র্যানসমওয়্যার ব্যবহার করে সম্প্রতি বিশ্বজুড়ে চালানো সাইবার হামলার ঘটনা প্রথমে শনাক্ত হয় শুক্রবার (১২ মে)। যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসের (এনএইচএস) কম্পিউটারগুলো আক্রান্ত হওয়ার খবর মেলে দিনের শুরুতেই। দিনশেষে তা বিশ্বের অন্তত ৭৪টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে বলে জানান সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। ওইদিনই দেড় লক্ষাধিক কম্পিউটার আক্রান্ত হয়। মাইক্রোসফট দাবি করেছে, যে ভাইরাসটি দিয়ে এই সাইবার হামলা চালানো হয়েছে, সেটি তৈরি করা গেছে মাইক্রোসফট উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের একটি সফটওয়্যার ত্রুটির সুযোগকে কাজে লাগিয়ে। তাদের দাবি, ওই ত্রুটির তথ্য মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে থেকে হ্যাকারদের হাতে চলে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছিল। সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা সন্দেহ করছেন,উ. কোরীয় হ্যাকাররাই সুযোগটি কাজে লাগিয়েছিল।
যখন বিশ্বজুড়ে ওই সাইবার হামলার জন্য উত্তর কোরিয়াকে সন্দেহ করা হচ্ছে, তখন শুক্রবার (১৯ মে) ইতালীয় মিশনের মুখপাত্র এবং ১৭১৮ কমিটির চেয়ারম্যান জানান, উত্তর কোরিয়ার নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘনবিষয়ক বিশেষজ্ঞ প্যানেলের এক সদস্য সাইবার হামলার শিকার হয়েছেন। তবে এ ঘটনায় কাকে সন্দেহ করা হচ্ছে, সে ব্যাপারে এখনও কিছু জানা যায়নি। আর রবিবার রয়টার্সে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, উত্তর কোরিয়ার প্রধান গোয়েন্দা সংস্থার ‘ইউনিট ১৮০’ নামে একটি বিশেষ সেল রয়েছে। সেখান থেকেই দেশটি কয়েকটি সফল ও ভয়াবহ সাইবার হামলা চালিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।
এদিকে মঙ্গলবারের প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, জাতিসংঘ কর্মকর্তা এবং নিরাপত্তা পরিষদের উত্তর কোরিয়া নিষেধাজ্ঞা কমিটির (১৭১৮ কমিটি) কাছে জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ প্যানেলের চেয়ারম্যান একটি ইমেইল সতর্কতা পাঠান। ইমেইলে জানানো হয়, গত ৮ মে হ্যাকাররা এক বিশেষজ্ঞের কম্পিউটারে হামলা চালাতে সক্ষম হয়। পরমাণু ইস্যুতে উত্তর কোরিয়া তাদের ওপর জারিকৃত জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করেছে কিনা তার তদন্তেই নিয়োজিত আছে ওই বিশেষজ্ঞ প্যানেলটি।
৮ মে পাঠানো ওই ইমেইলে আরও বলা হয়, ‘ব্যাপক পার্সোনালাইজড একটি বার্তা সম্বলিত যে জিপ ফাইলটি পাঠানো হয়েছে তাতে দেখা গেছে হ্যাকাররা প্যানেলের চলমান তদন্ত কাঠামো ও কার্য প্রক্রিয়ার ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পেরেছে। ২০১৬ সালেও ১৭১৮ কমিটির সদস্যদের একই কায়দায় লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছিল। এ ধরনের উচ্চমাত্রার ঝুঁকির ব্যাপারে সতর্ক করতে আমি আপনাদের সবার কাছে লিখছি।’
জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম নিষেধাজ্ঞাটি আরোপ করেছিল ২০০৬ সালে। পরে তা উপেক্ষা করে উত্তর কোরিয়া পাঁচটি পারমাণবিক বোমা ও দুটি দীর্ঘ মাত্রার রকেট উৎক্ষেপণ করার পর সে নিষেধাজ্ঞা জোরালো হয়। এখন ষষ্ঠ পারমাণবিক পরীক্ষার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে পিয়ং ইয়ং।
/এফইউ/বিএ/