এ বিষয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই। মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, একদিকে ট্রাম্পের কথিত ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে পররাষ্ট্রনীতির ‘ব্যর্থতায়’ ট্রাম্পের ‘চোখে চোখ রেখে’ কথা বলতে পারছেন না টিলারসন। ফলে এক অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। টিলারসন অবশ্য ব্যক্তিগতভাবে মনে করেন, ট্রাম্প প্রশাসনে এক বছর টিকে থাকাও অনেক বেশি কিছু।
দুইজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এইচআর ম্যাকমাস্টার হোয়াইট হাউসের নীতিতে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলায় হতাশ হয়েছেন। এই পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত একজন রয়টার্সকে জানান, টিলারসন তার নিজের দফতরেই পূর্ণ স্বাধীনতা না পাওয়ায় হতাশ। তিনি সেখানে নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করতে পারেন না।
টিলারসনের পদত্যাগ নিয়ে কিছু না জানলেও পরিস্থিতি প্রতিদিনই আরও খারাপ হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন ট্রাম্পের এই উপদেষ্টা।
টিলারসন নিজে সরাসরি মুখ না খুললেও পদত্যাগের গুঞ্জন নিয়ে কথা বলেছেন তার মুখপাত্র আরসি হ্যামেন্ড। তিনি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগের গুঞ্জন উড়িয়ে দিয়েছেন। আরসি হ্যামেন্ড-এর ভাষায়, ‘তার চাকরিতে থাকার অনেক কারণ রয়েছে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বে মার্কিন নেতৃত্ব প্রয়োজন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এই বিষয়টিতেই জোর দিচ্ছেন।’
গত সপ্তাহে টিলারসন একটি কূটনৈতিক জয় পেয়েছেন। ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তি অনুযায়ী ইরান তাদের পরমাণু পরীক্ষা থেকে সরে আসতে রাজি হয়েছে। তবে এজন্য নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবি জানিয়েছে তেহরান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, ‘টিলারসন ট্রাম্পের সমালোচনায় হতাশ। একইসঙ্গে প্রেসিডেন্টের প্রধান পরামর্শক স্টিভ ব্যানন ও হোয়াইট হাউস কর্মকর্তা সেবাস্তয়িান গোর্কাও হতাশ।’
তিনি বলেন, টিলারসন মনে করেন হোয়াইট হাউসের কর্মকর্তাদের মন্ত্রীদের সঙ্গে বিদ্বেষমূলক আচরণ করা উচিত নয়।
ট্রাম্প ও টিলারসনের মধ্যে বিবাদের বিষয়টিকে অবশ্য পুরোপুরি গুজব বলে মনে করেন হ্যামন্ড। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি না এখানে কোনও উত্তেজনা বিরাজ করছে।’
মধ্যপ্রাচ্যে চলমান কূটনৈতিক সংকটে টিলারসন উভয়পক্ষকেই সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন। এর দেড় ঘণ্টার মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কাতারকে সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ঘোষণা দেন।
হ্যামন্ড বলেন, ‘হয়তো কিছু ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছিল। তবে আমরা সেগুলো কাটিয়ে উঠেছি।’
চলতি মাসেই নিজের চাকরির প্রতিবন্ধকতা নিয়ে কথা বলেছিলেন টিলারসন। সাংবাদিকদের তিনি বলেছিলেন, এক্সন মোবিল করপোরেশন থেকে এখানে পরিস্থিতি ভিন্ন। সেখানে তিনিই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা রাখতেন। কিন্তু মন্ত্রী হিসেবে অনেক ক্ষেত্রেই হাত বাঁধা থাকে। তবে আমি জানতাম আমাকে অনেক নিয়মকানুনের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। এভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের সরকার ব্যবস্থা পরিচালিত হয়। সূত্র: রয়টার্স, মিডল ইস্ট আই।
/এমপি/