মূলত বাংলাদেশে নিজস্ব তিনটি বৃহৎ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের মাধ্যমে এদেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে দিল্লি। বিশেষ করে ভৌগোলিক কারণে যেসব ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের ব্যবসায় বিঘ্ন ঘটছে তাদের জন্যই এ ধরনের অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়।
বাংলাদেশের মংলা, ভেড়ামারা ও মীরসরাইয়ে প্রস্তাবিত এসব ভারতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) স্থাপনের পরিকল্পনা রয়েছে। তবে অপর্যাপ্ত অবকাঠামো এবং নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের অভাবের মতো সীমাবদ্ধতা কারণে এসব স্থানে এসইজেড-এর আগ্রহী নন ভারতীয় ব্যবসায়ীরা। সোমবার দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক বৈঠকে এ ব্যাপারে নিজেদের অবস্থানের কথা জানিয়েছেন তারা। ব্যবসায়ীদের দাবি, বাংলাদেশের যে তিন জায়গায় এখন ভারতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের পরিকল্পনার কথা বলা হচ্ছে; সেটা বাণিজ্যিকভাবে লাভজনক বা টেকসই হবে না। অপেক্ষাকৃত ভালো কানেক্টিভিটি এবং ব্যবসায়িক সম্ভাবনার জন্য তাই এই তিন জায়গার বিকল্প প্রস্তাব করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাদের দাবি, এসব এসইজেড-এর জন্য বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা এবং চট্টগ্রাম বন্দর ভালো জায়গা হতে পারে। ভারতীয় কর্মকর্তারা দ্য হিন্দুকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে বিদ্যমান চীনা এসইজেড-এর অনুরূপ বরাদ্দ চান দেশটির ব্যবসায়ীরা।
বিনিয়োগ আকর্ষণে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভ্যাট, আয়কর, শুল্ক, স্ট্যাম্প ডিউটির মতো ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। তবে ভারতীয় ব্যবসায়ীরা নিশ্চয়তা চান যে, বাংলাদেশে ক্ষমতার পালাবদল হলেও যেন তারা এখানে ব্যবসা চালিয়ে যেতে পারেন।
সোমবার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সরকারের ওই বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশের ভারতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকা চূড়ান্ত করা। বৈঠকে ভারতের পররাষ্ট্র ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা ছাড়াও অংশ নেন বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি, ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান এক্সপোর্ট অর্গানাইজেন্স এবং এক্সপোর্ট প্রমোশন কাউন্সিলের মতো সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিরাও বৈঠকে অংশ নেন।
২০১৫ সালের জুনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকালে স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশে ভারতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) প্রতিষ্ঠার বিষয়টি উল্লেখ ছিল। পরিকল্পনা অনুযায়ী মীরসরাইয়ে এক হাজার পাঁচ একর, ভেড়ামারায় প্রায় ৪৮০ একর এবং মংলায় ২০০ একর জায়গাজুড়ে ভারতীয় এসব বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের কথা রয়েছে।
/এমপি/