রোজা ভেঙে দুর্গতদের সহায়তায় নেমেছেন ব্রিটিশ মুসলিমরা

লন্ডনের সেই ভবনের আগুন-৩আকলাহাম রোডের আল মিনার মসজিদ থেকে তহবিল সংগ্রহ করে তা গ্রেনফ্রেল টাওয়ারের দুর্গতদের মধ্যে বিতরণ করছেন ব্রিটিশ মুসলমানরা। মুসলিম এইড নামের সহায়তা সংস্থার দুই কর্মী জানিয়েছেন, মানুষের জীবন বাঁচাতে রোজা ভেঙে কাজে নামলে ইমামের কাছে অব্যহতি পাবেন।
বুধবার রাতে পশ্চিম লন্ডনের গ্রেনফেল টাওয়ারে আগুন লাগে। রাত ১টা ১৫ এর দিকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ৪০টি ইউনিট ও ২০০ দমকলকর্মী। এখন পর্যন্ত ৬ জনের প্রাণহানির খবর নিশ্চিত করেছে কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালসূত্রের সবশেষ আপডেটে আহতদের সংখ্যা ৭৪ বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে ২০ জন জীবনশঙ্কায় আছেন বলে জানিয়েছে তারা। এদিকে ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে এ পর্যন্ত বহু মানুষকে উদ্ধারের কথা জানানো হয়েছে। তবে লন্ডনের মেয়র সাদিক খান বলছেন, এখনও নিখোঁজ অনেকে। শিগগির ফায়ার সার্ভিসের পক্ষ থেকে একটি আপডেট দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে  ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমগুলো। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।

মুসলিম এইডের ওই দুই কর্মী জানান, নিজেদের তহবিল থেকে সহায়তার পাশাপাশি স্বল্পমেয়াদী আবাসন নির্মাণ আর আর্থিক সহায়তা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। সহায়তাকর্মী আহমেদ তেলাদিয়া বলেন, ‘আমাদের অনেক অনেক সদস্য রয়েছে। এখন মূল কাজ হলো তহবিল সংগ্রহ করে তা বিপন্ন মানুষদের কাছে পৌঁছানো। আমরা সেই কাজটিই শুরু করেছি।’

তার সহযোগী নওশিনা জাভেদ জানান, গ্রেনফেল টাওয়ারেও অনেক মুসলিম ছিলেন। তিনি বলেন, ‘রমযানে রোজা রাখছেন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা। তবে আমরা গ্রেনফেন টাওয়ারের মানুষদের জন্য কাজ করছেন যারা, রোজা না রাখলেও তাদের গুনাহ হবে না। ইমামের কাছে তারা নিস্কৃতি পাবেন’।
১৯৭৪ সালে নির্মিত ভবনটিতে ১২০টি বাসা ছিলো। ২০০ জনেরও  বেশি মানুষ এখানে বসবাস করতো। তবে আগুন লাগার পর ঠিক কতজন বের হতে পেরেছেন বা কতজন আটকা পড়েছেন সে বিষয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানা যায়নি। বিভিন্ন ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম স্থানীয় কাউন্সিলের বরাত দিয়ে ওই ভবনে ৪০০ থেকে ৬০০ মানুষের বসবাসের কথা জানালেও কর্তৃপক্ষ ভবনটির জটিল কাঠামোর কারণে সেখানে থাকা মানুষদের সংখ্যা সম্পর্কে এখনই মন্তব্য করতে রাজি হয়নি। ভবনের ভেতরে বহু মানুষের জিম্মি হয়ে থাকার খবর জানিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা।  তারা জানিয়েছে, এখন কেবলমাত্র জানালাকে আশ্রয় করেই বাঁচার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন আগুনে জিম্মি থাকা মানুষেরা।
এমএইচ/বিএ/