দক্ষিণ চীন সাগরে মার্কিন রণতরী, চীনের দাবিকে চ্যালেঞ্জ

দক্ষিণ চীন সাগরদক্ষিণ চীন সাগরে বিরোধপূর্ণ কৃত্রিম দ্বীপের খুব কাছাকাছি রয়েছে মার্কিন রণতরী। ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর চীনের দাবিকৃত সেই দ্বীপ ও সমুদ্রসীমায় প্রথমবারের মতো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়লো যুক্তরাষ্ট্র। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি। তবে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, দক্ষিণ চীন সাগরে চীনের তৈরি কৃত্রিম দ্বীপের ১২ নটিক্যাল মাইলের মধ্যে নোঙ্গর করেছে মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ।

দক্ষিণ চীন সাগরের প্রায় পুরোটাই দাবি করে চীন। এশিয়ার অন্যান্য দেশও এ অঞ্চলে কিছু প্রবাল প্রাচীর ও দ্বীপের মালিকানা দাবি করে। ফলে এই অঞ্চল খুবই বিরোধপূর্ণ।

যুক্তরাষ্ট্র জানিয়েছে, তারা আন্তর্জাতিক সমুদ্রসীমায় অভিযান চালাতে পারে। সমুদ্রসীমা বিতর্কে কোনও পক্ষপাক্ষিত্ব নেই দাবি করলেও তারা বিতর্কিত দ্বীপগুলোতে এর আগেও রণতরী পাঠিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একে ‘চলাচলের স্বাধীনতা’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। আর এ অঞ্চলে এই স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন করায় চীনের সমালোচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিশ্চিতভাবেই ‘চলাচলের স্বাধীনতা’র নামে যুক্তরাষ্ট্রের এমন আচরণ চীনকে ক্ষুব্ধ করবে। উত্তর কোরিয়াকে মোকাবেলায় ট্রাম্প প্রশাসন চীনের সহায়তা চাইলেও সাম্প্রতিক এই পদক্ষেপ ‍দুই দেশের সম্পর্ককে কিছুটা শীতল করতে পারে।

অনেকদিন ধরেই এই অঞ্চলে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি এবং সামরিক স্থাপনা নির্মাণ করে আসছে চীন। অন্যদিকে এ অঞ্চলে ‘সামরিকীকরণ’ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন দীর্ঘদিন ধরেই পরস্পরকে দোষারোপ করে আসছে। ফলে একে কেন্দ্র করে বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতার আশঙ্কা করছেন অনেকে।

চলতি মাসেই পূর্ব চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিমানের পথরোধ করে দুটি চীনা সুখই সু-৩০ যুদ্ধবিমান। যুক্তরাষ্ট্র চীনের এই আচরণকে ‘অপেশাদারিত্ব’ হিসেবে আখ্যায়িত করে। এ বিষয়ে চীনের পক্ষ থেকে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে চীন আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রকে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে বিমান টহল কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়ে আসছিল।

এক বিবৃতিতে পেন্টাগন মুখপাত্র জেফ ডেভিস জানান, তারা সারাবিশ্বেই এই অভিযান অব্যাহত রাখবেন।

জেফ ডেভিস-এর ভাষায়, ‘দক্ষিণ চীন সাগরসহ এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে এই অভিযান অব্যাহত রাখবো। আমরা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী কার্যক্রম অব্যাহত রাখবো।’

গত মাসে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের মার্কিন কমান্ডার অ্যাডমিরাল হ্যারি হ্যারিস বলেছিলেন, দক্ষিণ চীন সাগরে শিগগিরই চলাচলের স্বাধীনতা প্রয়োগ করবে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ওই সময়ে তিনি এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলেননি। যুক্তরাষ্ট্র এখনও বিশ্বাস করে, দুনিয়াজুড়ে তাদের এমন অভিযান চালানো উচিত। এমনকি সেটা আমেরিকার মিত্রদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতেও।

/এমএইচ/এমপি/