ম্যানচেস্টার হামলায় ব্রিটিশ ‘যুদ্ধবাজ’ পররাষ্ট্রনীতিকে দায়ী করলেন করবিন

লেবার নেতা জেরেমি করবিনব্রিটিশ লেবার পার্টির নেতা জেরেমি করবিন ম্যানচেস্টার হামলার জন্য তার নিজ দেশের ‘যুদ্ধবাজ’ পররাষ্ট্রনীতিকেই দায়ী করেছেন। হামলার জন্য তিন দিন বিরতির পর শুরু হওয়া নির্বাচনি প্রচারণায় শুক্রবার করবিন বলেন, ‘আমাদের সরকার অন্য দেশে যে যুদ্ধ লড়ছে, বা সমর্থন করছে এবং এখানে যেভাবে সন্ত্রাসবাদকে মোকাবিলা করছে, তার জন্যই এমন হামলা চালানো হয়েছে।’ ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য  ইনডিপেন্ডেন্স এ খবর জানিয়েছে।

করবিন বলেন, গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা তথ্যের ভিত্তিতে তিনি এ সিদ্ধান্ত টেনেছেন। তবে কোনোভাবেই তিনি দায়ী ব্যক্তিদের ছাড় দেবেন না। তিনি বলেন, ‘ওই হামলাকারীদের খুঁজে বের করা হবে এবং বিচারের সম্মুখীন করা হবে।’

ক্ষমতায় গেলে বিদেশে ব্রিটিশ যুদ্ধনীতির পরিবর্তন আনবেন বলেও জানান করবিন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে জানাবোঝা থাকাটা কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের ক্ষেত্রে জরুরি। এটি আমাদের জনগণের সুরক্ষার ক্ষেত্রে জরুরি। এটি সন্ত্রাসবাদকে মদদ দেওয়ার পরিবর্তনে তার বিরুদ্ধে লড়াইকে সামনে নিয়ে আসবে।’

তিনি আরও বলেন, “আমাদের সাহসের সঙ্গে বলতে হবে, ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ কাজ করছে না। যেসব দেশ সন্ত্রাসবাদ জন্ম দিচ্ছে ও লালন-পালন করছে, সেসব দেশের কাছ থেকে সন্ত্রাসবাদের হুমকি কমাতে আমাদের আরও কার্যকর কোনও প্রক্রিয়া বের করতে হবে।”

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মের ‘বেপরোয়া’ কর্মকাণ্ডের জন্যই তিনি পুলিশকে প্রয়োজনীয় আর্থিক সংস্থান যোগাতে ব্যর্থ হয়েছেন বলে করবিন অভিযোগ করেন। পুলিশের ব্যয় সংকোচন নীতির সমালোচনা করে করবিন বলেন, ‘আমরা সস্তায় সুরক্ষা নিশ্চিত করতে পারি না।’ 

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘লেবার পার্টি ক্ষমতায় আসলে রাস্তায় আরও বেশি পুলিশ থাকবে। আর হত্যাকারীদের খুঁজে বের করতে নিরাপত্তা বাহিনীর আরও আর্থিক সংস্থানের প্রয়োজন হলে আমরা সেটাই করব।’

তিনি আরও বলেন, ‘সব সন্ত্রাসী হামলা আটকে দেওয়াটা কোনও সরকারের পক্ষেই সম্ভব নয়। যদি কোনও ব্যক্তি এমন কিছু করতে দৃঢ় প্রতীজ্ঞ হয়, তাহলে তারা এমন কিছু করতেও পারে।’

উল্লেখ্য, করবিন আফইগানিস্তান, ইরাক বা লিবিয়া যুদ্ধের তীব্র সমালোচনা করে নিজের যুদ্ধবিরোধী অবস্থান সুদৃঢ়ভাবে আঁকড়ে ধরেছিলেন।

২০১০ সালে ইরাকে ইঙ্গ-মার্কিন আগ্রাসনের তদন্তের সময় ব্রিটিশ গোয়েন্দা সংস্থা এম৫-এর সাবেক প্রধান ব্যারোনেস ম্যানিংহাম-বুলার বলেছিলেন, ‘ওই আগ্রাসনের ফলে যুক্তরাজ্যে সন্ত্রাসী হামলার হুমকি বাড়িয়েছে।’

উল্লেখ্য, আগামী ৮ জুন অনুষ্ঠিত হবে যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচন। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে প্রচারণা চললেও ২২ মে ম্যানচেস্টার হামলাকে কেন্দ্র করে নির্বাচনি প্রচারণা স্থগিত হয়ে যায়। তবে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) থেকে স্থানীয় পর্যায়ে প্রচারণা শুরুর কথা জানিয়েছে কনজারভেটিভ পার্টি, লেবার পার্টি, লিবারেল ডেমোক্র্যাট পার্টি, গ্রিন পার্টি, স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টিসহ প্রথম সারির সবকটি রাজনৈতিক দল। শুক্রবার থেকে দলের শীর্ষ নেতারা প্রচারণায় যোগ দেন।

/এসএ/