ট্রাম্পের অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরুর দাবিতে আরও দুই শহরে প্রস্তাব পাস

ডোনাল্ড ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরুর ব্যাপারে কংগ্রেসের প্রস্তুতি না থাকলেও ক্রমাগত স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে চাপ জোরালো হচ্ছে। ট্রাম্পের অভিশংসনের প্রস্তাবে শামিল হচ্ছে একের পর এক শহর। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২৫ মে) সে তালিকায় যুক্ত হয়েছে ব্রুকলিন ও মাস শহর। এদিন ট্রাম্পের অভিশংসন আহ্বান করে প্রস্তাব পাস করেছে শহর দুটির স্থানীয় সরকার।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম পলিটিকো জানিয়েছে, এর মধ্য দিয়ে ১০টি স্থানীয় সরকারের পক্ষ থেকে ট্রাম্পের অভিশংসনের দাবি জানিয়ে প্রস্তাব পাস করা হলো। এর উদ্দেশ্য হলো, প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতাচ্যুতির দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারে এমন একটি আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরুর জন্য অঙ্গরাজ্যের কংগ্রেস সদস্যদের ওপর চাপ তৈরি করা। ব্রুকলিন ও মাসের আগে ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের শহর কেমব্রিজ, আমহার্স্ট, পেলহাম এবং লেভারেট। নিউটন শহরও এরইমধ্যে একটি প্রস্তাব পাসের কথা বিবেচনা করছে।

ট্রাম্পের অভিশংসনের জন্য ক্যালিফোর্নিয়া আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গা। মে মাসের শুরুর দিকে লস অ্যাঞ্জেলস সিটি কাউন্সিল অভিশংসন প্রক্রিয়া শুরুর জন্য স্বতঃস্ফূর্তভাবে একটি প্রস্তাব পাস করে। রিচমন্ড, আলামেডা এবং বারকেলিও একই কাজ করেছে।

শিকাগোতে সিটি কাউন্সিলের পক্ষ থেকে একটি অধ্যাদেশের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। দ্রুত এ খসড়াটি ৩১ জন স্পন্সর পেয়েছে। প্রস্তাব উত্থাপনকারী অল্ডারম্যান আমেয়া পাওয়ার বলেন, এফবিআই পরিচালক জেমস কোমিকে ট্রাম্প বরখাস্ত করার পর ট্রাম্পের অভিশংসনের প্রস্তাব জোরালো হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, ‘ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন বর্ণবাদী, সংকীর্ণতাবাধী ও নারী-বিদ্বেষী। নিজের বিশ্বাসকেই তিনি নীতিমালায় পরিণত করতে চাইছেন। কিন্তু সে কারণে যে আমি তার অভিশংসনের জন্য কংগ্রেসের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি এমনটা নয়। আমি অভিশংসনের আহ্বান জানাচ্ছি, কারণ প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প অনবরত তার প্রশাসনের রুশ সংযোগ সংক্রান্ত তদন্ত বন্ধের চেষ্টা করছেন।’

মার্কিন সংবিধানের ১৯৬৭ সালে প্রণীত এক সংশোধনীতে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট যদি তার ক্ষমতা ও দায়িত্ব পালনে অক্ষম হন, তাহলে তাকে অপসারণ করা যাবে। কিছু ডেমোক্রেট আইনপ্রণেতা দাবি করেছেন, ট্রাম্প সম্ভবত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য মানসিকভাবে সুস্থ নন। কিন্তু এই প্রেক্ষিতে কাউকে অপসারণের নজির নেই। এর বাইরে রয়েছে অভিশংসনের মাধ্যমে অপসারণ।

অভিশংসন প্রক্রিয়ার অধীনে, কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের জুডিশিয়ারি কমিটি প্রথমে শুনানি শুরু করবে। এরপর প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করার প্রশ্নে ভোট দেবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের ভোটে প্রেসিডেন্টকে অভিসংশিত করা যাবে। তবে তখনই প্রেসিডেন্ট অপসারিত হবেন না। পরবর্তী পদক্ষেপ হিসেবে অভিশংসন প্রস্তাব সিনেটে যাবে। সেখানে প্রেসিডেন্টকে চূড়ান্তভাবে অপসারণের জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সিনেটরের ভোট প্রয়োজন হবে। ট্রাম্পের ক্ষেত্রে এইসব হিসেব মিলিয়ে তার অপসারণকে আপাতত অসম্ভব বলেই মনে করছেন রাজনীতি বিশ্লেষকরা। 

/এফইউ/