পিয়ংইয়ং-এর সঙ্গে আলোচনায় সময়ের সীমাবদ্ধতার বিষয়টি অনুধাবন করছে চীন: যুক্তরাষ্ট্র

উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র ইস্যুতে দেশটির সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে চীন। তবে বেইজিং এখন এটা অনুধাবন করতে পারছে যে, এই আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও সময়ের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এছাড়া উত্তর কোরিয়ার ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পথও খোলা রয়েছে। বেইজিং-এ এক সংবাদ সম্মেলনে এমনটাই মন্তব্য করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র কর্মকর্তা সুসান থর্নটন। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

সুসান থর্নটন বর্তমানে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্ব এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চল সংক্রান্ত উইং-এর ভারপ্রাপ্ত সহকারী সেক্রেটারির দায়িত্ব পালন করছেন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, চীন এটা অনুধাবন করতে পারছে যে, উত্তর কোরিয়া ইস্যুটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বেশ জরুরি। এটা নিয়ে পিয়ংইয়ং-এর সঙ্গে আলোচনায় সময়ের সীমাবদ্ধতা রয়েছে।

এদিকে মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল ভিনসেন্ট স্টুয়ার্ট বলেছেন, পারমাণবিক অস্ত্রবাহী ক্ষেপণাস্ত্র অর্জন থেকে উত্তর কোরিয়াকে নিবৃত্ত রাখতে হবে। সেটা যদি করা না হয়, তবে দেশটি অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্রে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র তৈরি করবে। এটা অনিবার্য। মঙ্গলবার মার্কিন সিনেটের শুনানিতে উপস্থিত হয়ে তিনি এমন বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

শুনানিতে মার্কিন সিনেটররা জেনারেল ভিনসেন্ট স্টুয়ার্ট-এর কাছে জানতে চান, যুক্তরাষ্ট্রে হামলা করতে সক্ষম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) তৈরির পথে উত্তর কোরিয়া কতদূর অগ্রসর হয়েছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে  ভিনসেন্ট স্টুয়ার্ট বলেন, উত্তর কোরিয়ার এ সংক্রান্ত সক্ষমতার বিষয়টি প্রকাশ করা হবে। তবে দেশটির পক্ষ থেকে এমন উদ্যোগ নেওয়ার ঝুঁকি বাড়ছে।

অন্যদিকে, নতুন করে চালানো ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সফলতা দাবি করেছে উত্তর কোরিয়া। গত রবিবার স্থানীয় সময় বিকেলে মাঝারি পাল্লার ওই প্রজেক্টাইল ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়।

ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার সফলতা দাবি করে রাষ্ট্রীয় কেসিএনএ নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, সামরিক কাজে ব্যবহারের জন্য তাদের পারমাণবিক অস্ত্র ইতোমধ্যেই প্রস্তুত হয়ে গেছে। তবে হোয়াইট হাউসের তরফ থেকে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার সবশেষ তিন ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার মধ্যে রবিবারের ক্ষেপণাস্ত্রটির সক্ষমতা সবথেকে কম।

দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, পুকচাং-এর কাছের একটি এলাকা থেকে রবিবার ক্ষেপণাস্ত্রটি ছোড়া হয়। ক্ষেপণাস্ত্রটি প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরবর্তী এলাকায় গিয়ে পড়ে। এর মাত্র এক সপ্তাহ আগেই ভারী পারমাণবিক ওয়্যারহেড বহনের সক্ষমতা যাচাই করতে নতুন একটি ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছিল পিয়ংইয়ং। দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় কুসং এলাকা থেকে ওই ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানো হয়। ক্ষেপণাস্ত্রটি উৎক্ষেপণের পর প্রায় সাতশ কিলোমিটার পর্যন্ত উড়ে জাপান সাগরে গিয়ে পড়েছিল।

জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা ও নিন্দা অগ্রাহ্য করে উত্তর কোরিয়া পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে ২০০৬ সালে জাতিসংঘ প্রথম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরপর পঞ্চম পারমাণবিক পরীক্ষার এ নিষেধাজ্ঞা আরও কঠোর করা হয়। পিয়ংইয়ং-এর পক্ষ থেকে ৬ষ্ঠ পারমাণবিক বোমা পরীক্ষার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সূত্র: রয়টার্স, আল জাজিরা।

/এমপি/