ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদন

ট্রাম্পের রুশ সংশ্লিষ্টতা প্রমাণে গ্র্যান্ড জুরি গঠন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাশিয়া সংশ্লিষ্টতার তদন্ত এগিয়ে নিতে গ্র্যান্ড জুরি গঠন করেছেন মার্কিন বিচার বিভাগের পরামর্শক সাবেক এফবিআই পরিচালক রবার্ট মুলার। কয়েক সপ্তাহ আগে থেকে ওই গ্র্যান্ড জুরি কাজও শুরু করেছে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব কথা জানা গেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্র্যান্ড জু্রির সেই কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে মার্কিন নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপ বিষয়ক তদন্ত গতি পেয়েছে। কয়েকমাস ব্যাপী ওই তদন্ত চলতে পারে বলে ধারণা করছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।


noname

চলতি বছরের জুনের মাঝামাঝি  মার্কিন সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, ট্রাম্প-টিমের সঙ্গে রাশিয়ার নির্বাচনকালিন সংযোগ-এর চলমান তদন্ত কাজে তিনি বাধা সৃষ্টি করছেন কিনা, নতুন তদন্তে তা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিচার বিভাগ। সাবেক এফবিআই পরিচালক রবার্ট মুলারকে ওই তদন্ত কাজের নেতৃত্ব দিতে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এবার তিনি তদন্ত এগিয়ে নিতে গ্রান্ড জুরি গঠন করলেন।

এ ব্যাপারে অবগত দুই কর্মকর্তা ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ২০১৬ সালের জুনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছেলে ট্রাম্প জুনিয়রের সঙ্গে এক রুশ আইনজীবীর বৈঠকের খবর সামনে আসার পর গ্র্যান্ড জুরি গঠন করা হয়।

গ্র্যান্ড জুরি হলো সামরিক-বেসামরিক প্রশাসনের বাইরে নাগরিকদের সমন্বয়ে গঠিত একটি দল যারা কোনও একটি বিষয় তদন্ত করতে গিয়ে গোপনে কাজ করে থাকে। আলামতের পরীক্ষা-নিরীক্ষা, প্রসিকিউটরের তদন্তাধীন সম্ভাব্য অপরাধের তথ্য যাচাইবাছাই, নির্দিষ্ট ওই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করা হবে কি হবে না তা নিয়ে প্রস্তাব দেয়। এটি তদন্তের আওতায় সংশ্লিষ্ট নথি চাইতে পারে, শপথের আওতায় সাক্ষ্য গ্রহণ করতে সন্দেহভাজনদের তলব করতে পারে। গ্রান্ড জুরি অপরাধের প্রমাণ পেলে দোষীদের বিচারের আওতায় আনার সুপারিশ করে। আইনবিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃত করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের রুশ সংশ্লিষ্টতার তদন্তকাজে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ নথি দরকার ট্রাম্পের। প্রত্যক্ষদর্শীদের ডেকে সাক্ষ্য নেওয়ারও দরকার তদন্তকাজ এগিয়ে নিতে। এ কারণেই তিনি একটি গ্রান্ড জুরি গঠন করেছেন।

নভেম্বরের নির্বাচনে রুশ সংযোগের বিষয়টি অনেকদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রে। তবে ট্রাম্প বরাবরই এমন অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। সাবেক এফবিআই পরিচালক জেমস কোমিকে বরখাস্তের পর এই তদন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্টের দিকে মোড় নেয়। রুশ সংযোগ নিয়ে ট্রাম্পের দলের লোকজনের বিরুদ্ধে এতোদিন ধরে যে সব তদন্ত চলছে, সেগুলোর কোনওটিতেই ট্রাম্প নিজে তদন্তাধীন ছিলেন না। মুলারের নেতৃত্বাধীন তদন্তে  প্রথমবারের মতো তিনি নিজে আওতাভূক্ত হন। জুনে রুশ সংযোগ তদন্তের কাজে সাবেক এফবিআই পরিচালক রবার্ট মুলারকে নিয়োগ দেওয়ার পর তাকে সহায়তা দিতে রাজি হন সিনিয়র গোয়েন্দা কর্মকর্তারাও। এই সপ্তাহেই জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার পরিচালক ড্যানিয়েল কোটস, জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার পরিচালক অ্যাডমিরাল মাইক রজার্স ও তার সহকারী রিচার্ড লেজেটসহ পাঁচজন কর্মকর্তাকে জেরা করা হবে বলে জানায় সংবাদমাধ্যমটি। ট্রাম্প তাদের তদন্তে বাধা সৃষ্টি করেছেন কিনা, তা নিয়ে মুলারের প্রশ্নের উত্তর দেবেন তারা।

/এফইউ/বিএ/