ইউরোপে উষ্ণতাজনিত মৃত্যু বাড়বে ৫০ ভাগ, বছরে দেড় লাখ প্রাণহানির শঙ্কা

জলবায়ুর পরিবর্তনজনিত তাপপ্রবাহে  ইউরোপে এই শতাব্দীর শেষ ত্রিশ বছরে মৃত্যুর বাৎসরিক হার ৫০ ভাগ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইউরোপীয় কমিশনের এক যৌথ গবেষণার ফলাফলে  প্রতি বছর দেড় লাখ মানুষের মৃত্যুর এই আশঙ্কা প্রকাশ পেয়েছে।  ‘দ্য ল্যানসেট প্লানেটারি হেলথ’ সাময়িকীতে ওই গবেষণা থেকে পাওয়া তথ্য নিয়ে একটি আর্টিকেল প্রকাশিত হয়েছে। সেই গবেষণা-প্রবন্ধে বলা হয়েছে, ওই সময়ে ইউরোপে প্রতি তিনজনের মধ্যে দুজন বিপর্যয়ের শিকার হবে। বিশ শতকে এই হার ছিল ২০ জনে একজন। উদ্বিগ্ন গবেষকরা উপকূলীয় এলাকার বন্যা ভয়াবহভাবে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কার কথাও জানিয়েছেন।
noname

ইতালিতে অবস্থিত ইউরোপিয়ান কমিশনের জয়েন্ট রিসার্চ সেন্টারের উদ্যোগে গবেষকেরা তাপপ্রবাহ, শৈত্যপ্রবাহ, খরা, দাবানল, উপকূলীয় এলাকায় বন্যা ও ঘূর্ণিঝড় বিশ্লেষণ করে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। ইউরোপের ২৮টি দেশকে নিয়ে এই গবেষণা করা হয়েছে। ১৯৮১ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগ-সংশ্লিষ্ট তথ্য বিশ্লেষণ করেছেন তারা। গবেষকদের আশঙ্কা, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর ব্যবস্থা ও চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া প্রভাব ঠেকানোর ব্যবস্থা না করা হলে পরিস্থিতি ভয়াবহ হবে। তাদের গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, ২০৭১ থেকে ২১০০ সালের মধ্যে বাৎসরিক মৃত্যুসংখ্যা ৫০ ভাগ বেড়ে ১ লাখ ৫২ হাজারে ঠেকবে। এসব ক্ষতিকর প্রভাবের ৯৯ শতাংশই ঘটতে পারে তাপপ্রবাহের কারণে। সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হতে পারে দক্ষিণ ইউরোপ।

বিষয়টি নিয়ে গবেষকেরা উদ্বেগ প্রকাশ করছেন। গবেষক জিওভান্নি ফরজিয়েরি বলেন, ‘একুশ শতকে মানবস্বাস্থ্যের জন্য অন্যতম বড় হুমকি জলবায়ু পরিবর্তন। যদি বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির বিষয়টিকে জরুরি বিবেচনা করে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া না যায়, তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ বাড়তে থাকবে। এই শতকের শেষ নাগাদ বার্ষিক ভিত্তিতে ৩৫ কোটি ইউরোপীয়ের ওপর ক্ষতিকর আবহাওয়ার প্রভাব পড়বে।’
জলবায়ুর পরিবর্তন বাড়িয়েছে বিশ্বের তাপমাত্রা

এই গবেষণার খবর এমন সময় সংবাদমাধ্যমে এলো যখন জাতিসংঘে চিঠি পাঠিয়ে  প্যারিসের জলবায়ু অঙ্গীকার ত্যাগের প্রক্রিয়া শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। চলতি বছরের জুন মাসে হোয়াইট হাউজে দেয়া এক ঘোষণায় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্যারিস চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাম প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিলেন। ২ মাসের মধ্যে তার প্রশাসন এবার চিঠি দিয়ে জাতিসংঘকে চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে এ সংক্রান্ত পদক্ষেপ নিতে শুরু করলো। এতে হুমকির মুখে পড়ে সারা বিশ্ব।

/বিএ/