেকে আপত্তি আসতে পারে। কারও বিষয়ে তার অনুপস্থিতিতে কোনও বৈঠক নয়। সমান্তরাল পদে থাকা সবাই এখানে কথা বলা এবং ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে সবাই সমান সুযোগ পাবেন।’

মাইকেল ফ্লিন-এর সময় এই ‘স্কোক্রফট মডেল’ অনুসরণ করা হয়নি। অবশ্য জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে তিনি খুব বেশি সময়ও পাননি। তিন সপ্তাহের মতো কার্যকালে মাইকেল ফ্লিন একটা স্বতন্ত্র প্রবণতা তৈরির চেষ্টা করেছিলেন। তিনি বাছাইকৃত পছন্দের অধস্তনদের নিয়ে একটা নতুন কাঠামো তৈরি করেছিলেন। এর ফলে জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের নিয়মিত কর্মীদের অনেকে সংস্থাটির বিভিন্ন বৈঠকে অংশ নিতে ব্যর্থ হন। মাইকেল ফ্লিনের ওই সিদ্ধান্ত এনএসসি কর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছিল।

মাইকেল ফ্লিন ছিলেন একজন অবসরপ্রাপ্ত তিন তারকা জেনারেল। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালনকালেই অনৈতিক ও বেআইনি রুশ সংযোগ নিয়ে এফবিআই ও কংগ্রেস-এর তদন্তের মুখে পড়েন মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার সাবেক এই প্রধান।

এই রুশ সংযোগের জের ধরেই দায়িত্ব গ্রহণের এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে পদত্যাগে বাধ্য হন মাইকেল ফ্লিন। তার পদত্যাগপত্রের একটি কপি পেয়েছে সিএনএন। তাতে দেখা যায়, ফ্লিন লিখেছেন ‘রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে আমার ফোনালাপ নিয়ে যে অসম্পূর্ণ তথ্য এসেছে; সে বিষয়ে আমি ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং অন্যদের জানিয়েছি। দেশের এবং মার্কিনিদের পথচলাকে সম্মানিত করতে আমি পদত্যাগপত্র জমা দিচ্ছি। আমি জানি, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের শক্তিশালী নেতৃত্বে ও তাদের চমৎকার টিম যেভাবে সাজানো হয়েছে তারা ইতিহাসে জায়গা করে নেবেন। ট্রাম্প হবেন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে মহৎ প্রেসিডেন্ট।’ অবশ্য দায়িত্ব গ্রহণের এক মাসেরও কম সময়ের মধ্যে পদত্যাগের ঘটনা যুক্তরাষ্ট্রে বিরল। আধুনিক ইতিহাসে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের একজন সিনিয়র উপদেষ্টার এতো অল্প সময় দায়িত্ব পালনের ঘটনায় ইতিহাস হয়ে রইলেন ফ্লিন।

হার্বার্ট রেমন্ড ম্যাকমাস্টার

২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের ৫৮তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনেও বারবার উঠে এসেছে ট্রাম্প শিবিরের রুশ সংযোগের বিষয়টি। রুশ সংযোগ ছাড়াও বর্ণবাদ ও ইসলামবিরোধীতার অভিযোগ উঠে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে। এছাড়া হিলারিকে কারাগারে পাঠানোর কথা বলেও সমালোচনা কুড়ান এই ধনকুবের রাজনীতিক। ক্ষমতায় আসার পর নানা ঝড়ঝাপটা শেষে এখন ট্রাম্প প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হার্বার্ট রেমন্ড ম্যাকমাস্টার। ট্রাম্পের এজেন্ডার প্রতি দৃঢ় সমর্থনের কারণেই তাকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ এ প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে তিনি নিজ প্রতিষ্ঠানের কর্মপন্থা নির্ধারণ করবেন।

মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদে মাইকেল ফ্লিন-এর সমকক্ষ ছিলেন টম বসার্ট। ট্রাম্পের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিষয়ক উপদ্ষ্টোর দায়িত্বও পালন করছেন এ বর্ষীয়ান আইনজীবী। এনএসসি’তে তার ক্ষমতাও সংকুচিত করা হয়েছে।

এনএসসি’র একজন জ্যেষ্ঠ কর্মী লাউরা হোলগেট। তিনি বলেন, ম্যাকমাস্টার’কে আরও ক্ষমতাবান করে তোলা হচ্ছে।

জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের সাবেক কর্মী পিটার ফেভার বলেন, সেনাবাহিনীর মেজর হার্বার্ট রেমন্ড ম্যাকমাস্টার তার বইতে ভিয়েতনাম যুদ্ধে হোয়াইট হাউসের সিদ্ধান্তগ্রহণ প্রক্রিয়ার তীব্র সমালোচনা করেছেন। এর মাধ্যমে তিনি দৃশ্যত নিজেকে আরেকজন ব্রেন্ট স্কোক্রফট হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিলেন। তবে সূত্রগুলো বলছে, এনএসসি’তে ম্যাকমাস্টার ক্রমেই ক্ষমতাধর হয়ে উঠলেও তাকে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব দেওয়া হয়নি। এছাড়া এনএসসি ছাড়লেও এখনও দোর্দণ্ড প্রতাপে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের প্রধান কৌশলবিদ হিসেবে কর্মরত আছেন স্টিভ ব্যানন। ফলে তার ক্ষমতাও একেবারে ক্ষয়িষ্ণু -এমনটা মনে করার অবকাশ নেই।

ওয়াশিংটনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ এবং রাজনীতি বিশ্লেষক ডেভিড ডে রথকফ। তিনি বলেন, ট্রাম্পের নিজের কি তার নিজের তৈরি প্রক্রিয়ার প্রতি সম্মান রয়েছে? তিনি একজন কর্মতৎপর ব্যক্তি। স্বয়ং নিজের বিপথগামী বিলাসিতাকেও তিনি অনুমোদন দিতে পারেন না।

সূত্র:  পলিটিকো, ব্লুমবার্গ, ওয়েস্টার্ন জার্নালিজম।

/বিএ/